ফলো আপ অবশেষে ডিমলায় নবম শ্রেনীর ছাত্রের সাথে সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রীর বাল্য বিয়ে সম্পন্ন হলো

আবু ফাত্তাহ্ কামাল পাখি,স্টাফ রিপোর্টারঃ

অবশেষে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার একই স্কুলের নবম শ্রেনীর ছাত্রের সাথে সপ্তম শ্রেনীর এক ছাত্রীর বাল্য বিয়েটি সম্পন্ন হয়েছে। প্রভাবশালীদের হস্তক্ষেপে সোমবার দিবাগত  রাত প্রায় ১টার দিকে দুই লাখ ৯০ হাজার দেনমহরে এই বিয়ে সম্পন্ন করা হয়। অভিযোগ মতে এই বাল্য বিয়েটি বৈধ করতে নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে ছেলে ও মেয়ের বয়স বৃদ্ধি করে বিয়ের উপযুক্ত করা হয়েছিল বলে অভিযোগে জানা গেছে। ছেলের বাড়িতে  গয়াবাড়ি ইউনিয়নের মওলানা সাবেক কাজী ইসমাইল হোসেন ৫ কলেমার মাধ্যমে এই বিয়ে পড়ান।
উপজেলা প্রশাসন ও গয়াবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইবনে ফয়সাল মুনের নিষেধাজ্ঞা থাকায় গয়াবাড়ি ইউনিয়নের  নিকাহ রেজিষ্টাড(বিয়ের কাজী) রোকনুজ্জামান বকুল বিয়েটি কাবিন করতে অস্বীকৃতি জানায় বলে জানা গেছে। একটি নির্ভরযোগ্য সুত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
এলাকাবাসী জানায় নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার গয়াবাড়ি ইউনিয়নের পশ্চিম খড়িবাড়ি গ্রামের ফিরোজ খানের ছেলে পশ্চিম খড়িবাড়ি দ্বিমুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেনীর ছাত্র আব্দুল আজিজের সাথে একই গ্রামের কালা মিয়ার মেয়ে ও একই স্কুলের সপ্তম শ্রেনীর ছাত্রী তাজিন আক্তারের প্রেমের সর্ম্পক ধরে এই বাল্য বিয়ে সম্পন্ন করে এলাকার এক শ্রেনীর প্রভাবশালী ও দালালরা। আর এ জন্য প্রভাবশালী ওই দালালচক্র বাল্য বিয়ে সম্পন্ন করতে ৪৩ হাজার টাকা বখশিস নিয়েছে বলে এলাকায় প্রচার পেয়েছে।
গয়াবাড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইবনে ফয়সাল মুন জানান ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্র্মকর্তা রেজাউল করিমের নির্দেশে আমি ওই বাল্য বিয়ে বন্ধ করতে বলি। সেই সাথে ইউনিয়নের কাজীকে নিষেধ করা হয়।
উল্লেখ যে বাংলাদেশ  সরকারের পক্ষে বাল্য বিয়ে সম্পূনরূপে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে এ জন্য জেলা ও উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে প্রশাসন সহ বিভিন্ন এনজিও সভা সমাবেশ এবং গনসচেতনা বৃদ্ধির কাজ করছে। বিশেষ করে ইউনিফের পক্ষে একটি প্রকল্প চলছে।  এরপরেও কিছু সুবিধাবাধী প্রভাবশালী দালালরা বকশিসের মাধ্যমে বাল্যবিয়ে সম্পন্ন করছে।
বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সী মেয়ের সাথে ২১ বছরের কম বয়সী ছেলের বিয়েকেই বাল্যবিবাহ বলা হয়। ১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে বাল্যবিবাহ বলতে বোঝায়, বাল্যকাল বা নাবালক বয়সে ছেলে মেয়েদের মধ্যে বিয়ে। এছাড়া বর-কনে দুজনেরই বা একজনের বয়স বিয়ের আইন অনুযায়ী নির্ধারিত বয়সের কম হলে অর্থাৎ বিয়েতে মেয়ের বয়স ১৮ বছরের নিচে অথবা ছেলের বয়স ২১ বছরের নিচে থাকলে সেটাও আইনের চোখে বাল্যবিবাহ বলে চিহ্নিত হবে।
১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের  দৃষ্টিতে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এই বাল্য বিয়ের সাথে পিতা-মাতা সহ এই বিয়ের সাথে যুক্ত সকলেই শাস্তি পাবেন। এ ছাড়া আইনে বলা হয়েছে বাল্য বিবাহ একটি বাতিলযোগ্য বিবাহ (শিশু বিবাহকারীর শাস্তি)। ১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ধারা -৪ অনুযায়ী ২১ বছরের বেশি বয়সের কোন পুরুষ অথবা ১৮ বছরের বেশি বয়সের নারী কোন বাল্যবিবাহের চুক্তি করলে, সে ১ মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ড বা ১ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ড হতে পারে (বিয়ে স¤পন্নকারীর শাস্তি)। ১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন, ধারা-৫, অনুযায়ী- কোনো ব্যক্তি কোন বাল্যবিবাহ অনুষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা, পরিচালনা বা নির্দেশ প্রদান করলে তার ১ মাস পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদন্ড বা ১ হাজার টাকা জরিমানা বা তিনি উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন। যদি তিনি প্রমাণ করতে পারেন যে বিবাহটি বাল্যবিবাহ হিসেবে বিশ্বাস করার কোন কারণ ছিল না, সেেেত্র তিনি এই অপরাধের দায় থেকে মুক্তি পেতে পারেন। বাল্য বিয়ের অভিভাবকের শাস্তি হিসাবে ১৯২৯ সালের বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ধারা -৬ অনুযায়ী, যে েেত্র কোন নাবালক কোন বাল্যবিবাহের চুক্তি করে, সেেেত্র ঐ নাবালকের পিতা-মাতা, অভিভাবক যদি উক্ত বিবাহে উৎসাহ দেয়ার কাজ করে অথবা বিবাহ বন্ধ করতে অবহেলার কারণে  ব্যর্থ হয়, তবে ঐ ব্যক্তি ১ মাস বিনাশ্রম কারাদন্ড বা ১ হাজার টাকা জরিমানাসহ উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারেন।

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 3916213345731470017

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item