এক সন্তানের মা ডাঃ পালালেন নাপিতের সাথে

হাজী মারুফ 
রংপুর মহানগরীতে সম্প্রতি ঘটে গেলো একটি চমকপ্রদ প্রেম কাহীনি। এক সন্তানের জননী আয়শা সিদ্দিকা যিনি পেশায় একজন এমবিবিএস ডাক্তার, প্রেমে পড়েছেন স্টেশন এলাকার এক বিবাহীত যুবকের। যুবকটি পেশায় একজন নাপিত। তাদের মাঝে দীর্ঘদিন থেকে চলে আসছিলো হৃদয়ের লেনা দেনা অতঃপর গত ১৭ ই মার্চ নিরুদ্দেশ হন অজানার পথে। বিষয়টি প্রথম পর্যায়ে মানসম্মান বিবেচনায় মেয়ের বাবা নগরীর নিউ সেনপাড়া এলাকার বাসিন্দা আব্দুল গফুর ওরফে চ্যপ্টা গফুর, যিনি দীর্ঘদিন থেকে রংপুর ক্রীড়াঙ্গনকে দাপটের সাথে নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন তিনি তার মেয়ের লাপাত্তা হওয়ার বিষয়টি তেমন প্রচার করেননি। কিন্তু  যখন তার আত্মিয় স্বজন সহ সর্বত্রে সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়েও মেয়ের  সন্ধান পেতে ব্যার্থ হন, তখন ঘটনার ১০ দিন পর ২৭শে মার্চ রংপুর মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় ৩ জনকে আসামী করে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। থানা পুলিশ মামলাটি আমলে নিয়ে আসামী বাপ্পি, পিতা আসলাম সাং কলোনী ২৭ নং ওয়ার্ড’র বাসায় একাধিকবার হানা দিয়েও বাপ্পি ও অপর দুই আসামী  বাপ্পির পিতা আসলাম এবং বাপ্পির মা ৬০ বছরের বৃদ্ধা শাহাজাদী বেগমকে গ্রেফতারে ব্যর্থ হন। তখন মামলার বাদী আব্দুল গফুরের চাপের মুখে গত ৭ই এপ্রিল মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা কোতয়ালী থানার প্রভাবশালী পুলিশ কর্মকর্তা এস আই মনোয়ার, কৌশলের আশ্রয় নিয়ে আলোচনার কথা বলে ২৭ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারুন অর রশিদ’র মাধ্যমে, কাউন্সিল’র বাসায় ডেকে আনান  আসামী শাহাজাদী বেগ কে। কাউন্সিলর’র ডাকে সাড়া দিয়ে শাহাজাদী বেগম তার বাসায় এসে কাউন্সিলর সহ কথা বলতে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ অফিসার থানা থেকে অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে শাহাজাদী বেগমকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসলে। পুরো কলোনী জুড়ে তোলপাড় স্মৃষ্টি হয়। একজন সিটি কর্পোরেশনের চলতি দায়িত্বে থাকা কাউন্সিলর’র বাসায় তাকে দিয়ে ডেকে আসামী গ্রেফতার করায় এলাকার সচেতন মহল হারুন অর রশিদ সম্পর্কে নানান মন্তব্য করতে থাকেন। এতে কাউন্সিলর এলাকায় বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েন। উপায়ন্তর না পেয়ে কাউন্সিলর থানায় ছুটে আসেন এবং অন্যান্ন কাউন্সিলরদের মোবাইলে খবর দিয়ে থানা চত্ত্বরে ডেকে আনেন। বিষয়টি এসময় স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মাঝেও ছড়িয়ে পড়ে। এবং মেয়র সহ প্রায় সকলেই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হলে, তৎক্ষনাৎ থানায় ছুটে আসেন ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মাহাবুবুর রহমান মঞ্জু, ২৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জামাল উদ্দিন, প্যানেল মেয়র মাহমুদুর রহমান টিটু, ২২ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মিজানুর রহমান