ফুলবাড়ীতে পারিবারিক কলহের জেরে কন্যা সন্তান দত্তক মাতৃত্বের টানে ৫ মাস পর ফেরত,কষ্টে কাতর পালিত বাবা মা

মেহেদী হাসান উজ্জল,ফুুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
পারিবারিক কলহের জেরে কন্যা সন্তান দত্তক পরে দত্তক নেওয়া শিশু কন্যাকে ৫ মাস পর থানার মধ্যস্থতায় তার নিজের মায়ের কাছে ফেরত দিলেন শিক্ষক আশরাফুল ইসলাম। বাচ্চা ফেরত দেওয়ার কারনে পালিত মা হাসপাতালে ভর্তি,পালিত বাবার কান্নায় কাদলেন উপস্থিত শতশত মানুষ।

এমনি এক  ঘটনা ঘটেছে  দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে । বিয়ের ১৩ বছর অতিবাহিত হলেও কোন সন্তানের মুখ না দেখতে পেয়ে বাবা,মা হবার অপূর্ণতার দুঃখ নিয়ে বসবাস করছিলেন শিক্ষক দম্পত্তি দিনাজপুর ফুলবাড়ী দাদুল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আশরাফুল ইসলাম ও কাজিহাল ডাঙ্গা ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষিকা কল্পনা বেগম।

অনেকদিন থেকে একটা বাচ্চা দত্তক নেওয়ার কথা ভাবচিলেন। সেই সুত্র ধরে একদিন তাদের দুর সর্ম্পকের আত্মীয় পাচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য পরিদর্শক ডা.রোকেয়া বেগম তাদেরকে একটি কন্যা সন্তান দত্তক নেওয়ার খবর দেয়। এরপর তারা একদিনের কন্যা সন্তানটিকে মৌখিক ভাবে দত্তক নেয়। সন্তানকে ভালোবাসার জন্য যে মমতা গুলো তাদের গচ্ছিত রেখে ছিলে তারা সেই কন্যা সন্তানটিকে সব ভালোবাসা দিয়ে লালন-পালন করতে থাকে। তারা একদিনের বাচ্চা নিয়ে এসে পাঁচ মাস যাবৎ নিজের বুকে জড়িয়ে ধরে মানুষ করতে থাকে।

এদিকে হঠাৎ তাদের সেই সাজানো গোছানো মমতায় ঘেরা বাচ্চাটিকে নিজের বাচ্চা বলে দাবি করেন পাঁচবিবি উপজেলার বালুঘাট গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের কন্যা মারুফা বেগম(২৪)। হতভঙ্গ হয়ে পড়ে শিক্ষক দম্পত্তি,এক প্রকার মাথায় বাজ ভেঙ্গেঁ পড়ার মতো। তারা মারুফার খোঁজ নিয়ে দেখে যে,সে সত্যি তার মা,তার পরেও বাচ্চাকে ফেরত দিতে অস্বিকার করেন শিক্ষক দম্পত্তি দ্বয়।

পরে মা মারুফা আক্তার তার বাচ্চাকে জোর করে আটক রাখা হয়েছে বলে দাবি করে গত ২৫ ডিসেম্বর ফুলবাড়ী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে থানার অফিসার ইনচার্জ শেখ নাসিম হাবিব উভয়কে ডেকে নিয়ে আলোচনা করে আইনী প্রক্রিয়ায় গতকাল শনিবার রাতে ফুলবাড়ী থানায় দুপক্ষের উপস্থিতিতে  আইনি প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে ৫মাস বয়সী আসফিয়া জান্নাতকে তার নিজের মায়ের কাছে হস্থান্তর করেন ফুলবাড়ী থানা পুলিশ। একদিকে নিজের মায়ের মমতা অপর দিকে দত্তক মা,বাবার সন্তান ছিনিয়ে নেওয়ার আর্তনাদ কে কেন্দ্র করে এক হৃদয় বিদারক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়।

শিক্ষক মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন, তাদের কোনো সন্তান ছিলো না এই সন্তান পাওয়ার পর থেকে তার স্ত্রী বেশ শুখে শান্তিতে বসবাস করছিলো এখন তারা কি নিয়ে বাচবেন,তিনি আরো বলেন প্রয়োজনে তিনি তাদের সকল স্থাবর সম্পতি দিয়ে দেবেন তবুও তাদেও ওই সন্তান চাই।

এবিষয়ে মারুফা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, খুলনা জেলার মাহিবুল তরফদার নামে এক ব্যক্তির সাথে ঢাকায় পড়া লেখার করা সময় প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরিবারের কাউকে না জানিয়ে তার সাথে বিয়ে করেন তিনি। পরে জানতে পারে ঐ মাহিবুলের বাসায় আগের একটা বৌ ও সন্তান রয়েছে। এর পর তার পেটে আসে একটি সন্তান। বাড়ীর সকলে তাকে বলে বাচ্চাটি নষ্ট করার জন্য ,কিন্তু পাচবিবি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর পরিদর্শক ডা.রেকেয়া বেগমের বলেন, ৫মাসের বাচ্চা নষ্ট করা সম্ভব নয়।তখন তিনি ডাক্তারকে বলেন, আমার এই বচ্চা হবার পর যদি কোন ভালো পরিবার পান তাহলে তাকে দত্তক দিয়েন। পরে ৫মাস অতিবাহিত হবার পর মাতৃত্বের টানে তিনি সিন্ধান্ত পরিবর্তন করে বাচ্চাকে ফেরত চায়।

এব্যাপারে ফুলবাড়ী থানার অফিসার্স ইনচার্জ শেখ নাসিম হাবীব জানান,  তার প্রকৃত মা মারুফা সে কারনে আইন অনুযায়ী সেই সন্তানকে তার মায়ের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে।


পুরোনো সংবাদ

নির্বাচিত 8980371091397560337

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item