ফলোআপ-নীলফামারীতে ভিজিএফ চাল পাচারের ঘটনায় তদন্ত টিম গঠন॥ ঘটনা ধামাচাপা দিতে একটি মহল উঠে পড়ে লেগেছে

বিশেষ প্রতিনিধি ১১ আগষ্ট॥
নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের বরাদ্দকৃত ভিজিএফের ৩০ কেজি ওজনের ২৪৬ বস্তা চাল পাচারের ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ঠ একটি তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। আজ শনিবার (১১ আগষ্ট) সকালে জলঢাকা উপজেলার অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা জেলার কিশোরীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কামাল আজাদ স্বাক্ষরিত এক পত্রে এই তদন্ত টিম গঠন করা হয়। সেই সঙ্গে আগামী ১৩ আগষ্ট/২০১৮ এর মধ্যে তার দপ্তরে তদন্তটিমকে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়।
সুত্র মতে, জলঢাকা উপজেলা প্রকৌশলী দপ্তরের উপজেলা প্রকৌশলী হারুন আর রশীদকে আহবায়ক করে এই তদন্ত টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত টিমের অপর দুই সদস্য হলো একই উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আতাউর গণি ওসমানী ও প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসের উপ সহকারী প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান।
এদিকে গতকাল শুক্রবার (১০ আগষ্ট) “ নীলফামারীতে পাচারকালে ভিজিএফের ২৪৬ বস্তা চাল আটক” শিরোনামে বিস্তারিত প্রতিবেদন প্রকাশ পেলে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে একটি প্রভাবশালী মহল উঠে পড়ে লেগেছে। মহলটি তদন্তটিমকে প্রভাবিত করার পায়তারা করছে।
এ জন্য প্রভাবশালী মহলটি পাচারকালে আটককৃত চাল গুলোকে ঘটনার দিন বৃহস্পতিবার (৯ আগষ্ট) বিকালে বিতরন দেখানোর চেস্টা করছে। ওই দিন নাকি ধর্মপাল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জামিয়ার রহমান ৩০ মেট্রিকটন চাল ট্যাগ কর্মকর্তা জলঢাকা উপজেলার সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তকিম বিল্লার উপস্থিতে বিতরন করেছেন বলে তার কাগজপত্র তৈরী করে ফেলেছে।
কথিত চাল বিতরনে অনুপস্থিত থাকার পরেও সেখানে ট্যাগ কর্মকর্তা তার উপস্থিতিতে চাল বিতরন হয়েছে মর্মে স্বাক্ষরও করেছেন! ঘটনা ফাস হয়ে পড়ায় এ নিয়ে তোলপাড় সৃস্টি হয়েছে এলাকায়।  উল্লেখ যে, গত বৃহস্পতিবার (৯ আগষ্ট) রাতে পাচারকালে জব্দকৃত ২৪৬ বস্তা ডোমারের বোড়াগাড়ী বাজার এলাকার হতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা আটক করে। পরে পুলিশ ওই চাল ডোমার থানায় নিয়ে গিয়ে জব্দ করে রেখেছে।
এদিকে আজ শনিবার (১১ আগষ্ট) উক্ত ইউনিয়নের একাধিক সুত্র জানায়, সরকারের খাদ্য সহায়তা কর্মসূচী আওতায় কোরবানী ঈদকে সামনে ভিজিএফ কার্ডধারীরা এবার ১০ কেজির পরিবর্তে ২০ কেজি করে চাল পাবে। নীলফামারী জেলার ছয় উপজেলার ৬০ ইউনিয়ন ও ৪ পৌরসভায় ভিজিএফের চাল বিতরনে ৪ লাখ ৪ হাজার ৩১৫ কার্ডধারী পরিবারের জন্য ৮ হাজার ৮৬ দশমিক ৩০০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ দেয়। এরমধ্যে ধর্মপাল ইউনিয়নের জন্য ৬ হাজার ৩৭৫ কার্ডের বিপরিতে ১২৭ দশমিক ৫০০ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেয়া হয়।
ওই বরাদ্দের বিপরিতে ধর্মপাল ইউপি চেয়ারম্যান জামিয়ার রহমান ৯টি ওয়ার্ডের ৯ জন ইউপি সদস্যকে ৩০০টি করে ২হাজার ৭০০টি ও  সংরক্ষিত আসনের তিনজন নারী সদস্যকে ৩২৫টি করে ৯৭৫ টি সহ মোট ৩ হাজার ৬৭৫ ভিজিএফ কার্ড ভাগ করে দেন। বাকী দুই হাজার ৭০০ কার্ড ইউপি চেয়ারম্যান তার জিম্মায় রাখে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান জামিয়ার রহমানের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি ভিজিএফের কার্ডের উক্ত  হিসাবের সত্যতা স্বীকার করে বলেন তার কাছে যে ২৭০০ কার্ড রয়েছে তার মধ্যে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগকে ১ হাজার কার্ড দিতে হয়েছে। বাকী ১৭০০ কার্ড তার ভাগে রয়েছে। সেই কার্ডের চাল তিনি বৃহস্পতিবার বিতরন করেছেন জানিয়ে বলেন তিনি কোন চাল পাচার করেননি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা এটিএম আখতারুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি তদন্তে তিন সদস্যের তদন্তের টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত  টিমটি আগামীকাল রবিবার (১২ আগষ্ট) সকাল ১০টা হতে ধর্মপাল ইউনিয়ন পরিষদে গিয়ে তদন্তের কাজ শুরু করবেন। এ জন্য ইউনিয়ন পরিষদের সকল জনপ্রতিনিধি ও ভিজিএফের কার্ডধারীদের উপস্থিত হতে বলা হয়েছে। তদন্ত টিমের প্রতিবেদন আগামী ১৩ আগষ্ট পাওয়ার পর ডোমার থানায় রক্ষিত জব্দকৃত চালের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। #

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 7077329397389020755

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item