কিশোরীগঞ্জে পল্লী চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসায় অজ্ঞাত রোগে ৩০টি গরুর মৃত্যু

কিশোরীগঞ্জ (নীলফামারী) প্রতিনিধি ২৯ জুলাই॥ নীলফামারীর কিশোরীগঞ্জ উপজেলায় গত ২০দিনে  অজ্ঞাত রোগে প্রায় ৩০টি গরুর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। পল্লী চিকিৎসকদের ভূল চিকিৎসা ও উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসের অবহেলার কারনে এমনটি হচ্ছে বলে এলাবাবাসীর অভিযোগ। ফলে গরু পালনকারী কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।
আজ রবিবার (২৯ জুলাই) উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিস সুত্র ও সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলা প্রাণী সম্পদ অফিসে একজন প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা, একজন ভেটেরিনারি সার্জন, একজন কমপাউন্ডার, তিনজন ভেটেরিনারি ফিল্ড এ্যাসিসটেন্ট (ভিএফএ), একজন টিএলএ ও একজন ড্রেসার থাকার কথা। কিন্তু বর্তমানে উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ মাহুফুজার রহমান পবিত্র হজ্ব পালনের জন্য ছুটিতে থাকায় সেখানে ভারপ্রাপ্ত হিসাবে রয়েছেন উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডাঃ হোসেইন মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম। তিনজন ভেটেরিনারি ফিল্ড এ্যাসিসটেন্টের মধ্যে দুটি পদ র্দীঘদিন থেকে শুন্য। এছাড়াও টিএলএ ও ড্রেসারের পদ দুটি শুন্য। বিশেষ করে সরকারী নিয়ম অনুযায়ী উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জনকে প্রাণীসম্পদ অফিসে সার্বক্ষনিক থাকার নিয়ম থাকলেও তিনি রংপর শহরে পরিবার সহ থাকেন এবং সেখান থেকে প্রতি রবিবার থেকে বৃহস্পতিবার যাতায়াত করেন। ফলে বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামে মানুষজন গ্রাম্য পল্লী চিকিৎসককের মাধ্যমে গবাদী পশুর চিকিৎসা করায়। কিন্তু ভুল চিকিৎসা ও সঠিক রোগ নির্ণয় করতে না পারার কারণে গরুর মৃত্যু হচ্ছে।
এদিকে কিশোরীগঞ্জ উপজেলার বাহাগিলি ইউনিয়নের দক্ষিন দুরাকুটি আদর্শ গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ওই গ্রামের মৃত. জরিয়াল সরকারের ছেলে দিনমজুর রফিকুল ইসলামের অস্টেলিয়ান জাতের একটি বকনা (দামুর) গরু মারা গেছে।
এসময় দিনমজুর কৃষক রফিকুল ইসলাম কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, বাবা আমি অনেক কষ্ঠ করে দিনমজুরি করে ওই বাছুর তিনমাস আগে ২০ হাজার টাকায় ক্রয় করেছিলাম। হঠাৎ করে গরুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে আমার পাশের গ্রামের পল্লী চিকিৎসক রফিকুল ইসলাম ওরফে ফেলদেওয়াকে ডাকলে সে আমার গরুর সঠিক রোগ নির্ণয় না করে আমার গরুটির ভুল চিকিৎসা করে এবং আমার কাছে ঔষধের জন্য ৫০০ টাকা নেয়। ঔষধ খাওয়ানোর কিছুক্ষণ পর আমার গরুটি মারা যায়।
গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম দলিরাম গ্রামের এনামুল হক বলেন, গত দুই সপ্তাহ আগে আমার ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভি ও বাছুর যার বর্তমান বাজার দর দুই লাখ টাকার মত হতো। গরুটি অসুস্থ হলে আমি প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে ডাক্তার নিয়ে আসি কিন্তু তারা আমার গরু ও বাছুরটিকে সুস্থ করতে পারেনি। গরুটি মারা যাওয়ার কারনে আমি দিশেহারা হয়ে পড়েছি। 
প্রাণী সম্পদ অফিসের কাছে ও কিশোরীগঞ্জ সদর ইউনিয়নের কেশবা গ্রামের আজিজুল ইসলামের ছেলে শিপন মিয়া বলেন, আমার ৫০ হাজার টাকা মুল্যের একটি (এরে) গরু হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রাণী সম্পদ অফিসে নিয়ে আসি কিন্তু ডাক্তার না থাকার কারণে প্রাণী সম্পদ অফিসের ফডার গার্ড রতন মিয়া আমার গরুর চিকিৎসা করলে গরুটি আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পরে। পরে আমি অসুস্থ গরুটিকে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করি। শিপন বলেন, এখন বিষয়টি মিমাংসা হয়ে গেছে বাড়াবাড়ি করার দরকার নেই। এছাড়াও বাহাগিলি ইউনিয়নের উত্তর দুরাকুটি গ্রামের জরিয়াল মিয়ার ছেলে আজিজুলের একটি বাছুর, পুটিমারী ইউনিয়নের সাত্তার মিয়ার একটি এরে বাছুর মারা গেছে।
এ ব্যাপারে পল্লী চিকিৎসক রফিকুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, আমি প্রাণী সম্পদ অফিসের সাথে কথা বলে গরুটির চিকিৎসা দিয়েছি।
এ বিষয়ে উপজেলা ভেটেরিনারী সার্জন ও উপজেলা প্রাণী সম্পদ (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা ডাঃ হোসেইন মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের এনামুল হকের গরুটির ম্যাসটাইটিস (ওলান প্রদাহ) রোগ হয়েছিল আমরা গরুটিকে বাঁচাতে অনেক চেষ্ঠা করেছি কিন্তু পারিনি। অন্য গরুর বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন, সামনে ঈদ তাই অনেক গরুর মালিক গরুকে কাঁঠাল, ভাত ও কাঁচা ঘাস খাওয়ানোর কারনে পেট ফুলে গিয়ে গরু অসুস্থ হয়। তাই কিছু কিছু গরু চিকিৎসা দেওয়ার আগেই মারা যায়। #

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 991500561605727970

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item