অসমাপ্ত স্মৃতিস্তম্ভে বিজয় দিবসে শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন সৈয়দপুরবাসী

 তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
 স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪৭ বছরেও নীলফামারীর সৈয়দপুর শহরের বিমানবন্দর সড়কে শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ সম্পন্ন হয়নি। অগণিত শহীদদের রক্তে রঞ্জিত মাটিতে অর্থ সংকটে আটকা পড়ে আছে স্মৃতিস্তম্ভ কাজ। তারপরও অসমাপ্ত স্মৃতিস্তম্ভে এবার মহান বিজয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন সৈয়দপুরবাসী। আর এজন্য গত ২/৩ দিন যাবৎ সৈয়দপুর উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে স্মৃতিস্তম্ভ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নের কাজ করা হয়েছে।
সূত্র মতে জানা যায়, বিগত ২০০০ সালে শহীদদের স্মৃতি ধরে রাখতে এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে নতুন প্রজন্মকে জানাতে স্বাধীনতার প্রতীক সৈয়দপুরে কেন্দ্রীয় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়। সে সময় শহরের ওয়াপদা মোড়ে স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিফলকও উন্মোচন করা হয়েছিল। তৎকালীন যোগাযোগ মরহুম প্রতিমন্ত্রী আনিসুল হক চৌধুরী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিফলক উন্মোচন করেছিলেন। পরবর্তীতে কয়েক দফা স্থান পরিবর্তনের পর অবশেষে শহরের বিমানবন্দর সড়কের রেলওয়ের জায়গায় স্মৃতিস্তম্ভের স্থান নির্বাচন করা হয়। বিগত গত ২০১৪ সালে স্থানীয় শহীদ দিবসে (১২ এপ্রিল) শহীদ সৃতিস্তম্ভ নির্মাণের ভিত্তি দেওয়া হয়। ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করেন জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব  মো. শওকত চৌধুরী। সুষ্ঠুভাবে কাজ সম্পন্ন করতে গঠন করা হয় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কমিটি। গঠিত ১০১ সদস্য বিশিষ্ট এ কমিটির আহবায়ক নির্বাচিত হন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাবেক পৌর চেয়ারম্যান জিকরুল হক। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সচেতন নাগরিকরা হন কমিটিভুক্ত। এজন্য বিমানবন্দর সড়ক ঘেঁষে ডাকবাংলো এলাকায় রেলওয়ের প্রায় ৫০ শতক ডোবা মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়। ঢাকা সাভারের জাতীয় স্মৃতিস্তম্ভ আদলে করা নকশায় শুরু হয় সৈয়দপুর শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কাজ। প্রায় ৪০ ফুট দীর্ঘ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজ জোরেশোরে চলতে থাকে। ইতোমধ্যে ভিত্তি থেকে কয়েক ফুট উচ্চ স্মৃতিস্তম্ভ টাওয়ার নির্মাণ হয়েছে। এজন্য ব্যয় হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। ব্যয়িত এই অর্থের যোগান দেয়া হয়েছে স্থানীয় এমপির ব্যক্তিগত তহবিল ও স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের নামে পূর্বে সংগৃহিত অনুদান থেকে। স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ সম্পন্ন করতে ব্যয়ের অংক হচ্ছে এক কোটি টাকা। অথচ মাঝপথে এসে অর্থ সংকটে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে এর নির্মাণ কাজ। স্মৃতিস্তম্ভের কাজ বন্ধ থাকার পর এলাকাটি অরক্ষিত হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় স্মৃতিস্তম্ভের মর্যাদা রক্ষা করতে সৈয়দপুর পৌরসভার উদ্যোগে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে দেয়া হয়েছে।
স্মৃতিস্তম্ভ বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব ও সৈয়দপুর সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন জানান, সৈয়দপুরবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে আজ ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবেস। এই দিনটি সৈয়দপুরবাসীর কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। মূলতঃ অর্থাভাবে আটকে আছে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ কাজ। এ কাজে কোন সরকারি বরাদ্দও পাওয়া যায়নি, বেসরকারি অনুদানও মেলেনি। পূর্বের সংগৃহিত বেসরকারি অনুদানের অর্থে প্রকল্পের ৬০ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এখনও এর ৪০ ভাগ কাজ অবশিষ্ট রয়েছে। 
প্রসঙ্গত, গত বছরের নভেম্বর মাসে জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শওকত চৌধুরীর আগ্রহে শহরের বিশিষ্টজনদের উপস্থিতি স্মৃতিস্তম্ভ বাস্তবায়ন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় এ বছরের ২৬ মার্চ স্মৃতিস্তম্ভে মহান স্বাধীনতা দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এর জন্য স্মৃতিস্তম্ভের কাজ শেষ করতে জাতীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শওকত চৌধুরী ১০ লাখ টাকা এবং বিশিষ্টজনদের পক্ষ থেকে ৩ লক্ষাধিক টাকা দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু প্রতিশ্রুতি অর্থ না মেলায় স্মৃতিস্তম্ভের অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে পারেনি স্মৃতিস্তম্ভ বাস্তবায়ন কমিটি। কমিটির সদস্যদের অভিযোগ, প্রতিশ্রুতি দেওয়া অনুদানের টাকা সংশ্লিষ্ট কেউ না দেওয়ায় অর্থাভাবে স্মৃতিস্তম্ভ অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন হয়নি।
 সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন জানান, উপজেলা প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সম্মতিতে অসমাপ্ত স্মৃতিস্তম্ভ এবার শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হচ্ছে।
 সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এসএম গোলাম কিবরিয়া বলেন, গত বৃহস্পতিবার আসন্ন বিজয় দিবসে অসমাপ্ত স্মৃতিস্তম্ভই শ্রদ্ধা নিবেদন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।                

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 6562623590178374037

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item