রংপুরে পীরগঞ্জ হাসপাতালের বড় বাবু ! জামার চেয়ে গেঞ্জিই বড়

হাজী মারুফ রংপুর বুরে‌্যা প্রধান :
পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তিনি বড় বাবু ! পদ তার প্রধান অফিস সহকারি। নাম আবু বক্কর সিদ্দিক। এই বড় বাবুকে নানান পর্ব-তিথিতে কিংবা চাহিবামাত্র উৎকোচ না দিলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে নানা হয়রানির শিকারসহ বদলীও হতে হয়। কোন কোন সময় উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাও বড় বাবুর কাছে অসহায় হয়ে পড়েন। সে অবস্থানও তৈরী করেছেন সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদের ভাগিনাকে (একই পদে পীরগঞ্জ হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন) বদলী করে ওই পদে স্থলাভিষিক্ত হয়ে। ফলে বড় বাবুর সাথে কেউ লাগতে চান না বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে ভুক্তভোগী কর্মকর্তা/কর্মচারীরা জানায়।
এসব অপকর্মের কারণে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাকে ব্যঙ্গ করে বড় বাবু হিসেবেই ডেকে থাকেন। বড় বাবুর অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য বিভাগ, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগ, অন্ত:র্বিভাগ, বহি:র্বিভাগ, এমন কি রোগীদের খাদ্য সরবরাহকারী ঠিকাদারও। অভিযোগের অন্ত নেই বড় বাবুর বিরুদ্ধে। কিন্তু করারও কিছু নেই। তার এ অদৃশ্য খুঁটির জোর কোথায় ?
জানা গেছে, ৫০শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার পরই কাগজে কলমে না হলেও কাজে কর্মে প্রধান সহকারীর (বড় বাবু) অবস্থান। ফলে প্রত্যেকটি বিভাগের দেখভাল করার গুরুদায়িত্ব তার। হাসপাতালের স্বাস্থ্য বিভাগের মাঠ পর্যায়ে ৭০টি পদের বিপরীতে ৩ স্তরে কর্মরত রয়েছেন ৬৩ জন। এরমধ্যে স্বাস্থ্য পরিদর্শক ৪জন, সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক ১১জন এবং স্বাস্থ্য সহকারী ৪৮জন। এছাড়াও হাসপাতালের ডাক্তারসহ অফিস ষ্টাফ রয়েছেন প্রায় ৪০জন। এই সমস্ত কর্মকর্তা/কর্মচারী ছাড়াও এ্যাম্বুলেন্সের চালক, এক্স-রে অপারেটর, পরীাগারের কর্মচারীসহ হাসপাতালের অন্যান্য বিভাগের কর্মরতরা বড় বাবুর ভয়ে সদা তটস্থ থাকেন। কোন ছল ছুতো পেলেই উৎকোচ বসে কর্মরতদের কপালে। এর অন্যথা হলেই মানসিক যন্ত্রনা, হয়রানিসহ বদলীও হতে হয় অনেককে। বড় বাবুর দাবিকৃত মাসিক উৎকোচ প্রদানে অস্বীকৃতি জানার কারণে ২ জন এ্যাম্বুলেন্সের চালককে অন্যত্র বদলী হতে হয়েছে। একই কারণে হাসপাতালের রোগীদের পথ্য সরবরাহের মাসিক বিল উত্তোলন করতে পারছেন না বলে জানান পথ্য সরবরাহের ঠিকাদার। আশরাফুল নামের এক ফার্মাসিষ্টকে দ্বিতীয় শ্রেণীর কোয়ার্টার বরাদ্দ দিলেও বাড়তি উৎকোচক না দেয়ায় তাকেও কোয়াটার ছাড়তে বাধ্য করাচ্ছেন তিনি। কোন প্রশিণের চিঠি আসা মাত্র তার কাছে ধরনা দিতে হয়। যারা আগে ২/৩’শ টাকা পকেটে গুঁজে দেয় তাদের নাম তালিকায় স্থান পায়, অন্যথায় নয়। কোন কোন েেত্র উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকেও বোকা বানিয়ে ছাড়েন তিনি। গত বছর গর্ভবতী মা’দের স্বাস্থ্য সেবা সংক্রান্ত মন্ত্রনালয়ের চিঠি গোপন করে ভূয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে উত্তোলনের চেষ্টা করলে কর্মকর্তার দুরদর্শীতায় তা ব্যর্থ হয়। পরীাগার থেকে প্রতিমাসে মোটা অংকের টাকা তাকে উৎকোচ দিতে হয়। ফলে প্রতিমাসে লাধিক টাকা এভাবে ভাগাভাগি হয়ে যায়। হাসপাতালে নতুন কোন কর্মচারি যোগদান করলে বড় বাবুকে নগদ কিছু সালামী দিতে হয়। এর আগে প্রধান সহকারীর (বড়বাবু) পদে ছিলেন সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদের ভাগিনা আনিছুর রহমান। তাকে সরিয়ে দিয়ে রংপুরের গঙ্গাচড়া হাসপাতাল থেকে পীরগঞ্জ হাসপাতালে বদলী হয়ে এসেছেন রফিকুল ইসলাম ওরফে আবু বক্কর। যে কারণে কথিত বড় বাবুর কাছে হাসপাতালের কর্মকর্তা/কর্মচারিরা অসহায়। তার নির্দেশেই চলেন তারা।
এ ব্যাপারে আবু বক্কর (বড়বাবু)  জানান, অফিসিয়াল দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেয়ায় অনেকেই আমার উপর নাখোশ। তারা আমার বিরুদ্ধে আপনাদেরকে (সাংবাদিকদের) ভূয়া তথ্য প্রদান করছে। আমি তো মতাধর কোন ব্যক্তি না, সামান্য চাকরী করি।

পুরোনো সংবাদ

স্বাস্থ্য-চিকিৎসা 278775895289368115

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item