নীলফামারীতে লাল সবুজের ফেরিওয়ালা

ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়, নীলফামারী ১৬ ডিসেম্বর॥ 
১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস। ৪৬ বছরের বাংলাদেশের সঙ্গে জন্ম হয়েছিল দেশের লাল সবুজ ঘেরা জাতীয় পতাকার। প্রতি বছর বিজয় দিবসে বাঙালীর জাতীয় জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিন। আর এই দিনটি ঘিরে জাতীয় পতাকা হয়ে ওঠে ঐক্যের প্রতীক, আবেগের বহির্প্রকাশ। এ যেন আতœার টান। চারদিকে লাল-সবুজের ফেরিওয়ালাদের পথচলায় উড়ছে বিজয়ের নিশান, যেন ভিন্ন পরিবেশ।
বিজয়ের ডিসেম্বর এলেই বাঙালীর মনেপ্রাণে জেগে ওঠে দেশাত্ববোধ। লাল-সবুজের ভালবাসায় বর্ণিল হয়ে ওঠে সবকিছু। শুধু জাতীয় পতাকা নয়, পোশাক পরিচ্ছদেও দেখা যায় লাল-সবুজের ছোঁয়া। আমাদের স্বাধীনতার প্রতীক লাল-সবুজে উদ্বেলিত হয়ে পড়ে পুরো জাতি। লাল-সবুজের এ পতাকা আমাদের শেখায় দেশও জনগণের পক্ষে কথা বলা, বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের পরিচিত করে স্বাধীন সার্বভৌম অকুতোভয় জাতি হিসেবে, সাহস যোগায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার।

বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের শুরু থেকেই উত্তর জনপদের নীলফামারীসহ অন্য জেলাশহর, গ্রামগঞ্জের পথে-ঘাটে শুরু হয় লাল-সবুজের পতাকা বিক্রির ধুম। ফেরিওয়ালাদের কাঁধে নানা আকারের জাতীয় পতাকা। যেন ছোট ছোট লাল-সবুজের ভালবাসায় সিক্ত হয়ে জীবন। জাতীয় পতাকার বিক্রির ফেরিওয়ালাদের  পথচলায় বর্ণিল হয়ে উঠেছে পথ-ঘাট। লাল-সবুজের এই ফেরিওয়ালারা এসেছেন কোন দুরের জেলা শহর হতে। হেঁটে হেঁটে বিক্রি করছেন আবেগের লাল-সবুজের পতাকা। লাল-সবুজের পতাকা কাঁধে নিয়ে তারা কেবল জীবিকার পথই বেছে নেননি, এ পেশার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেয়েছে দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি।

১৬ ডিসেম্বরের বিজয় দিবস, ২১ ফেব্রুয়ারির আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সারাদেশে পতাকা বিক্রির ধুম পড়ে যায়। বিশেষ করে উত্তাল মার্চ আর বিজয় দিবসকে সামনে রেখে এলাকা জাতীয় পতাকা ফেরিওয়ালাদের পথচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। গত বছরের তুলনায় এবারে বিজয় দিবস, হানাদার মুক্ত দিবস এবং ছিটমহলসহ উত্তরের জেলাগুলোতে পতাকা বিক্রির ফেরিওয়ালার সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়েছে। শেষ সময়ে বিক্রিও হচ্ছে প্রচুর।

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর থেকে আসা ২১ বছরের ফেরিওয়ালা আনোয়ার হোসেন জানান, পিতা রমজান আলী দিন মুজুর। মা রজিনা ও ৪ বছরের ছোট বোন মনি নিয়ে সংসার। ২১ ফেব্রুয়ারী, ২৬ মার্চ ও ১৬ ডিসেম্বর এই দিবসগুলোতে রংপুর বিভাগের পঞ্চগড়, তেঁতুলিয়া, ঠাকুরগাঁও, বোদা, দিনাজপুর, রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট ও গাইবান্ধা জেলা ও উপজেলায় জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে ঘুরি। এবার নীলফামারী জেলায় পতাকা বিক্রি করছি। এখন পতাকা বিক্রি প্রায় শেষ। বাকি যে পতাকাগুলো রয়েছে তা আগামীকাল ১৬ ডিসেম্বর (শনিবার) বিক্রি করবো।

বিজয় দিবস উপলক্ষে এমনিতেই ছোট-বড়, মাঝারি সাইজের জাতীয় পতাকা প্রচুর বিক্রি হয়। তারা নিজেরাই এ পতাকা তৈরি করেন। বিভিন্ন জাতীয় দিবসের আগে তাঁরা বিভিন্ন মাপের পতাকা তৈরি করে। জাতীয় পতাকা বিক্রি করে তাঁরা যেমন আতœতৃপ্তি পান, তেমনি এই পতাকা তাঁদের সংসারের ভরণপোষণের খরচ যোগায়। ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত শহর-বন্দর, গ্রামগঞ্জের পথে-ঘাটে নানা আকারের লাল-সবুজের পতাকা ফেরি করে বিক্রির পর তারা ফিরে যাবে নিজ নিজ এলাকায়। আবার ২১ ফেব্রুয়ারি আর ২৬ মার্চ এলে তারা ফের বেরিয়ে পড়বে লাল-সবুজের চেতনা ছড়িয়ে দিতে।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 2125095355347706039

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item