সৈয়দপুরে প্রেমিকার ধর্ষণের ভিডিও ধারণের মামলা, তিন বন্ধু গ্রেফতার
তোফাজ্জল হোসেন লুতু,সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:
নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রেমিকার ধর্ষণের ভিডিও ধারণের মামলায় ধর্ষকসহ তিন বন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত শনিবার গভীর রাতে ওই তিন বন্ধুকে পৃথক পৃথক স্থান থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ধর্ষণের ২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপ উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর চড়কপাড়ার আব্দুল মালেকের ছেলে মো. মুন্না (২৫), একই গ্রামের পাঠানপাড়ার শওকত আলীর ছেলে মো. আলাল (২৫) ও আমজাদের মোড়ের শহিদুল ইসলামের ছেলে তৌফিক ইসলাম তুহিন (২০)। এরা তিনজনই পরস্পরে বন্ধু।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সৈয়দপুরের বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের লক্ষণপুর চড়কপাড়ার মাদ্রাসা পড়ুয়া ছাত্রীর সঙ্গে গত ২০১৮ সালে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মো. মুন্নার। একই বছরের ৭ সেপ্টেম্বর পাঠানপাড়ার আলালের বাড়িতে প্রেমিকাকে ডেকে বিয়ের মিথ্যে প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে প্রেমিক মুন্না। এ সময় প্রেমিক কৌশলে ওই ধর্ষণের ভিডিও মোবাইলে ধারণ করে রাখে। এরপর ২০২০ সালের ২৪ জানুয়ারি একই গ্রামের আশিকুর রহমানের সঙ্গে ওই মাদরাসার ছাত্রীর বিয়ে হয়। তাদের সুখের সংসার ভালই চলছিল। এ অবস্থায় গত ১০ এপ্রিল রাতে মুন্নার বন্ধু তুহিন ওই ছাত্রীর সঙ্গে দেখা করে তাকে জানায় মুন্নার সঙ্গে তার ধর্ষণের একটি ভিডিও ক্লিপ রয়েছে।
এ কথার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য গত ১৪ এপ্রিল ওই ছাত্রী শহরের প্লাজা মার্কেটে একটি চাইনিজ রেস্টুরেন্টে তুহিনের সাথে দেখা করে। তুহিন একটি ফেসবুক আইডি থেকে ২ মিনিট ৩০ সেকেন্ডের ওই ভিডিও ক্লিপসটি দেখায় ওই ছাত্রীকে। এ সময় সেটি ডিলিট করার জন্য অনুরোধ করলে তুহিন ২ লাখ টাকা অথবা দৈহিক মেলামেশা করার প্রস্তাব দেয় তাকে। এতে অসম্মতি জানিয়ে নিজ বাড়িতে ফিরে যায় ওই ছাত্রী।
গত শনিবার আবারও তুহিন মোবাইল ফোনে ওই ছাত্রীকে টাকা অথবা দৈহিক মেলামেশার প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হলে ভিডিও ক্লিপ ইন্টারনেট ও ফেসবুকে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করে। এ ঘটনার পর বিকেলে ওই ছাত্রী বাদী হয়ে সাবেক প্রেমিকসহ তিন বন্ধুকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার পর পরই শহরের পাঁচমাথা মোড় থেকে তৌফিক ইসলাম তুহিন, আমজাদের মোড় থেকে মো. আলাল এবং নিজ বাড়ি থেকে মো. মুন্নাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল হাসনাত খান জানান, ভিকটিমকে রোববার সকালে শারীরিক পরীক্ষার জন্য নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে এবং গ্রেফতারকৃত আসামীদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। মামলাটি নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনসহ পর্ণগ্রাফি আইনে রুজু হয়েছে।