মায়ের দুধের বিকল্প কিছু নেই, প্রধানমন্ত্রী
https://www.obolokon24.com/2014/12/blog-post_92.html
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন,
অনেকে গুঁড়ো দুধকে বিকল্প দুধ হিসেবে আখ্যায়িত করে থাকেন। কিন্তু মায়ের দুধের বিকল্প বলে কিছু নেই। শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ালে শুধু শিশুর জীবন রক্ষা এবং সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত হয় তাই নয়, বরং কৌটার দুধ আমদানি করতে যে কোটি কোটি বৈদেশিক মুদ্রা খরচ হয়, তারও সাশ্রয় হবে।
৬ আগস্ট বুধবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ-২০১৪ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সব কথা বলেন। তিনি বলেন, আমাদের দেশে বছরে প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকার গুঁড়ো দুধ আমদানি করতে হয়। এর বেশিরভাগই শিশু খাদ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয়। আমরা যদি শতভাগ শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়াতে পারি, এ বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,
ঐতিহ্যগতভাবে আমাদের দেশের মায়েরা নবজাতক শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ান। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এ প্রবণতায় কিছুটা ভাটা পড়েছিল। ২০১০ সাল থেকে এ দিবসটি সরকারিভাবে পালিত হয়ে আসছে। কয়েক বছর ধরে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ জোরেসোরে পালিত হওয়ার ফলে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। শিশুদের মায়ের দুধ খাওয়ানোর হারও বৃদ্ধি পাচ্ছে। গত ৫ বছরে ৬ মাসের কম বয়সী শিশুদের শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার ৪৭ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে বর্তমানে ৬৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। প্রচারণা ও সচেতনতার কারণেই এ সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। গত মেয়াদে ২০০৯ সালে আমি মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ সরকারিভাবে পালনের নির্দেশ দিয়েছিলাম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,
দেশের সকল শিশুকে জন্মের ১ ঘণ্টার মধ্যে শুরু করে ৬ মাস পর্যন্ত শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী জন্ম থেকে ছয় মাস বয়স পর্যন্ত পৃথিবীর সকল শিশুকে শুধুমাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানো হলে বছরে ১৫ লাখেরও বেশি শিশুর অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব। শেখ হাসিনা বলেন,
শিশুদের সুস্বাস্থ্য এবং যথাযথ পুষ্টি নিশ্চিত করা উন্নত জাতি গঠনের অন্যতম প্রধান শর্ত। এ জন্য সরকার স্বাস্থ্য ও পুষ্টি উন্নয়নে অগ্রাধিকার প্রদান করেছে। আমরা ৫ বছর মেয়াদি জাতীয় পুষ্টি সেবাসহ অন্যান্য উন্নয়ন কর্মকান্ড পরিচালনা করে আসছি। শিশু স্বাস্থ্য উন্নয়নে আমরা বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। আমরা ইতোমধ্যেই নবজাতকের স্বাস্থ্য কৌশলপত্র অনুমোদন দিয়েছি। জাতীয় পুষ্টিনীতি ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা মাতৃত্বকালীন ছুটি সবেতনে ৬ মাসে উন্নীত করেছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,
সরকারি-বেসরকারি অফিসে ব্রেস্টফিডিং কর্ণার স্থাপন করা হয়েছে। কর্মজীবী ল্যাকটেটিং মাদার সহায়তা তহবিল থেকে কর্মজীবী মায়েদের ভাতা দেওয়া হচ্ছে। ৬ মাস পর থেকে মায়ের দুধের পাশাপাশি শিশুকে ঘরে তৈরি পরিপূরক খাবার দিতে হয়। এ খাবার যাতে যথাযথ পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যসম্মত হয়, সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখা প্রয়োজন। এ জন্য এ কার্যক্রমকে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জাতীয় পুষ্টি সেবা কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে।
তিনি বলেন,
২০১১ সালে শুরু হওয়া এইচপিএনএসডিপি কর্মসূচি ২০১৬ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্যের উন্নয়নে জরুরি প্রসূতি সেবা, প্রশিক্ষণ, ইপিআইসহ আরও বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।