অস্ত্র ব্যবসায়ী সামছুলের ক্রেতা সংগ্রহের মূল হোতা মজিদ গ্রেপ্তার ॥ ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর

এস.কে.মামুন

রংপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের জেএম শাখার অফিস সহকারী সামছুল ইসলামের অস্ত্র ক্রেতা সংগ্রহের মূল হোতা মজিদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। রংপুর কোতয়ালী থানার পুলিশ রোববার রাতে তাকে টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল থানার টিলা বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারকৃত আব্দুল মজিদ (৫০) কালিহাতি উপজেলার মৃত হযরত আলীর পুত্র। তাকে সোমবার দুপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হলে আদালত ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। এর আগে অবৈধভাবে অস্ত্রের লাইসেন্স পাইয়ে দিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগে গ্রেপ্তার হয় সামছুল ইসলাম। তিনি আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে।
কোতয়ালী থানার পুলিশ পরিদর্শক মুক্তারুল ইসলাম জানান গত ১২ জুলাই পুলিশ বাদি হয়ে কোতয়ালী থানায় সামছুলের বিরুদ্ধে মামলা করে। গ্রেপ্তারকৃত সামছুল রিমান্ডে থাকা অবস্থায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবান বন্দি দিয়েছে । জবানবন্দিতে ৩’শয়ের বেশি ভুয়া অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়ার কথা স্বীকার করেছেন। প্রতিটি লাইসেন্সের জন্য তিনি ৪ থেকে ৫ লাখ টাকা করে নিয়েছেন বলেও জানিয়েছেন এবং কার কার কাছে অস্ত্র বিক্রি করেছেন তাদের নামও বলেছেন। সামছুলের দেয়া জবানবন্দির ভিক্তিতে মজিদকে গ্রেপ্তার হয়। সামছুল দেশের বিভিন্নস্থান থেকে অস্ত্রেও ক্রেতা সংগ্রহ করে সামছুলের নিকট নিয়ে আসতো। বিনিময়ে সামছুল তাকে কমিশন দিত। পুলিশের করা মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে  ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হলে আদালতের বিচারক কামরুল হাসান ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সামছুল ইসলাম রংপুর ডিসি অফিসের জেএম শাখার অফিস সহকারী হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিভিন্ন এলাকার মানুষের ভুয়া নাম ঠিকানা ব্যবহার করে রংপুরের ডিসি সই জাল করে কয়েক তিন শতাধিক ভুয়া আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স দিয়েছেন । বিষয়টি প্রকাশ পেলে ডিসি অফিসের জেএম শাখায় তল্লাশি চালিয়ে ১৫টি অগ্নেয়াস্ত্রের ভুয়া লাইসেন্স ১১টি আগ্নেয়াস্ত্রের
লাইসেন্সের বিপরীতে নগদ ৭ লাখ ১১ হাজার টাকা, এফডিআর ও ২ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করে। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা অমূল্য চন্দ্র রায় বাদি হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি পরে দুদকে স্থানান্তর করা হলে রংপুর র‌্যারের সদস্যরা গত ৬ জুলাই তাকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। শামসুলকে ৩ দফায় রিমান্ডে নিয়ে পুলিশ এবং দুদক। এছাড়া গত আগস্ট মাসে সামছুলের দেয়া ভূয়া লাইসেন্সের ৫৫টি অস্ত্র, লাইসেন্স, ৬০৩টি কার্তুজ জব্দ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।