সৈয়দপুরে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী রিমার পাশে “ উন্নয়নে আমরা ক’জন” সংগঠন

তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর  থেকে:

সৈয়দপুরের শারীরিক প্রতিবন্ধী স্কুল ছাত্রী আঞ্জুমান আরা রিমাকে হুইল চেয়ার,শিক্ষা উপকরণ ও আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়েছে। “উন্নয়নে আমরা ক’জন ” নামের স্থানীয় একটি সংগঠনের উদ্যোগে ওই  হুইল চেয়ার শিক্ষা উপকরণ ও  আর্থিক অনুদান দেয়া হয়।
ওই সংগঠনের সদস্যরা গত শনিবার বিকেলে শহরের কাজীহাট এলাকার ভাড়া বাড়িতে গিয়ে প্রতিবন্ধী স্কুল ছাত্রী রিমাকে একটি নতুন হুইল চেয়ারসহ লেখাপড়া বিভিন্ন উপকরণ-সামগ্রী নগদ অর্থ তাঁর হাতে তুলে দেন। এ সময়  সংগঠনের সভাপতি এরশাদ হোসেন পাপ্পু, সাধারণ সম্পাদক করিমুল্লা,সদস্য তারিক, ফিরোজ,লাড্ডান,ডলার,আহমেদ,রাজু, সাজিদ, মোশাররফ মুশাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।  এতে করে খুশীতে চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি প্রতিবন্ধী স্কুল ছাত্রী রিমা। এ সময় রিমার মা সাহেরা বেগমসহ পরিবারের সকল সদস্যেরও হাসিমাখা মুখ পরিলক্ষিত হয়।
শারীরিক প্রতিবন্ধী রিমা সৈয়দপুর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। তাঁর চলাফেরা করার যে হুইল চেয়ারটি  ছিল  সেটি অকেজো হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় প্রতিবন্ধী রিমার মা সাহেরা বেগমের কোলে-পিঠে করে স্কুলে যাওয়া-আসা করছিল। একদিন তাঁর মায়ের কোলে-পিঠে করে স্কুলে যাওয়া আসার এ দৃশ্য চোখে পড়ে “উন্নয়নে আমরা ক’জন” নামের  স্থানীয় একটি সংগঠনের সভাপতি এরশাদ হোসেন পাপ্পুর। ঘটনাটি তাঁর মনে ভীষণ নাড়া দেয়। এতে তিনি মারাত্মক মর্মাহত হন। তিনি প্রতিবন্ধী স্কুল ছাত্রী রিমার স্কুলে যাওয়া-আসার দূর্ভোগের বিষয়টি সংগঠনের সদস্যদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেন। পরবর্তীতে সংগঠনের সদস্যরা রিমা ও তাঁর পরিবারের ব্যাপারে সার্বিক খোঁজখবর নেন। তাঁর পরিবারের দুঃখ-দূর্দশার বিষয়ে জানতে পেরে সংগঠনের সদস্যরা একমত হন প্রতিবন্ধী স্কুল ছাত্রী রিমার পাশে দাঁড়াতে।
রিমার মা সাহেরা বেগম জানান, রিমারা ২ ভাই ২ বোন। তাদের মধ্যে রিমা দ্বিতীয়। রিমার বয়স যখন ৩/৪ বছর তখন কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে সে। সাধ্য অনুযায়ী তাঁর চিকিৎসাও করেন তারা ( বাবা-মা)। কিন্তু তারপরও রিমাকে সুস্থ করে তুলতে পারেননি পরিবার। এর এক পর্যায়ে তাঁর  শারীরিক প্রতিবন্ধিতা দেখা দেয়। তাঁর দুই পা অচল হয়ে যায়। দুই হাতে তেমন জোর পায় না সে তখন থেকে। মেয়ের এমন অবস্থায় মারাত্মক দুশ্চিতায় হতাশাগ্রস্থ পড়েন তারা। সাহেরা বেগম জানান,রিমার বাবা মো. শাহাজাদা আবার বিয়ে করে অন্যত্র থাকেন। ছেলে- মেয়ের খোঁজখবর নেন না। তিনি অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে ছেলেমেয়েদের ভরনপোষন করেন। তারপরও মেয়ের ইচ্ছে পূরণে তাকে স্কুলে পড়াচ্ছেন। অর্থাভাবে ঠিকভাবে পড়ালেখার খরচ যোগাতে পারেন না।
সৈয়দপুর আদর্শ বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের স্কুল শাখার সিনিয়র শিক্ষক নাসিম রেজা শাহ্ জানান,রিমা অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী। আমরা প্রতিষ্ঠান থেকে তার পড়ালেখায় সব ধরনের সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করেছি। তিনি জানান,আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধীদের ব্যবহারের জন্য কোন  র‌্যাম্প ও ল্যাট্রিনের ব্যবস্থা নেই। ফলে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা স্কুলে এসে প্রাকৃতিক কর্ম সারতে ও হুইল চেয়ার ব্যবহার নিয়ে মারাত্মক সমস্যার মধ্যে পড়ে। আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের অনেকবার অবগত করেছি। কিন্তু কোন ব্যবস্থা গ্রহণ হয়নি আজো।
উন্নয়নে আমরা ক’জন সংগঠনের সভাপতি সৈয়দপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. এরশাদ হোসেন পাপ্পু জানান,মানুষ মানুষের জন্য। যে কোন মানুষের আপদে-বিপদে পাশে দাঁড়ানোই মানুয়ের ধর্ম।  আমরা এলাকার কয়েক সমমনা বন্ধু মিলে উন্নয়নে আমরা ক’জন নামের সংগঠনটি দাঁড় করানোর চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। এলাকার অসহায়,দুস্থ ও দরিদ্র মানুষের পাশে সাহায্য-সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দাঁড়ানোই হলো আমাদের সংগঠনের মূল লক্ষ্য,উদ্দেশ্য। সেভাবে আমরা সংগঠনটি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।        

পুরোনো সংবাদ

সমাজ-সংগঠন 2298206022390933900

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item