সৈয়দপুরে ঢেলাপীরহাট থেকে তারাগঞ্জহাট পর্যন্ত উপজেলা পাকা সড়কটির বেহাল দশা
তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঢেলাপীর হাট থেকে তারাগঞ্জহাট পর্যন্ত উপজেলা পাকা সড়কটি বর্তমানে বেহাল দশা। দীর্ঘদিন যাবৎ মেরামত না করায় অতি জনগুরুত্বপূর্ণ এ পাকা সড়কটি একেবারে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তারপরও এলাকায় কোন বিকল্প সড়ক না থাকায় নিরূপায় হয়ে মানুষজন প্রতিদিন যানবাহনসহ পায়ে হেঁটে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে ওই ভাঙ্গাচোরা সড়কটি দিয়ে ধীর গতিতে চলাচল করতে গিয়ে একদিকে যেমন সময় নষ্ট হচ্ছে, তেমনি নিত্যদিন ছোট বড় নানা দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন এলাকার মানুষ।
সংশ্লিষ্ট দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ঢেলাপীরহাট থেকে রংপুরের তারাগঞ্জহাট পর্যন্ত ঢেলাপীর- তারাগঞ্জ উপজেলা পাকা সড়কটি বিস্তৃত। নব্বই দশকের মধ্যভাগে প্রায় ১৬ কিলোমিটার এর এ উপজেলা পাকা সড়কটি পর্যায়ক্রমে তৈরি করা হয়। নির্মাণের পর শুধুমাত্র একবার তারাগঞ্জহাট থেকে চার কিলোগ্রাম সড়কটি মেরামত করা হয়েছে। এর পর আর সড়কটি কোন রকম সংস্কার কিংবা মেরামত করা হয়নি। এতে করে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সকল রকম যানবাহন চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। পুরো সড়কটিজুড়ে স্থানে স্থানে ইটের খোয়া ও পাথর উঠে গিয়ে বড় বড় অসংখ্যক খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এ সব খানাখন্দ মারিয়ে যানবাহন চলাচল করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। এ সড়কটি ঘেঁষে গড়ে উঠেছে সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী ইউনিয়নের পোড়ারহাট, ঢেলাপীরহাট, কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের সিপাইগঞ্জবাজার, হাজারীহাট ও রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী তারাগঞ্জহাট। সড়কটি দিয়ে সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ী, কাশিরাম বেলপুকুর, বোতলাগাড়ী ও খাতামধুপুর ইউনিয়নের খয়েক হাজার মানুষ সৈয়দপুর ও তারাগঞ্জ উপজেলা শহরে খুব সহজে যাতায়াত করতে পারেন। এছাড়াও উপজেলা পাকা সড়কটি দিয়ে সৈয়দপুর শহর অতিক্রম না করে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা হয়ে রংপুর বিভাগীয় শহরে যাওয়া যায় অতি স্বল্প সময়ে ।
গতকাল রবিবার সরেজমিনে ওই সড়কটিতে গিয়ে দেখা যায় যথাসময়ে সংস্কার কিংবা মেরামতের অভাবে সড়কটিজুড়ে খোয়া ও পাথর উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। যে কোন যানবাহন নিয়ে চলাচল করা একেবারে দূরূহ হয়ে পড়েছে। কথা হয় এলাকার অটোরিকশা চালক ভুকু, বাবু, ভজেসহ বেশ কয়েকজন সঙ্গে। তারা ক্ষোভের সঙ্গে জানান, সড়কটি দিয়ে তারা প্রতিদিন চওড়াবাজার,সিপাইগঞ্জ ও হাজারীহাট থেকে যাত্রী গিয়ে উত্তরা ইপিজেড, সৈয়দপুর কিংবা তারাগঞ্জহাটে খুব সহজে যাতায়াত করা যায়। কিন্তু বর্তমানে সড়কটি একেবারে করুণ দশা। এখন সড়কটির এমন করুণ অবস্থা যে এটি দিয়ে যাত্রী পরিবহনে প্রায় তারা দূর্ঘটনার মধ্যে পড়ছেন। এতে তাদের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা ভ্যানের অনেক মূল্যবান যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে প্রায়শঃ।
এ সড়কটি ব্যবহার করে গ্রামের বাড়ি থেকে কর্মস্থল দেশের বৃহৎ সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানায় আসেন এমন একজন কর্মচারী নাম প্রকাশ না কওে বলেন, এলাকার সব শ্রেণি পেশার মানুষের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি। অথচ এখন সড়কটি দিয়ে যানবাহন নিয়ে তো দূরের কথা মানুষের চলাচল করায় ভীষণ কষ্টকর হয়ে পড়েছে। তিনি অবিলম্বে সড়কটি মেরামতের দাবি জানান।
সৈয়দপুর উপজেলা প্রকৌশলী এম এম আলী রেজা রাজু, ঢেলাপীর - তারাগঞ্জ উপজেলা পাকা সড়কটির বেহাল দশা কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, সড়কটি মেরামতের জন্য স্টিমেট করে সংশ্লিষ্ট বিভাগে প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশা করি, খুব শিগগিরই তার অনুমোদন মিলবে এবং সড়কটির মেরামতের কাজ শুরু করতে পারবো।