সৈয়দপুর হাজারীহাট স্কুল ও কলেজের দুই দিনব্যাপী হীরক জয়ন্তী উৎসব উদযাপন শুরু

  তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর(নীলফামারী)প্রতিনিধি:

“ প্রাণের বন্ধনে মিলি, স্মৃতিময় অঙ্গণে ” শ্লোগানকে সামনে রেখে নীলফামারীর সৈয়দপুরে হাজারীহাট স্কুল ও কলেজে দুই দিনব্যাপী হীরক জয়ন্তী (৬০ বছর পূর্তি) উৎসব উদ্যাপন শুরু  হয়েছে। আজ ১০ মার্চ (শনিবার) সকালে কলেজের চিরচেনা সবুজ চত্বরে দুই দিনব্যাপী হীরক জয়ন্তী উৎসব উদ্যাপনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়না উড়িয়ে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি নীলফামারী - ৪  (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ একাংশ) আসনের সংসদ  সদস্য ও বিরোধী দলীয় হুইপ এবং কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আলহাজ্ব মো. শওকত চৌধুরী। এর আগে জাতীয় ও হীরক জয়ন্তীর পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন ও একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রীটি কলেজ সংলগ্ন সুপ্রসিদ্ধ হাজারীহাটের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে কলেজ চত্বরে এসে শেষে হয়। পরে হীরক জয়ন্তীর উৎসব উদ্যাপনের আলোচনা অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি নীলফামারী - ৪  (সৈয়দপুর-কিশোরগঞ্জ একাংশ) আসনের সংসদ  সদস্য ও বিরোধী দলীয় হুইপ এবং কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আলহাজ্ব মো. শওকত চৌধুরী।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. বজলুর রশীদ,  নীলফামারী জেলা পরিষদ সদস্য মো. শামীম চৌধুরী, সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ ভাইস্ চেয়ারম্যান মো. আজমল হোসেন, কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মো. এনামুল হক চৌধুরী ও খাতামধুপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. জুয়েল চৌধুরী। আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আলহাজ্ব মো. মনসুর আলী চৌধুরী।  আলোচনা সভার শুরুতেই সূচনা সঙ্গীত পরিবেশন করা হয়।  এরপর স্বাগত বক্তব্য দেন  হীরক জযন্তী উৎসব আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মো. লুৎফর রহমান চৌধুরী।
এতে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক  শিক্ষার্থী আলহাজ্ব মো. আব্দুল বাসির মিয়া, সাবেক শিক্ষার্থী মো. মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, কলেজের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি সিকান্দার আলী, সাবেক শিক্ষার্থী ও চক্ষু বিশেষজ্ঞ ও সার্জন ডা. আলহাজ্ব মো. শরীফুল ইসলাম,সাবেক শিক্ষার্থী ব্যারিস্টার মোখছেদুল ইসলাম, সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক প্রমূখ। এর আগে আলোচনার সভার শুরুতেই কলেজের মৃত্যুবরণকারী প্রতিষ্ঠাতা, শিক্ষক-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের স্মরণে শোক প্রস্তাব পাঠ এবং এক মিনিট দাঁড়িয়ে নীরবতা পালন করা হয়। এরপর ৪ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, প্রতিষ্ঠান থেকে এসএসসি পরীক্ষায় প্রথম উত্তীর্ণ একজন শিক্ষার্থী ও  এসএসসি পরীক্ষায় প্রথম স্থান লাভকারী একজন কৃতি শিক্ষার্থীসহ আমন্ত্রিত অতিথিদের উত্তরীয় পরিয়ে দেওয়া হয়।
 প্রতিষ্ঠানের দুই দিনব্যাপী হীরক জয়ন্তী উৎসব উদ্যাপন অনুষ্ঠানমালার দ্বিতীয় পর্বে ছিলে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণা, যাদু প্রদর্শণী ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গোটা হীরক জয়ন্তী অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন কলেজের পৌরণীতি ও সুশাসন বিষয়ের শিক্ষক মো. বাবর আলী
আর হীরক জয়ন্তী উৎসব উদযাপনের দ্বিতীয় দিনে  আজ ১১ মার্চ (রবিবার) অনুষ্ঠানমালায় রয়েছে বিকেল তিনটায় আলোচনা সভা ও স্মৃতিচারণামূলক অনুষ্ঠান। এরপরে  স্থানীয় ও প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীদের সংগীত পরিবেশন। সন্ধ্যায় সংগীতানুষ্ঠান। এতে সংগীত পরিবেশন করবেন ক্লোজআপ ওয়ান শিল্পী অবন্তী সিঁথি। আর সবশেষে রয়েছে র‌্যাফেল ড্র।
এদিকে, এ হীরক জয়ন্তী উৎসবকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতিষ্ঠানটিকে বর্ণিল সাজে সুসজ্জিত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের প্রধান ফটকে নির্মাণ করা হয়েছে আকর্ষণীয় বিশাল তোরণ। তৈরি করা হয়েছে অনুষ্ঠানের বিশাল মঞ্চও।  সেই সাথে আলোসজ্জা করা হয়েছে গোটা কলেজ ভবনসহ আশপাশের এলাকায়। আর হীরকজয়ন্তী উৎসবে উপস্থিত প্রাক্তন শিক্ষক ও  শিক্ষার্থীদের সবার গায়ে ছিল কমলা টি-শার্ট আর মাথায় ব্লু  টুপি।  মিলনমেলা  পরিণত হয় কলেজ চত্বর। অনেকে দীর্ঘদিন পর পুরোনো সহপাঠি বন্ধুদের পেয়ে উচ্ছুসিত ও আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কোলাকুলি করেন,ছবি তুলেন,গল্প করে মেতে উঠেঠিলেন প্রাণের মিলন মেলায়।          
 প্রসঙ্গত, নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নে অবস্থিত হাজারীহাট স্কুল ও কলেজটি বিগত ১৯৫৮ সালে উচ্চ বিদ্যালয় হিসেবে স্থাপিত হয়। এলাকার শিক্ষা অনুরাগী, সমাজসেবক ও উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম আলহাজ্ব শাজাহান আলী চৌধুরী এটি প্রতিষ্ঠান করেন। পরবর্তীতে এলাকার সমাজসেবী মরহুম মনির উদ্দিন চৌধুরীর উদ্যোগে হাজারীহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে ১৯৭২ সালে কলেজ শাখা চালু করা হয়। এ কলেজ থেকে ১৯৭৪ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ১১ জন পরীক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৭ জন উত্তীর্ণ হয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে শিক্ষা বোর্ডের নানা জটিলতায় কলেজের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ হয়ে পড়ে। এরপর পুনরায় মরহুম আলহাজ্ব শাজাহান আলী চৌধুরীর প্রচেষ্টায় ১৯৯৬ সালে হাজারীহাট উচ্চ বিদ্যালয়কে কলেজ উন্নীত করা হয়। হাজারীহাট স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৪ একর ১২ শতক জায়গায় জুড়ে অবস্থিত। এর  রয়েছে নিজস্ব একটি  বিশাল খেলার মাঠ ও সামনে একটি  বড় পুকুর। বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার সুন্দর ও  মনোরম পরিবেশে সহ¯্রাধিক শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা গ্রহন করে আজ অনেকে দেশে বিদেশে সরকারি- বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে  গুরুত্বপূর্ণ পদে প্রতিষ্ঠিত রয়েছেন। ।      


                                                            




পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 4729548046810875616

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item