সৈয়দপুরের তিন প্রার্থীর নির্বাচনী ইশতেহার

বিশেষ প্রতিনিধি,সৈয়দপুর থেকে ফিরে॥
সৈয়দপুর পৌরসভা নিবাচনে ভোটাররা তাদের আগামী দিনের পৌর মেয়র নির্বাচনে খুব হিসাব নিকাশে পড়েছে। বিগত দিনে অনেকে অনেকভাবে আশারবানী শোনালেও কাজের কাজ কিছুই করেনি।ফলে শহরটি দুর্বিষহ যানজট, নর্দমা উপচে পড়ে নোংরা পানি, বৈদ্যুতিক খুঁটিতে বাল¡ নেই, রাস্তার পাশে আবর্জনার স্তুপ,এই তো সৈয়দপুর পৌরসভা। হতাশ কণ্ঠে নিজ পৌরসভার এ রকম চিত্রই তুলে ধরেছেন নীলফামারীর সৈয়দপুর পৌরসভার একাধিক ভোটারগণ।
৭১ এরপর থেকে অবাঙ্গালীদের বসবাস ক্যাম্প গুলোর কোন আধুনিকতার ছোঁয়া ছিলনা। অথচ পৌর ভোটের সময় তাদের ব্যবহার করা হয় কথার ফুলঝুড়ি দিয়ে। কিন্তু এবার আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়েছেন। অপর দিকে বর্তমান মেয়র বিএনপির প্রার্থী বিগত সময়ের মতো এবারো সৈয়দপুরকে আধুনিক শহরে পরিনত করার ঘোষনা দিয়েছেন।
তবে সচেতন ভোটার থেকে উর্দুভাষীরা এবার ভোট প্রদানে অত্যান্ত বিচ্ছক্ষনের পরিচয় দেবেন বলে অনেকে ধারনা করছেন। 
নি¤েœ নৌকা ও ধানের শীষ প্রতীক প্রার্থীদের নির্বাচনী ইশতেহার তুলে ধরা হলো।
আঃ লীগের মেয়র প্রার্থীঃ-আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী অধ্যাপক সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন দলের নৌকা প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তাঁর নির্বাচনী ইশতেহারে ১১ দফা উন্নয়ন প্রতিশ্রুতির মধ্যে অন্যতম ইস্যু হচ্ছে অবাঙ্গালীদের বসবাস প্রতিটি ক্যা¤েপ আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা ও   রেলওয়ে জমির মালিকানা সমস্যা দুরিকরন। এই প্রার্থী বলেছেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা সৈয়দপুরের উন্নয়ন দেখতে চান। তাঁর আগ্রহে মেয়র পদে আমাকে দলের মনোনয়ন দিয়েছেন। আমি বিজয়ী হলে আমার প্রথম কাজ হবে মার্কেট নিয়ে রেল ও পৌর সভার যে বিরোধ রয়েছে তা সমাধান করে রেলওয়ে জমির মালিকানা ব্যবসায়ীদের দেয়া এবং বাস্তুহারাদের রেলওয়ের পতিত জমিতে পুনর্বাসন করা।
তিনি ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেন, অতীতে এই ইস্যু নিয়ে রাজনীতি হয়েছে। কিন্তু জয়ী হয়ে তাঁরা কেউ সমস্যার সমাধান করেননি। এ নিয়ে আমি রাজনীতি করতে চাই না। আমি বিজয়ী হলে প্রথমেই এই সমস্যার সমাধান করবো।  এ নিয়ে সরকারের উচ্চ মহলে কথা হয়েছে, তারা মালিকানা সমস্যা সমাধানে আশ্বাস দিয়েছেন। আশাকরি এবার সৈয়দপুরবাসী আশাহত হবে না।
আওয়ামী লীগের এই মেয়র প্রার্থী তার প্রতিদ্বন্দ্বি বিএনপির প্রার্থীকে ইঙ্গিত করে বলেন, বর্তমানের মেয়র তিনবারের মেয়র ছিলেন, কিন্তু পৌর সভার জন্য কোন কিছুই করেননি। এবার জনগণ তার রাজনীতির ফাঁদে পা দেবে না, বরং জনগণ এই নির্বাচনে তাকে প্রত্যাখান করবে। শহীদ পরিবারের সন্তান মেয়র প্রার্থী অধ্যাপক সাখাওয়াৎ হোসেন খোকন উন্নয়ন বঞ্চিত সৈয়দপুর শহরের উন্নয়ন এবং নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধির