কম্পিউটারের গতি হবে আলোর সমান।
https://www.obolokon24.com/2014/11/blog-post_32.html
গুগলে কিছু সার্চ দিলে সেই কি-ওয়ার্ড বা প্রশ্নটি সারাবিশ্বে ছড়িয়ে থাকা
সার্ভারে ঘণ্টায় কয়েক কোটি মাইল বেগে ছুটে বেড়ায়। যা আলোর বেগের অনেকটা কাছাকাছি যেখানে আলোর বেগ ঘণ্টায় ৬৭ কোটি ৬ লাখ ১৬ হাজার
৬২৯ মাইল। কিন্তু যে কম্পিউটার থেকে সার্চ করা হচ্ছে তার গতি কিন্তু
এর ধারেকাছেও নেই।
একারণেই একটি তথ্য ইন্টারনেটে দ্রুত
খুঁজে পাওয়া গেলেও ব্যবহৃত কম্পিউটারের ধীরগতির (?) কারণে সময় লাগে।
কিন্তু খুব শিগগিরই এ গতির সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে ওঠার সুখবর
দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ইংল্যান্ডের একদল গবেষক এমন একটি
কম্পিউটারের নকশা তৈরি করেছেন যার গতি হবে আলোর গতির সমান।
গবেষণার প্রধান ইউনিভার্সিটি অব সুরির অ্যাডভান্সড টেকনোলজি
ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. রিচার্ড কারি বলেন, মূলত তথ্য পরিবহনের গতিই এখানে মূল সমস্যা। তারা এ সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে উঠতে ইলেক্ট্রনিক এবং অপটিক্যাল প্রযুক্তি নিয়ে
বিভিন্ন ধাতুর ওপর পরীক্ষা চালাচ্ছেন।
তিনি বলেন, তাদের লক্ষ্য হলো
কম্পিউটারে তথ্য আদান প্রদানের কাজটি করবে ইলেক্ট্রনের বদলে আলো। ফলে আলোর গতিতে তথ্য প্রক্রিয়াকরণ সম্ভব হবে।
সুরি, ক্যামব্রিজ ও
সাউদাম্পটন এই তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা যৌথভাবে এ সমস্যার সমাধান করতে
পেরেছেন। তারা এখন এমন একটি অনিয়তাকার কাচের ডিভাইস তৈরির চেষ্টা
করছেন যা অপটিক্যাল সিস্টেম (আলোক তন্ত্র) ব্যবহার করে কম্পিউটারে তথ্য পরিবহন ও
প্রক্রিয়াকরণ দুটিই করতে পারবে। এটি হচ্ছে- ঠিক
যেমন আলো বাহক হিসেবে ইন্টারনেটে তথ্য পরিবহন করে। যেমন: অপটিক্যাল ফাইবার।
এই গবেষণাপত্রটি গত সপ্তাহে ন্যাচার কমিউনিকেশন সাময়িকীতে
প্রকাশিত হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমান
কম্পিউটারের মূলবস্তু হচ্ছে মাইক্রো প্রসেসর বা সিপিইউ। এটি একটি ক্ষুদ্র চিপ যেখানে তথ্য আদান-প্রদান ও প্রক্রিয়াকরণের কাজটি হয়
অতিক্ষুদ্র ইলেক্ট্রিক্যাল তন্তুর মধ্য দিয়ে।
বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এই তন্তুকে আর ছোট করা সম্ভব হবে না এমন একটা ধাপে আমরা প্রায় পৌঁছে গেছি। ফলে কম্পিউটারের গতি এর চেয়ে আর খুব বেশি বাড়ানো সম্ভব হবে না যদি না নতুন
কোনো কৌশল আবিষ্কৃত হয়। তার মানে হচ্ছে, ইলেক্ট্রিক্যাল প্রসেসরের বদলে অন্য কোনো ডিভাইস উদ্ভাবন ছাড়া বিকল্প নেই।
এ কারণেই বিজ্ঞানীরা কম্পিউটারের তথ্য বাহক হিসেবে আলোর
ব্যবহার নিয়ে অনেক দিন থেকেই চিন্তাভাবনা করে আসছেন। কম্পিউটার বিজ্ঞানে এখন অপটিক্যাল কম্পিউটিং নামে নতুন একটি শাখারই জন্ম হয়েছে।
আশার কথা হচ্ছে, ইংল্যান্ডের ওই গবেষক aদাবি করছেন, আগামী ১০ বছরের মধ্যেই তাদের অপটিক্যাল
কম্পিউটিং সিস্টেম ব্যবহার উপযোগী হয়ে উঠবে। তবে সাধারণ মানুষের হাতে পৌঁছাতে আরো কত সময় লাগবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে
না।