কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্রের ভয়াল থাবায় ঝুঁকিতে লাখো মানুষ

হাফিজুর রহমান হৃদয়, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:


ব্রহ্মপুত্রের ভয়াল থাবায় ভারতের সীমান্তবর্তী দাঁতভাঙ্গার বেড়িবাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় বন্যার ঝুঁকিতে রয়েছে ওই এলাকার লাখ লাখ মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাবাসী বেড়িবাঁধটি পুননির্মাণের দাবি জানিয়ে এলেও কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় কাজে অগ্রগতি নেই।
গত বছরের বন্যায় রৌমারীর ডিক্রিরচর গ্রামের নো ম্যান্স ল্যান্ড ঘেঁষে দেওয়া এ বাঁধটি ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। ফলে বালুতে ঢেকে যায় শত শত হেক্টর আবাদি জমি। রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় এখনো কয়েকটি গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এলাকাবাসী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে বাঁধটি পুননির্মাণের দাবি জানালেও এ বিষয়ে এখনো ইতিবাচক সাড়া পাননি।
রৌমারী থেকে ১৬ কিলোমিটার দূরে দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের ডিক্রিরচর গ্রাম। ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে বিলীন হয়েছে এ এলাকার অর্ধেক বাড়ি ও আবাদি জমি। সরেজমিন দেখা গেছে, ভারতের শিশুমারা বিএসএফের সদর দপ্তর সুরক্ষিত করতে একটি বাঁধ নির্মাণ ও তীর প্রতিরক্ষার কাজ করেছে ভারত সরকার। ফলে ব্রহ্মপুত্রের পানি সেখানে বাধা পেয়ে বাংলাদেশের ভূখন্ডে ধেয়ে আসছে। এর একটি চ্যানেল আঘাত হানছে ডিক্রিরচর গ্রামে।
ফলে পানির স্রোতে ভেঙে যাচ্ছে বসতভিটা ও আবাদি জমি। ভাঙন ও বন্যার ঢল থেকে গ্রামটি বাঁচাতে বাংলাদেশের ভূখন্ডের দিকে নেমে আসা একটি খালের উৎসমুখে পাঁচ বছর আগে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়। এটি নির্মাণের পর বাধাপ্রাপ্ত হয়ে ভারতীয় অংশের নো ম্যান্স ল্যান্ড দিয়ে কিছু পানি বাংলাদেশে ঢুকত। তবে এতে তেমন ক্ষতি হতো না।
গত বছরের বন্যায় বেড়িবাঁধটি ভেঙে প্রবল বেগে বাংলাদেশে পানি ঢুকে গ্রামের পর গ্রাম প্লাবিত হয়। এতে ডিক্রিরচর, ইটালুকান্দা, সাটিমারী, কাজাইকাটা,গাছবাড়ি, গয়টাপাড়া, কাউনিয়ারচর, পাড়েরচর, খেতারচরসহ ৩০ গ্রাম ক্ষতির মুখে পড়ে। অচল হয়ে পড়ে যোগাযোগব্যবস্থা। বালুতে ঢেকে যায় বোরো চাষের আবাদি জমি। ফলে এ এলাকার মানুষ আবাদ করতে না পারায় এখন চরম খাদ্যকষ্টে রয়েছে। বাধ্য হয়ে সামর্থ্যবান কৃষকদের অনেকেই কাজের সন্ধানে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ঘর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে।
এদিকে ভাঙনে সীমানা পিলার নিশ্চিহ্ন হওয়ায় এবং ভারতীয় বিএসএফের কড়া টহল থাকায় নিজের জমিতে যেতে ভয় পাচ্ছে কৃষকরা। এ বিষয়ে গ্রামের কৃষক ছিদ্দিক মিয়া বলেন, ‘সীমানা পিলার নাই। তাই জমিতে যাইতে ভয় পাই। কোন সময় বিএসএফের কোপানলে পড়ি তাই নিয়ে চিন্তায় আছি।’
রৌমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী বলেন, ‘দাঁতভাঙ্গার এ বেড়িবাঁধটি এলাকাবাসীর প্রাণের দাবি। কারণ বাঁধটি না দিলে শুধু দাঁতভাঙ্গা নয়, রৌমারী উপজেলা সদরও হুমকির মুখে পড়বে। মাত্র ৫০০ মিটার দীর্ঘ এ বেড়িবাঁধটি দুর্ভোগ থেকে বাঁচাতে পারে কয়েক লাখ মানুষকে।’
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয় জনসাধারণ, চেয়ারম্যান ও বিজিবির পক্ষ থেকে বেড়িবাঁধটি পুননির্মাণের অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখছি। এরপর অনুমোদন ও বাজেট পেলে বাঁধটি পুননির্মাণ করা হবে।’

পুরোনো সংবাদ

কুড়িগ্রাম 7400418113534943945

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item