জন্য  তার উন্নয়ন ইস্যুর মধ্যে রয়েছে গরীব ও মেহনতি মানুষের জন্য চিকিৎসা সেবা প্রদান, সকল ওয়ার্ডের ড্রেন, স্যানিটেশন, বিশুদ্ধ পানি ও লাইটিং ব্যবস্থা শতভাগ নিশ্চিত করা, গরীব দুঃখী মানুষের সন্তানদের পড়াশুনার জন্য একটি আধুনিক পৌর বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা, বিনোদনের জন্য আধুনিক পার্ক এবং খেলাধুলার জন্য আধুনিক স্টেডিয়াম প্রতিষ্ঠা করা, যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে এনে যানজট মুক্ত শহর গড়ে তোলা। এছাড়াও দীর্ঘদিনের সমস্যা ট্রাক, পিকআপ-মাইক্রোবাস ও কোচ স্ট্যান্ডের জন্য আলাদা টার্মিনাল নির্মাণ এবং অবাঙ্গালীদের বসবাস প্রতিটি ক্যা¤েপ আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা। তার অন্যতম আরও দুই ইস্যু হচ্ছে শহরের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী ও মাদক মুক্ত করাসহ সকল ক্ষেত্রে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় করে অন্যায় অপরাধ কঠোরভাবে দমন করা হবে। তিনি অবাঙ্গালী ভোটার উদ্দেশ্যে বলেন, অবাঙ্গালীদের নিয়ে কিছু ব্যাক্তি আপনাদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে রাজনীতি করে ফায়দা লুটছে। আমার কাছে অবাঙ্গালী বলে কিছু নেই, আমরা সবাই বাংলাদেশী। আপনারা নির্ভয়ে সব অধিকার ভোগ করবেন। আমার এবং আমার দলের পক্ষ থেকে আমরা আপনাদের পাশে আছি। তিনি নাগরিক সুবিধা বৃদ্ধিতে প্রতিটি ওয়ার্ডে কাজ করবেন বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। তিনি ইশতেহারের প্রতি ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে উন্নয়নের পক্ষে নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানান।

বিএনপি মেয়র প্রার্থীঃ- বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থী ও বর্তমান পৌর মেয়র অধ্যক্ষ আমজাদ হোসেন সরকার আগামী পঞ্চবার্ষিকী উন্নয়ন পরিকল্পনায় ৩০টি উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়নের অঙ্গীকার নিয়ে চতুর্থবার মেয়র পদে প্রার্থী হয়েছেন।   বিগত ৫ বছরে তার নেতৃত্বে পৌর পরিষদ অসংখ্যক উন্নয়নমূলক কাজ শেষ করেছে। অন্যান্য উন্নয়নমূলক কাজও চলমান রয়েছে। যা অচিরেই শেষ হবে। তিনি বলেন, বিগত দিনে দেশে অস্থিরতা থাকলেও সৈয়দপুর ছিল শান্ত। সৈয়দপুর শহরে কোন বিশৃঙ্খলার ঘটনা ঘটতে দেয়া হয়নি। শান্তি বজায় রাখতে আমার সর্বাত্বক চেষ্টা ছিল। আগামীতে নির্বাচিত হলে শহরে কোন বিশৃংখলা হতে দেয়া হবে না। মেয়র প্রার্থী আমজাদ বলেন সৈয়দপুর পৌরসভার আয় বৃদ্ধি করে নাগরিক সেবা এবং সৈয়দপুরকে উন্নয়নের মাধ্যমে ঢেলে সাজাতে এবং তা বাস্তবায়নে তিনি প্রার্থী হয়েছেন। এ জন্য পঞ্চবার্ষিকী উন্নয়নে তার রয়েছে একাধিক পরিকল্পনা। তিনি বলেন, যানজট মুক্ত শহর গড়তে শহরের অদুরে ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ, কোচের যাত্রীদের সুবিধার্থে স্টেডিয়ামের সামনে মালিক সমিতির নিজস্ব জায়গায় কোচস্ট্যান্ড