বাল্য বিয়ে দমাতে পারেনি বর্নার জীবন

মোঃ শামীম হোসেন বাবু,কিশোরগঞ্জ(নীলফামারী)প্রতিনিধিঃ 
বাল্য বিয়ে যে একটি অভিশাপ তার বাস্তব প্রমাণ নীলফামারী জেলার কিশোরগঞ্জ উপজেলার গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের পশ্চিম দলিরাম বৈদপাড়া গ্রামের সবুজ আলীর স্কুল পড়–য়া মেয়ে বর্না আক্তার (১৬)। বাল্য বিয়েও দমাতে পারেনি তাঁকে। সে ২০১৬ সালের জে এস সি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পেয়ে সবাইকে তাঁক লাগিয়ে দিয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, বর্না আক্তার ২০১২ সালে শরীফাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পি এস সি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ ৫ পেয়ে উর্ত্তীণ হয়ে শরীফাবাদ দ্বি মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে  যষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়। কিন্তু স্কুলে পড়াশুনা করার সময় বাঁধ সাধে তাঁর আপন  ফুঁফাতো ভাই পুর্ব দলিরাম চম্পাফুলপাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে সাদ্দাম হোসেন (২২) । সে বর্না আক্তারকে স্কুলে যাতায়াতের সময় প্রায় উত্যাক্ত করতো। বর্না আক্তার বিষয়টি তার বাবা মাকে জানালে তার বাবা সবুজ আলী তার বোন মুক্তা বেগমকে জানায়। মুক্তা বেগম তার ছেলে সাদ্দামের সাথে বর্নার  বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু বর্নার বাবা দিনমজুর হওয়ায় ও ৪ মেয়ে এক ছেলেকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করায় তার প্রস্তাবে রাজী হয়। কিন্তু বর্না বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায়, বর্নার মতামত উপেক্ষা করে  কাজী  ভুয়া কাবিননামা মুলে ১ লাখ ৫ হাজার টাকা দেন মোহর ধার্য করে ২০১৩ সালে  সপ্তম  শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় তার বিয়ে হয় । বিয়ের পরে তার কোল জুড়ে আসে একটি পুত্র সন্তান। কিন্তু অল্প বয়সে বিয়ে হওয়ায় সন্তানটি প্রতিবন্ধী হয়। এদিকে স্বামীর দৈহিক চাহিদা পুরন করতে না পাড়ায় তার উপরে নেমে আসে নির্যাতন । তাই স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ও ভুয়া কাবিননামার কারনে এবং স্বামীর ভয়ে কোন আইনি ব্যাবস্থা না নিয়ে বর্না ২০১৫ সালে তার স্বামীকে তালাক দেয়। স্বামীকে তালাক দিয়ে ২০১৬ সালের জে এস সি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে গোল্ডেন জিপিএ ৫ পায়। সে বর্তমানে শরীফাবাদ স্কুল এ্যান্ড কলেজে নবম শ্রেনীতে ভর্তি হয়েছে। তার রোল নম্বর (৪৮) কিন্তু অর্থাভাবে তার লেখাপড়া করা খুব কঠিন হয়ে পড়েছে।
বর্না আক্তার জানায়, আমার মত কেউ যেন বাল্য বিয়ের স্বীকার না হয় । আমি যেন পড়াশুনা করে বাল্য বিয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাড়াতে পারি সে জন্য সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
গাড়াগ্রাম ইউনিয়নের নিকাহ রেজিষ্টার হাইয়ুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন আমি ওই মেয়ের বিয়ে রেজিষ্ঠি করিনি। কিন্তু তালাকনামা কিভাবে করলেন জানতে চাইলে তিনি বলেন এলাকাবাসী হিসাবে তালাকের ব্যাবস্থা করে দিয়েছি যাতে করে দুটি পরিবারের মধ্যে কোন মামলা ঝামলা না হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম মেহেদী হাসানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের হাতে নেই । তবে সে মামলা করতে চাইলে আমরা তাঁকে সহায়তা করতে পারব। ভুয়া নিকাহনামার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাজীর বিষয়টি জেলা রেজিষ্ঠার দেখে ।
জেলা রেজিষ্ঠার আব্দুস সালাম প্রমানিকের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ওই কাজীর বিরুদ্ধে মেয়ে পক্ষ অথবা অন্য কেউ লিখিত অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 4568425671054408415

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item