মৃত্যুর আগে বয়স্ক ভাতা কার্ড দেখে যেতে চান ৮৪ বছর বয়সের বৃদ্ধ ফয়েজ উদ্দিন


হাফিজুর রহমান হৃদয়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

৮৪বছর বয়সেও দিনমজুর ফয়েজ উদ্দিনের ভাগ্যে জোটেনি একটি বয়স্ক ভাতার কার্ড। বয়সের ভারে নুইয়ে পড়েছেন অনেকটাই। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস বৃদ্ধ বয়সেও সংসারের ঘানি টানতে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাচ্ছেন তিনি। চোখে মুখে শুধু হতাশার ছায়া। তবুও একটি বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য অনেকবার ঘুরেছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে। টাকার অভাবে সেটাও মেলেনি তার ভাগ্যে। অভিযোগ, টাকা দিলেই মেলে এসব ভাতার কার্ড। তবে অন্তত মৃত্যুর আগে ভাতার কার্ড দেখতে চান এই বৃদ্ধ।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, মাত্র ৫শতকের বশতভিটা তার। টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি ঘরের চালও বর্ষার শিলাবৃষ্টিতে ফুটো হয়ে জালের মতো হয়েছে। পাটকাঠি, বাঁশের চটি এবং খরকুটো দিয়ে তৈরি ঘরের বেড়া। বৃষ্টি ও শীতের সময় ঘরে রাত কাটানো দায় হয়ে দাঁড়ায়। বহু কষ্টে থাকতে হয় স্ত্রী সন্তানদের নিয়ে। কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের সোনাইর খামার এলাকায় বসবাস তার। ৫ ছেলে ৩ মেয়ের মধ্যে বড় দুই ছেলে বিয়ে করে স্ত্রী সন্তান নিয়ে আলাদা সংসার গড়েছেন। অনেক কষ্টে ২ মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন। রায়গঞ্জ কলেজে পড়াশোনা করছেন মেঝো ছেলে ইউসুফ, ছোট ছেলে আবু বকর সিদ্দিক পড়ছেন জেলা সদরের একটি মাদরাসায়। এদিকে ছোট মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ছেন। এই মেয়েকে নিয়েই যত দুঃশ্চিন্তা তার। দিনমজুরের কাজ করে যা আয় হয় তা দিয়ে ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া, ভরনপোষনসহ সংসার চালাতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছেন এ বয়সে। 

দিনমজুর ফয়েজ উদ্দিন জানায়, প্রতিবছর বয়স্কভাতা, ভিজিএফ, ভিজিডি, রেশন কার্ডসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেয়ার আশ্বাস দিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ছবি ও জাতীয় পরিচয়পত্র জমা নিলেও শেষমেস ভাগ্যে মেলে না কোনো কিছুই। ইউপি সদস্য তার প্রতিবেশি, জানেন ঘরের সব খবর। অথচ আজও কোনো সুযোগ সুবিধা পাননি। এমনকী করোনাকালে অনেকে অনেক কিছু পেলেও কোনো প্রকার সহায়তা পাননি বলেও অভিযোগ তার।

এ ব্যাপারে রায়গঞ্জ ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ড সদস্য জাকির হোসেন ফজু বলেন, বয়স্ক ভাতার তালিকার জন্য নতুন আবেদন ইউনিয়ন পরিষদে জমা দিতে বলা হয়েছে। যদি দিয়ে থাকে তবে সরকারের শতভাগ বয়স্কভাতা প্রদানের চালু হলে হয়তো তালিকায় নাম থাকবে। নয়তো নাও হতে পারে। 

ইউপি চেয়ারম্যান আ.স.ম আব্দুল্লাহ আল ওয়ালিদ মাছুম বলেন, ৮৪ বছর বয়সের একজন বৃদ্ধ! উনি তো আরও আগে পাওয়ার যোগ্য ছিলো। যাহোক ওনাকে ছবি এবং ভোটার আইডি কার্ডসহ পরিষদে পাঠিয়ে দেন। আমি বয়স্ক ভাতার কার্ড করে দেব। 

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূর আহমেদ মাছুম বলেন, যদি উনি অনলাইনে বয়স্ক ভাতার আবেদন করে থাকেন তবে যেহেতু সরকার শতভাগ বয়স্ক ভাতার আওতায় আনার ঘোষণা দিয়েছেন সেহেতু ওনার বয়স বিবেচনা করে অগ্রাধিকার প্রাপ্ত হবেন। 


পুরোনো সংবাদ

হাইলাইটস 5292686352307984974

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item