মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামী এহতেশামুল রাব্বি তানিমের সৈয়দপুরের বাড়িতে শোকাবহ পরিবেশ


তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা মামলার রায়ে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ২০ আসামীর মধ্যে একজন হচ্ছে এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম।  তার (তানিম)  বাড়ি নীলফামারী সৈয়দপুর শহরের মুন্সিপাড়া নিয়ামতপুর কোফফার রোডে। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে। তাঁর অনুপস্থিতিতে গত বুধবার (৮ ডিসেম্বর) ওই মামলার রায়  দেয়া হয়। তাঁর বাবা আবু মো. কায়সার ওরফে পিন্টু পেশায় একজন ওষুধ ব্যবসায়ী। শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কে (রংপুর রোড) জিনাত ফার্মেসী নামে তাদের একটি ওষুধের দোকান রয়েছে।

 আবু মো. কায়সার ওরফে পিন্টু ও সারাবান তহুরা দম্পতির দুই ছেলেমেয়ের মধ্যে এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম বড়। সে সৈয়দপুর সরকারি কারিগরী মহাবিদ্যালয় (বর্তমান নাম সৈয়দপুর বিজ্ঞান কলেজ) থেকে ২০১৫ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি এবং ২০১৭ সালে একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে এইচএসসি উর্ত্তীণ হয়। পরবর্তীতে সে বুয়েটে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়। নিহত শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদসহ  বুয়েটের শেরে বাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতো সে (তানিম)। বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার ৪/৫ দিন আগে সে নীলফামারীর সৈয়দপুর থেকে ঢাকা যায়। আর আবরার ফাহাদ হত্যা ঘটনার পর থেকে তাঁর কোন হদিস নেই। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও তাঁর কোন রকম যোগাযোগ নেই।

গতকাল বুধবার (৮ ডিসেম্বর) বিকেলে তাদের সৈয়দপুর শহরের মুন্সিপাড়া নিয়ামতপুর কোফফার রোডের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় সুনশান নীরবতা। বাড়ি প্রধান ফটকে অনেক সময় ধরে আওয়াজ দেওয়ার পর প্রথমে বেরিয়ে আসেন তানিমের চাচা। পরে প্রধান ফটকে এসে দাঁড়ান তাঁর বাবা আবু মো. কায়সার ওরফে পিন্টু। তিনি ঠিকভাবে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারছিলেন না। গতকাল তানিমের বাবা  আবু মো. কায়সার ওরফে পিন্টুর সঙ্গে বাড়ির প্রধান ফটকে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কথা হয়  এ প্রতিনিধির। এ সময় তাঁর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, দুপুরে বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা হওয়ার পর থেকে তাঁর পরিবারের সকল সদস্যরা ভেঙ্গে পড়েছেন। তিনি বলেন, কত দিন হলো ছেলেটার মুখ দেখি না। ছেলে আমার কোথায় কি অবস্থায় দিনাতিপাত করছেন তারও কোন খোঁজ খবর জানি না। তিনি বলেন, ছেলে চিন্তায় তার মা সারাবান তহুরা ঘটনার পর থেকে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে শয্যাশায়ী অবস্থা তাঁর। গতকাল বুধবার ছেলে তানিমের মৃত্যুদন্ডের রায় হয়েছে টেলিভিশনে এ  খবর শুনে তিনি আরও বেশি করে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাকে কোন ভাবেই সান্ত¦না দিয়ে রাখা যাচ্ছে না। এ সব কথা বলতে বলতে এ প্রতিনিধির সমানে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তানিমের বাবা আবু মো. কায়সার ওরফে পিন্টু। তিনি বলেন একমাত্র ছেলে না থাকায় আমরা তো মরে গেছি। আপনারা আজ আমাদের আবার খবর নিতে এসেছেন। মরা মানুষের আর কি খবর নিবেন ? ছেলের মৃত্যুদন্ডের রায়ের বিষয়ে উচ্চ আদালতে আপিল কববেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এখন  এ নিয়ে কোন কিছুই বলতে পারছি না।  তানিমের সৈয়দপুরের বাড়ির প্রতিবেশি যাটোর্ধ্ব মোছা. মালেক বেগম বলেন, তানিম  একজন অত্যন্ত শান্তশিষ্ট স্বভাবে ছেলে। শিশুকাল থেকে আমি তাকে স্বচক্ষে দেখে আসছি। সে লেখাপড়ার বাইরে কোন কিছুতেই  কখনও ছিল না। তাঁর মতো নম্র, ভদ্র, বিনয়ী ছেলে একটি হত্যা ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে না। আমরা প্রতিবেশিরা এটি বিশ্বাস করতে পারছি না। ঘটনার পর প্রশাসনের অনেক লোকজন এসেছেন তাদের বাড়িতে। আমরা প্রতিবেশিরা তাদেরকে একই কথা বলেছি বার বার। তানিম এ ঘটনার সঙ্গে কোনভাবে জড়িত নয়।


পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 2256380898508503207

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item