গড়ে তোলা হবে। এতে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া যাত্রীদের সুবিধার্থে বর্তমান বাস টার্মিনালকে নতুন আঙ্গিকে তৈরী করা হবে। পৌরবাসীর মাঝে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ব্যবস্থা করা হবে। শহরের প্রধান প্রধান সড়কের পাশে ফলজ, বনজ ও ওষুধী গাছ লাগিয়ে দুষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন ভবিষ্যতে পৌর এলাকার সকল রাস্তা ঘাট, সংস্কার নির্মাণ, পুনঃনির্মাণসহ কাঁচা রাস্তা পাকাকরণ, পৃথক স্ট্রীট লাইট লাগিয়ে শহরকে আরও আলোকিত করা ছাড়াও শহর রক্ষা বাধ মজবুতকরণ, নতুন ফল মার্কেট স্থাপন করা হবে।  তিনি বলেন, দুস্থ মেধাবীদের শিক্ষা গ্রহণে পৌরসভার পক্ষ থেকে স্কুল ও কলেজ প্রতিষ্ঠা ছাড়াও শহরের বাইরে (পৌর এলাকায়) চিত্ত বিনোদনের জন্য শিশুপার্ক নির্মাণ এবং পৌর আয় বৃদ্ধিতে পৌরসভার নিজস্ব জমিতে আধুনিক বাজার নির্মাণ করা হবে। নির্মাণ করা হবে আধুনিক পৌর কমিউনিটি সেন্টার। শহরের আয়তন হিসেবে পরিচ্ছন্নকর্মী কম। তাদের সংখ্যা বাড়িয়ে এবং পর্যাপ্ত যানবাহন দিয়ে ময়লা আবর্জনা পরিস্কার করে সৈয়দপুরকে পরিচ্ছন্ন নগরী হিসেবে গড়ে তোলা হবে। আমজাদ বলেন, সরকারি-বেসরকারি সংস্থার সাহায্য নিয়ে ক্যা¤পবাসীদের উন্নত আবাসন তৈরী করা হবে। তিনি বলেন, পৌরসভার সার্বিক কর্মকান্ড ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জনগণের সামনে উপস্থাপন করা হবে। নেয়া হবে সকল পরামর্শ। আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, শহরের সকল জলাশয় দখল হয়ে গেছে। সেসব দখলকৃত জলাশয়, পানির হাউস উদ্ধার করে মানুষের জানমাল রক্ষার জন্য সচল করা হবে। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের সাথে চুক্তি করে শহরে অগ্নি নির্বাপনে পানির লাইন চালু করা হবে। আমজাদ বলেন, কারও বিরুদ্ধে বিষেদগার নয়, জনগণ সকল ক্ষমতার মালিক। তারা যদি আমাকে মেয়র নির্বাচিত করেন তাহলে আমার প্রতিশ্রুতির সকল কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করবো ইনশাহআল্লাহ।

জাপার মেয়র প্রার্থীঃ-জাতীয় পার্টির (জাপা) মনোনীত মেয়র প্রার্থী জয়নাল আবেদীন উন্নয়নের ১৫টি প্রতিশ্রুতি তুলে ধরে পৌর, নির্বাচনে ভোটারদের ভোট প্রার্থনা করছেন। দলের দলীয় প্রতিক লাঙল নিয়ে পৌর সভার পাড়া মহল¬া চষে বেড়াচ্ছেন। তার পক্ষে জন সমর্থন আদায়ে ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পথ সভা, ঘরোয়া বৈঠক ও পায়ে হেটে ভোটারের দোয়া চাইছেন। পথ সভায় তিনি ২০০ একর অপ্রয়োজনীয়
রেলওয়ে ও সরকারী খাস জমি পৌর সভার কতৃত্বে নিয়ে শহর উন্নয়নে মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্র“তি ব্যক্ত করছেন। তার ঘোষিত অন্যতম প্রতিশ্র“তির মধ্যে কোন কিছুই বাদ পড়ছে না। সর্বক্ষেত্রে উন্নয়নের বাস্তবায়নযোগ্য চিত্র তুলে ধরে নগরবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার প্রস্তাবিত কর্মযজ্ঞের অন্যতম অঙ্গীকার হচ্ছে শহরের এলাকার পরিধি বাড়িয়ে