স্বাধীনতার ৪৬ বছর পেরিয়ে গেলেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি মেলেনি সুলতান আলীর
https://www.obolokon24.com/2017/12/fredom.html
ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ
মোঃ শামীম হোসেন বাবু, কিশোরগঞ্জ,নীলফামারীঃ ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করতে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান আলী (৭০) । স্বাধীনতার ৪৬ বছর পেড়িয়ে গেলেও মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি পাননি তিনি । বর্তমানে ভিক্ষা করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তার একটাই চাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেন তাকেঁ মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় অন্তরভুক্ত করেন।
গত বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নের মধ্যরাজিব গ্রামের মৃত খয়ের উদ্দিনের পুত্র সুলতান আলীর নিজের বসতভিটার জমি না থাকায় তিনি ইসমাইল গ্রামে তার শশুর বাড়িতে ছোট্র একটি ছাপড়া ঘরে অবস্থান করছেন। এসময় তাঁর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বাবা আমি ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে সাড়া দিয়ে দেশমাতৃকার টানে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করি। মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে প্রথমে ভারতের কুচবিহার মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে ৬ নং সেক্টরে ২১ দিনের প্রশিক্ষন গ্রহন করে ভারতের কুচবিহার হয়ে বাংলাদেশের পাটগ্রাম , হাতিবান্ধা ও জলঢাকা উপজেলার কৈমারীতে যুদ্ধ করি। ভারতে প্রশিক্ষন গ্রহনের সময় আমাদের প্লাটুন কমান্ডার ছিলেন আব্দুল কুদ্দুস। যুদ্ধকালিন কমান্ডার ছিলেন মাহাতাব সরকার । যুদ্ধকালিন সময়ে তিনি রাইফেল চালিয়ে যুদ্ধ করেছেন। ভারতীয় তালিকায় ২২ নম্বর সিরিয়ালে আমার নাম অন্তরভুক্ত আছে। যুদ্ধ শেষে তিনি নীলফামারীর নটখানায় অস্ত্র জমা দেন। বর্তমানে মুক্তিযোদ্ধা সুলতান তিন কন্য সন্তানের বাবা। বড় ও ছোট মেয়েকে এলাকাবাসীর সহযোগিতায় বিয়ে দিয়েছেন। মেজ মেয়ে প্রতিবন্ধি হওয়ায় তিনি স্ত্রীকে সাথে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ভিক্ষা করে জীবন চালান। গত ২০১৪ সালের ৫ জুলাই কিশোরগঞ্জ উপজেলাকে ভিক্ষুকমুক্ত ঘোষনার পর তিনি কখনো বাহিরে গিয়ে ভিক্ষা করেন আবার কখোনো অন্যের জমিতে শ্রমিকের কাজ করেন। বৃদ্ধ বয়সে তাঁকে কেউ শ্রমিক হিসাবে কাজে নিতে না চাওয়ায় ভিক্ষাই তাঁর একমাত্র পেশা। যুদ্ধকালিন সময়ে তাঁর সহযোদ্ধা ছিলেন, সামছুল হক, জফুর আলী, আব্দুল মজিদ।
মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ, সামছুল হক,জফুর আলী বলেন, আমরা যুদ্ধে অংশগ্রহনের সময় রাজাকারদের নজরে পড়েছিলাম । রাজাকারদের হাত থেকে বাঁচতে তিস্তা নদীতে ঝাঁপ দিয়েছিলাম।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হাবিবুর রহমান হাবুল বলেন, সুলতান আলী একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা কোন কারনে আগে তাঁর নাম তালিকায় আসেনি তা আমার জানা নেই। কিন্তু বর্তমানে নতুন করে ২০১৭ সালে মুক্তিযোদ্ধা যাচাই বাছাই কমিটি তাঁর নামটি গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে।