শিক্ষকের বিরুদ্ধে বাল্য বিবাহের অভিযোগের পরের বহাল তবিয়তে।

সাইদুজ্জামান রেজা পঞ্চগড়ঃ-
পঞ্চগড় সদর উপজেলার কাজিপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শাহজাহান আলীর বিরুদ্ধে এসএসসি পরিক্ষার্থীকে গোপনে বাল্যবিবাহ করার অভিযোগে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবিতে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। ঘটনার একমাস অতিবাহিত হলেও জেলা শিক্ষা অফিসার দ্রুত কোনো পদক্ষেপ না নিয়ে শোকজের কাগজ পাঠিয়ে অজ্ঞাত কারণে নিরব রয়েছেন। 
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কাজীপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরিক্ষার্থীকে গোপনে ফুসলিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে বিবাহ করেছে একই বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শাহজাহান আলী। বাল্যবিবাহের হাত থেকে রক্ষা করতে এবং শিক্ষকের মুখোশধারী শাহজাহান আলীর শাস্তির দাবিতে বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করেন এবং স্বারকলিপি প্রদান করেন। 
বাল্যবিবাহের মত একটি অপরাধ করার ৩০ দিন অতিবাহিত হলেও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে কোনো আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণ না করায় শিক্ষার্থীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। 
গত ১৫ ই জানুয়ারি এসএসসি ফরমপূরণের নাম করে একটি স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেয় প্রতারক (তিন সন্তানের জনক) শিক্ষক। ১৭১/২০১৭ নম্বর বিবাহের ঘোষনাপত্রে মেয়েটির বয়স প্রকৃত পক্ষে ১৬ বছর হলেও দেখানো হয়েছে ১৯ বছর। বর্তমান সরকার বাল্যবিবাহ থেকে দেশের সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে যে সময় অনাগ্রহ সৃষ্টির পরিবেশ তৈরীতে বিভিন্ন সভা সমাবেশ করে সচেতনতা বৃদ্ধির আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, ঠিক সে সময় একজন শিক্ষকের এমন অনৈতিক বিবাহের এক মাসেও প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিরব ভুমিকায় অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন অসহায় হয়ে পড়েছেন। শিক্ষক শাহজাহানের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষক মামুন মেয়ের অভিভাবককে হুমকি-ধমকি দেওয়ায় তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যাবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয় ওই স্বারকলিপিতে। ঘটনার একমাস অতিবাহিত হওয়ার পর অভিযুক্তের বিষয়ে কি ব্যাবস্থা নেওয়া হয়েছে (মুঠোফোনে) কাজীপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোমকিন আলম মুকুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমার কাছে কোন অভিযোগ নাই, বুঝছেন। প্রধান শিক্ষক হিসেবে কি পদক্ষেপ নিয়েছি এটা কি আপনাকে মোবাইলে বলবো ? বলেন মোবাইলে বলবো। ধরে নেন যে ওরা ডিসি সাহেবের কাছে অভিযোগ করছে ডিসি সাহেব কি করছে না করছে ? বিচার কিন্তু আমার কাছে চায়নি। 
জেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: জহিরুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি পত্রিকায়সহ বিভিন্ন সূত্রে জেনেছি, কোনো অভিযোগ পাইনি তাই ওপরে পরে আমাদের কিছু করা ঠিক হবে না। 
গত বুধবার (১৫মার্চ) জেলা শিক্ষা অফিসার শঙ্কর কুমার ঘোষ জানান, এ বিষয়ে সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার অভিযুক্ত শিক্ষককে শোকজ করেছেন। শোকজের কপির জন্য তিনি তাৎক্ষণিক সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে ফোন দেন।
শনিবার (১৮মার্চ) বিকেলে সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো: বোরহান উদ্দীন (মুঠোফোনে) বলেন, আমি ওই শিক্ষককে শোকজ করেছি। তার বিরুদ্ধে বাল্যবিবাহের অপরাধে পদক্ষেপ নিতে পারেন উপজেলা প্রশাসন অথবা ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি। আমি বর্তমানে ছুটিতে আছি, অফিসে এসে এ বিষয়ে কথা বলবো।
কাজী পাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ জাহিদুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পাইনি, বিভিন্ন সূত্রে জেনে ওই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বাল্যবিবাহের ঘটনায় আমাদের অভিভাবক হিসেবে জেলা প্রশাসক মহোদয়কে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে বিষয়টি তিনিই দেখবেন। বাল্যবিবাহের ঘটনায় সাধারনত উপজেলা প্রশাসন ব্যবস্থাগ্রহণ করে থাকেন।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক অমল কৃষ্ণ মন্ডল জানান, স্বারকলিপি গ্রহণ করে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রেরণ করা হয়েছে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য। সব বিষয়ে আমরা সরাসরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারি না।

পুরোনো সংবাদ

পঞ্চগড় 4544870109850033956

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item