নীলফামারীতে জৈবকৃষিতে অভ্যস্ত হয়ে ৬০কৃষক বিষমুক্ত খাবার গ্রহণ করছেন
স্টাফ রিপোর্টার,নীলফামারী॥ নীলফামারীতে রিসার্স ইনিশিয়েটিভ বাংলাদেশ আয়োজিত ‘ডায়ালগ’ অনুষ্ঠিত হয়। সোমবার(২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলা পরিষদের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ডায়ালগ অনুষ্ঠানে সদর উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের জয়চন্ডি এলাকার ইউনুস আলী নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন বলেন, ২০১৭সাল থেকে আমি বাড়িতে সার তৈরি করে সেগুলো দিয়ে ফসল ফলাই। শাক সবজি থেকে শুরু করে ধান পর্যন্ত। জৈব সারেই উৎপাদিত ফসলই আমরা বাড়িতে সবাই খাই। রাসায়নিক সার ব্যবহার না করার ফলে আমাদের খাবারের ব্যবহৃত উচ্ছিষ্ট নষ্ট হয় না।
একই অনুষ্ঠানে নারী কৃষক আয়েশা সিদ্দিকা জানান, আগে শাক সবজি, মাছের উচ্ছিষ্ট ফেলে দিতাম। এখন আর ফেলে দেই না। গর্ত করা আছে সেখানে সব জমা করি। সেখানে পচেঁ সার হয়। ওইগুলো শাক সবজি ক্ষেতে দেই। বাড়িত বীজ উৎপাদন করি ওইগুলো জমিত লাগে ফসল ফলাই। তিনি বলেন, বিষমুক্ত খাবার খাচ্ছে আমার পরিবার। এরফলে পুষ্টি পাচ্ছি, প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণ করতে পারছি। বাজারের জিনিসতো সব হাইব্রিড। সেগুলোতে আর মন চায় না।
শুধু ইউনুস ও আয়েশা নয় গ্রামটির ৬০কৃষক এখন উৎপাদন করছে বিষমুক্ত শাক সবজি আর ফসল। ২০১৭সাল থেকে প্রশিক্ষণ আর সহায়তা পেয়ে জৈবকৃষিতে অভ্যস্ত হয়ে এখন তারা প্রাকৃতিক খাবার গ্রহণ করছেন।
উক্ত ডায়ালগে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার। এসময় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দীপক চক্রবর্তি, উপজেলা কৃষকলীগের আহবায়ক শফিয়ার রহমান, জেলা ওয়াকার্স পার্টির সভাপতি তপন কুমার রায়, উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল হুদা বক্তব্য দেন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন রিইব এর সহযোগী প্রোগ্রাম অফিসার ইফতেখার আলী এবং রিইব এর গবেষণা সহকারী আবুল ফজল বক্তব্য দেন।
কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, নিরাপদ সবজি বাগান করা হয়েছে প্রতি উপজেলায়। এখানে জৈবসারের ব্যবহার নিশ্চিত করা হয়েছে। এসব বাগানের ফসল বিক্রি করা হচ্ছে। এসব কৃষককে প্রয়োজনীয় সহযোগীতা করছে কৃষি বিভাগ।আমরা চেষ্টা করছি সম্মিলিত ভাবে কৃষকদের উদ্ধুদ্ধ করে বিষমুক্ত সবজি উৎপাদন বাড়ানোর।
রিইব এর সহযোগী প্রোগ্রাম অফিসার ইফতেখার আলী বলেন, ২০১৭সাল থেকে সদরের সোনারায় ইউনিয়নের জয়চন্ডি গ্রামে আমরা গণগবেষণার কাজ শুরু করি। সেখানে ৬০জনকে নির্বাচিত করে জৈবসার তৈরি, জৈখকৃষিতে ফসল উৎপাদনে অভ্যস্ত করি। যার সুফল পাচ্ছি আমরা। এখন সকল শ্রেণী পেশার মানুষকে এগিয়ে এসে জৈবসার ব্যবহার এবং নিরাপদ ফসল উৎপাদনের ব্যাপারে সহযোগীতা করতে হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন নাহার বলেন, সময়ের সাথে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে সরকার। কৃষি বিভাগ নিরাপদ ফসল উৎপাদনে নানা প্রক্রিয়া ব্যবহার করছে। বিশেষ করে প্রাকৃতিক ভাবে উৎপাদন হওয়া শাক শবজি ও ফসল আমাদের জন্য এখন অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।
নীলফামারীতে সনাতন পদ্ধতিতে উৎপন্ন হওয়া শাক সবজি বিক্রির জন্য একটি উদ্যোগ নেয়া হবে যাতে করে সেখান থেকে মানুষ কিনে নিতে পারে। #