মিজু, ১৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফুলু, ১৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর লাইকোসহ অনেকেই। তারা দীর্ঘ সময় থানায় উপস্থিত ওসি সহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করে, একজন কাউন্সিলর কে কেন আসামী ধরার কাজে মিথ্যে বলে ব্যবহার করা হলো তার কারণ জানতে চান এবং ধৃত আসামী শাহাজাদীর মুক্তি দাবী করেন অন্যাথয় সিটি কর্পোরেশনের যাবতীয় কর্মকান্ড বন্ধের হুমকী দেন। পুলিশের সঙ্গে আলোচনার সময় সেখানে মামলার বাদী আব্দুল গফুরও উপস্থিত ছিলেন। দীর্ঘ আলোচনার পর কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে মামলার বাদীর নিজ জিম্মায় আসামী শাহাজাদী বেগমকে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তি প্রাপ্তির পর থানা চত্ত্বরে সাংবাদিকদের মুখোমুখী হন ৬০ বছর বয়সের প্যারালাইজড রোগে আক্রান্ত বৃদ্ধা শাহাজাদী বেগম। তিনি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন আমার ছেলে বাপ্পি কাউকে অপহরণ করেননি। কারন ঐ মেয়ের সাথে আমার ছেলের দীর্ঘদিনের প্রেম এবং চলা ফেরার বিষয়টি নগরীর হাজার হাজার লোক পূর্ব থেকেই জানেন। একই সময়ে সেখানে উপস্থিত কলোনী এলাকার অপর একজন মহিলা চিৎকার করে বলতে থাকেন, বাপ্পির পুর্বের বউকে এই ডাক্তারনীর সহায়তায় এবং প্রত্যক্ষ প্ররোচনায় হত্যা করা হয়েছিলো, এবং সেই হত্যা  মামলায় বাপ্পির সহযোগী আসামী হিসেবে আয়শা সিদ্দিকার নামও ছিলো। পরবর্তিতে চুড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময়, অজ্ঞাত কারণে আয়শা সিদ্দিকার নামটি বাদ দেয়া হয়। এ সময় কলোনী এলাকার উপস্থিত অনেকেই বলেন। যার মেয়ে ডাক্তার হয়ে নাপিতের সঙ্গে পালাতে পারেন তার এই আসলাম ও বৃদ্ধা শাহাজাদী বেগমের নামে মামলা করার কোন নৈতিকতা নেই। তবুও আব্দুল গফুর ক্ষমতাবান বিধায় বাপ্পির বাবা ও মা অসহায় এই মানুষ গুলোর নামে মিথ্যে মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ কর্তৃক আসামী ধরা এবং রাতেই তাকে ছেড়ে দেয়ায় পুরো নগরীজুড়ে বিষয়টি মুখরোচক আলোচনায় পরিণত হয়। বিষয়টি জানতে গ্রামবালা সংবাদ প্রতিনিধি সেল ফোনে আব্দুল গফুরকে প্রশ্ন করেন। আপনার স্বাক্ষরে আপনার মামলার আসামীকে থানা থেকে মুক্তি করা হলো, বিষয়টি আসলে কি? উত্তরে আব্দুল গফুর প্রতিনিধিকে বলেন না আসামীকে ছাড়া হয়নী। এ সময় প্রতিনিধি আব্দুল গফুরকে বলেন মুক্তিপ্রাপ্ত আসামী শাহাজাদী বেগমকে আমরা থানার বাহিরে দেখেছি এবং কথা বলা সহ তার ছবিও তুলেছি। এ কথা শুনেই আব্দুল গফুর ফোনটি কেটে দেন। পরবর্তীতে তাকে আবারও ফোন করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি। অপরদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই মনোয়ারকে বিষয়টি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, এজাহারে নাম থাকায় আমি আসামীকে গ্রেফতার করে আনি। কিন্তু বড় অফিসাররা তাকে ছাড়লো না রাখলো সেটা আমার দেখার বিষয় নয়। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।   

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 7999266112283090288

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item