নীলফামারীতে জেএমবি সদস্য গ্রেফতার

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ১৭ জানুয়ারী॥
নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) ইয়ানতকারী গ্রুপের সদস্য ও শিক্ষক মাধব চন্দ্র রায়ের হত্যাকান্ডের পরিকল্পনাকারী তৈয়ব আলীকে (৬৫) নীলফামারীর কাউন্টার টেররিজম ইউনিট গ্রেফতার করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি/২০১৮ইং) রাতে জেলা শহরের আনন্দবাবুর পুল এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত জেএমবি সদস্য ইয়ানতকারী তৈয়ব আলী নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের তিলাই গ্রামের মৃত আসানততুল্লার ছেলে।
আজ বুধবার দুপুরে নীলফামারীর পুলিশ সুপার জাকির হোসেন খান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, গ্রেফতারকৃত তৈয়ব আলীর বাড়িতে বিভিন্ন স্থানের জেএমবির সদস্যরা এসে গোপনে আশ্রয় নিতো ও বিভিন্ন হত্যাকান্ডের গোপন বৈঠক করতো বলে জানা গেছে। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালের ৯ আগষ্ট সকালে জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মাধব চন্দ্র রায় (৪৫) উপজেলা শহরের বাড়ি হতে ইজিবাইকে করে স্কুলে যাচ্ছিলেন।  এ সময় ওই ইজিবাইকে অপরিচিত আরো চারজন লোক এসে উঠে। ইজিবাইকটি স্কুলের অদুরে ঘাটের পার মমিনুরের ডাঙ্গায় এলে ইজিবাইকে থাকা যাত্রীবেশী জঙ্গীরা  প্রকাশ্যে  মাধব চন্দ্রের পেটে ও মাথা লক্ষ্য করে ২ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এরপর জঙ্গীরা আগে থেকে সেখানে অপেক্ষামান দুইটি মোটরসাইকেল যোগে পালিয়ে যায়। ওই ঘটনায় আহত অবস্থায় শিক্ষক মাধবচন্দ্র রায়কে জলঢাকা স্বাস্থ্য কমপ্লে¬ক্সে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঘটনার ৫ দিন পর ১৪ আগষ্ট রাত সারে ৯টায় ওই শিক্ষকের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর মাধব চন্দ্রের ছোট ভাই রতন চন্দ্র বাদী হয়ে জলঢাকা থানায় একটি মামলা দায়ের করে। মামলাটি পরবর্তিতে সিআইডিতে স্থানান্তরিত হলে সিআইডির তদন্তে ঘটনাটি বের হয়ে আসে। তদন্তের সুত্র ধরে ২০১৬ সালের ২১ মে নীলফামারী ডিবি পুলিশের অভিযানে জেএমবি সদস্য নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা ইউনিয়নের ঘাটেরপাড় এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে তরিকুল ইসলামকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়। সে আদালতে শিক্ষক মাধব চন্দ্র রায়কে হত্যার কথা স্বীকার করে  ১৬৪ ধারায়  জবানবন্দী প্রদান করে। সেখানে তিনি বেশ কয়েকজন জেএমবির সদস্য সহ তৈয়ব আলীর জরিত থাকার কথা প্রকাশ করেছিল। কিন্তু তৈয়ব আলী ঘটনার পর হতে ছিল পলাতক। আদালত তৈয়ব আলীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করে। গোপন সংবাদ পেয়ে দীর্ঘদিন পর মঙ্গলবার রাতে নীলফামারী শহরের আনন্দবাবুর পুল এলাকা হতে তৈয়ব আলীকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তৈয়ব আলী জানায় তিনি পুলিশের চোখ ফাকি দিয়ে তাবলিক জামাতে নাম লিখিয়ে দেশের বিভিন্নস্থানে আতœগোপনে ছিলেন। দীর্ঘদিন পর নিজবাড়িতে ফেরার জন্য মঙ্গলবার রাতে জলঢাকা যাচ্ছিলেন। এ সময় পুলিশ এসে নীলফামারী শহরের আনন্দবাবুর পুল এলাকা হতে তাকে গ্রেফতার করে।
এর পাশাপাশি পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত তৈয়ব আলী ২০১৫ সালের ৩ অক্টোবর রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার আলুটারি গ্রামে জাপানি নাগরিক হোশি কুনিওকে হত্যাকারীদের মধ্যে জেএমবির রংপুর জেলার পীরগাছা উপজেলার আঞ্চলিক কমান্ডার উপজেলার পশুয়া টাঙ্গাইলপাড়ার মাসুদ রানা ওরফে মামুন ওরফে মন্ত্রী (২১)র শ্বশুড়। হোশি কুনিওকে হত্যাকারী যে ৫ জনকে রংপুরের আদালত ২০১৭ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারী ফাঁসীর আদেশ দেয়া হয়েছিল তাদের মধ্যে তৈয়ব আলীর মেয়ে জামাই মাসুদ রানা রয়েছে।
নীলফামারী সদর থানার ওসি বাবুল আকতার জানান আমরা জেএমপির ইয়ানতকারী তৈয়ব আলীকে শিক্ষক মাধব চন্দ্র রায়ের মামলার তদন্তকারী নীলফামারীর সিআইডির নিকট হস্তান্তর করেছি।
নীলফামারী সিআইডি ইন্সপেক্টর মাহাবুব আলম জানান গ্রেফতারকৃত জেএমবি সদস্য তৈয়ব আলীকে জিজ্ঞাসবাদের জন্য আদালতের কাছে ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। আদালত রিমান্ড বিষয়ে সুনানীর দিন ধার্য্য করেছে।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 7291153277090676046

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item