ফুলবাড়ীতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে অপসারণ

মেহেদী হাসান উজ্জল,ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) প্রতিনিধি:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলার আলাদিপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর কাছে। এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হককে বিদ্যালয় থেকে প্রত্যাহার করেছে কতৃপক্ষ।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় বিদ্যালয়ে থেকে ওই প্রধান শিক্ষককে প্রত্যাহার করে নেন, উপজেলা সহকারী প্রাথমীক শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমান। এসময় স্থানীয় বাসিন্দাগন ও প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি সৈয়দ আবুল হাছান আজাদ, সাবেক সাধারন সম্পাদক আব্দুল আলিম, শিক্ষক সমিতির নেতা সৈয়দ আপেল মাহমুদ দিপু ও মোয়াজ্জেম হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

এলাকাবাসীরা বলেন জয়কৃষ্ণপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হক, গত ২০১১ সালের ১৫ নভেম্বর জয়কৃষœপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে অনিয়ম দুর্নীতি শুরু করেন। সে নিজ খেয়াল খুশি মতো বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন, ও নিজ খেয়াল খুশি মতো বিদ্যালয় থেকে চলে যান। তারা আরো বলেন সরকার ১০০ ভাগ শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি চালু করলেও, প্রধান শিক্ষকে টাকা না দিলে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির তালিকা অর্ন্তভুক্ত করা হয় না। প্রতিবাদ করতে গেলে বলে তোমার ছেলে বা মেয়ে বিদ্যালয়ে অনুপুস্থিত ছিল, পরিক্ষায় ফেল করেছে বলে অভিভাবকেদের তাড়ীয়ে দেয়।

মেলাবাড়ী এলাকার বাসীন্দা মতিয়ার রহমান বলেন, তার ছেলে মেহেদী হাছান ৩য় শ্রেণীতে পড়ে,  উপবৃত্তির তালিকায় নাম দেয়ার জন্য তার নিকট ২০০ টাকা দাবী করে, কিন্তু সে প্রধান শিক্ষকের দাবী অনুযায়ী টাকা না দেয়ায়, তার ছেলের নাম উপবৃত্তির তালিকায় দেয়নি ওই প্রধান শিক্ষক, একই কারনে উপবৃত্তি থেবে বঞ্চিত একই এলাকার মুসা মিয়ার ছেলে ৩য় শ্রেনীর ছাত্র শামিম, মাজেদুর রহমানের মেয়ে ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রী মারিয়া, হাছান আলীর মেয়ে ৪র্থ শ্রেনীর ছাত্রী হোসনে য়ারা, মেহেদুল ইসলামের দুই ছেলে রিয়াদ বাবু ও রিমন বাবু, শাহাজান আলীর ছেলে নদিমসহ আরো অনেকে।

এদিকে খোজ নিয়ে জানাগেছে কয়েক দফা বিদ্যালয়টিতে উন্নায়ন করার জন্য টিআর বরাদ্ধ হলেও, বিদ্যালয়টিতে কোন উন্নায়নের ছোয়া লাগেনি, সেই বরাদ্ধের টাকা সবেই চলে গেছে প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির পকেটে। এমন কি (সিলিপ) নামে একটি করে বরাদ্ধ প্রতিবছর বিদ্যালয় গুলো পেয়ে থাকে, সেই বরাদ্ধের টাকা দিয়ে বিদ্যালয় আনুসাঙ্গিক খরছ করার কথা থাকলেও, সেই টাকার কোন হিসেব নাই বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।

জানা গেছে বর্তমান বিদ্যালয়টির পরিচালনা পর্ষদ এর সভাপতির দায়ীত্বে আছেন নবীউল ইসলাম, তিনি পার্শবতী নবাবগঞ্জ উপজেলার ভাদুরীয়া স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষক। এলাকাবাসীদের অভিযোগ ওই সভাপতি এই এলাকার বাসীন্দা হলেও, সে বেশির ভাগ সময় তার কর্মক্ষেত্রে থাকে, ওই সভাপতির ছেলে মেয়েরা কিন্ডার গার্ডেন স্কুলে পড়ে, এই বিদ্যালযে তার কেউ নেই, অথচ প্রধান শিক্ষক তাকে সভাপতি তৈরী করেছে, তার পছন্দের লোক বলে।

এই বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নবীউল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন আমি বিদুৎসাই সদস্য হিসেবে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছি, তিনি আরো বলেন প্রধান শিক্ষকের এই অনিয়ম গুলো তিনি সভাপতির দায়ীত্ব নেয়ার আগেই করেছে।

এই বিষয়ে প্রধান শিক্ষক এমদাদুলের সাথে কথা বলতে চাইলে, তিনি শিক্ষক নেতা সৈয়দ আপেল মাহমুদ দিপুকে সাথে নিয়ে আসেন, এবং শিক্ষক সমিতির নেতা দিপু সংবাদটি পরিবেশন না করার জন্য অনুরোধ করেন।

এই বিষয়ে উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আতিকুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায়, প্রধান শিক্ষক এমদাদুল হককে ততক্ষনাৎ প্রত্যাহার করা হয়েছ্ েবিষয়টি তদন্তকরে পরবর্তি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 8162827521712907973

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item