শহর উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ, যানজট নিরসণ রেলওয়ে ঘুমটিতে ফ্লাইওভার নির্মাণ, বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ, সমভাবে সকল ওয়ার্ডের নাগরিক সুবিধা বাড়ানো, হাতিখানা ও বানিয়াপাড়ার মধ্যে আরও একটি রেল ক্রসিং প্রতিষ্ঠা করে সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং মাষ্টার প¬ান তৈরী করে সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা। পৌর নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বিতা তার দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারের ভোটারদের উদ্দেশ্যে ওই প্রতিশ্র“তির কথা জানান। তিনি শহর উন্নয়ন পরিকল্পনা স¤পর্কে বলেন, পৌর সভার আওতায় এখন মাত্র ২৫ একর জমি রয়েছে। অথচ গোটা শহরে রেলওয়ের অপ্রয়োজনীয় এবং সরকারী খাস জমি রয়েছে। নির্বাচিত হলে আরও ২০০ একর জমি পৌর সভার আওতায় মার্কেট গড়বেন এবং নতুন নতুন সড়ক গড়ে তুলবেন। এতে শহর সম্প্রসারণ হবে এবং গড়ে তোলা হবে বিনোদন পার্ক। যানজট নিরসনে ওয়ানওয়ে সড়ক চালু করা হবে এবং দুই ঘুমটিতে ফ্লাইওভার নির্মাণ করা হবে। মাষ্টার প¬ান করে সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঢেলে সাজানো হবে। দুস্থ মানুষের জন্য শহরের পশ্চিম প্রান্তে হাসপাতাল রয়েছে। তাই পূর্ব প্রান্তে পৌরসভা পরিচালিত কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হবে। এতে দুস্থরা সামান্য টাকায় চিকিৎসা নিতে পারবেন। এর সঙ্গে রোগী বহনে এ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস চালু করা হবে। আধুনিক ব্যবস্থাপনায় আবর্জনা পরিস্কারসহ পরিচ্ছন্ন শহর গড়ে তোলা হবে। উন্নয়ন বঞ্চিত ওয়ার্ডে রাস্তাঘাট ও ড্রেনের উন্নয়নে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়া হবে। প্রথম শ্রেণির এ পৌর সভায় প্রথম শ্রেণির কোন নাগরিক সুবিধা নেই। নাগরিকদের পরিপূর্ণ নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করা হবে। প্রতিটি ওয়ার্ডে সড়ক বাতির ব্যবস্থা করা হবে। এই প্রার্থী তার প্রতিশ্র“তি বাস্তবায়ন করার প্রশ্নে বলেন, জাতীয় পার্টি সরকারে আছে। জাতীয় সংসদ সদস্য তার দলের হওয়ায় প্রতিশ্র“তি বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে না। ভোট সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে কিনা এমন প্রশ্নে তিনি ভোন গ্রহণ নিরপেক্ষভাবে না হওয়ার আশংকা ব্যক্ত করে বলেন, ক্ষমতাসীন দল ও বিএনপি আচরণ বিধি লংঘন করছেন। অভিযোগ দিয়ে কোন ফল মিলছে না। এ অবস্থায় তিনি উদ্বিগ্ন বলে জানান। তিনি সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ এবং আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি মোতায়েনের দাবি জানান। তিনি জয়ের ব্যাপারে শতভাগ আশাবাদী বলে মন্তব্য করেন।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 5866747897007256278

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item