ডোমারে স্বাধীনতা দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুষ্ঠান বর্জন
আবু ফাত্তাহ্ কামাল (পাখি),স্টাফ রিপোর্টার ঃ নীলফামারীর ডোমারে শুক্রবার সকাল আটটায় মহান স্বাধীনতা দিবসে রাজাকারের সন্তান জাতীয় পতাকা উত্তোলনের অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে অনুষ্টান বর্জন করলেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবারের সদস্যবৃন্দরা ।
গত ১৬ই ডিসেম্বর (২০১৯ইং) বিজয় দিবস অনুষ্টানে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন পর্বে তালিকাভুক্ত স্বাধীনতা বিরোধীর সন্তান অভিযোগ এনে উপজেলা চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ এর নাম ঘোষনা হওয়ায় উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সকল সদস্যবৃন্দ বর্জন করেছিলেন ।
দেখা গেছে,স্বাধীনতা দিবসটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের আয়োজন করেছে উপজেলা প্রশাসন । স্বাধীনতা দিবস (২০২১ইং) উপলক্ষে ডোমার উপজেলা প্রশাসন জাতীয় পতাকা উত্তোলন পর্বে উপজেলা চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ এর নাম ঘোষনা করলে তিনি তালিকাভুক্ত স্বাধীনতা বিরোধীর সন্তান এমন অভিযোগে অনুষ্ঠান বর্জন করেন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যবৃন্দরা ।
উল্লেখ্য,স্বাধীনতা দিবসে (২০২১ইং) জাতীয় পতাকা উত্তোলন পর্ব থেকে তালিকাভুক্ত স্বাধীনতা বিরোধীর সন্তান এমন অভিযোগ এনে উপজেলা চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদকে বিরত রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়ে গত মঙ্গলবার (২৩.০৩.২০২১ ইং)ডোমার ইউএনও কে স্বারকলিপি প্রদান করেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা ।
এ ব্যাপারে ডোমার উপজেলা কমান্ডের সাবেক কমান্ডার মোঃ নুরন নবী জানান,গত বিজয় দিবস (২০১৯ ইং) আমরা প্রশাসনের অনুষ্ঠান (পতাকা উত্তোলন পর্ব)বর্জন করেছি । কারণ এক সাগর রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার পতাকা কোন রাজাকার সন্তান উত্তোলন করুক ,তা আমরা চাই না ।এবারও (২০২১ই ) ওই রাজাকার পুত্র পতাকা উত্তোলন করবেন মাইকে ঘোষনা হল,তাই এবারও প্রশাসনের পতাকা উত্তোলন পর্ব অনুষ্ঠান বর্জন করলাম।
এ ব্যাপারে ডোমার উপজেলা চেয়ারম্যান তোফায়েল আহমেদ জানান,আমি ৩০ বছর এই রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত,সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনে আমাকে নৌকা প্রতিক দিয়েছিলেন,বিপুল ভোটের মধ্যদিয়ে আমি বিজয় অর্জন করেছি ।২০১৯ সালে ১০ই মার্চে যে উপজেলা পরিষদের নির্বাচন হল ,সে নির্বাচনেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাকে নৌকা প্রতিক দিয়েছিলেন । আমি সেই পরীক্ষিত মানুষ । ২০১৯ সালে নির্বাচনে এই নুরন নবী আমার সংগে ভোট করেছিলেন । বিপুল ভোটের ব্যবধানে আমার সংগে পরাজিত হয়েছিলেন । পরাজিত হওয়ার কারনে তার ক্ষোভ। আমার দলের সভাপতি,একটি অপশক্তি মিলে আমার বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে । আমাকে সামাজিক ভাবে ,রাজনৈতিকভাবে হেয় করা যায় । যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে,যাদের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা হয়েছে,যাদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ছবির অবমাননা মামলা হয়েছে ৭৪ সালে,কেউ ডাকাতি করে শহীদ পরিবার হয়েছে। এরা তারাই । অনেক মুক্তিযোদ্ধা উপস্থিত ছিলেন,একজন মাত্র মুক্তিযোদ্ধা নুরন নবী অনুষ্টান ত্যাগ করেছেন । কাজেই এটা আমার দলের কাছে,সাধারন মানুষের কাছে এটা কোন ব্যাপার না ।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ডোমার উপজেলা শাখার ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার ও ডোমার উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা শাহিনা শবনম জানান,অধিকাংশ মুক্তিযোদ্ধা অনুষ্টান (পতাকা উত্তোলন পর্ব)বর্জন করেছে । কিছু মুক্তিযোদ্ধা আবার ছিল। স্বাধীনতা দিবসে (২০২১ইং) জাতীয় পতাকা উত্তোলন পর্ব থেকে তালিকাভুক্ত স্বাধীনতা বিরোধীর একজনকে বিরত রাখার জন্য অনুরোধ জানিয়ে গত মংগলবার (২৩.০৩.২০২১ ইং)আমাকে ( ইউএনও) স্বারকলিপি প্রদান করেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা । তবে নীতিমালায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউএনও পতাকা উত্তোলনের কথা বলা হয়েছে ।আমরা সে ভাবেই উত্তোলন করেছি ।