তিস্তার নদী ভাঙনের কবল হতে রক্ষা করে স্কুলঘরটি বাঁধে এনে চালু হলো ক্লাশ


নির্ণয়,নীলফামারী॥
নদীভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করে স্কুল ঘরটি সরিয়ে এনে তিস্তার ডানতীর বাধে স্থাপন শেষে স্কুলটি যথারিতি চালু করা হয়েছেরবিবার(১২ সেপ্টেম্বর/২০২১)। আশ্চর্য্যজনক হলেও সত্য এলাকার মানুষজনের ইচ্ছেশক্তি আর স্বেচ্ছাশ্রমের কারনে সরকারি এই স্কুলটির টিনের ঘরগুলো নদী গর্ভে বিলিন হতে রক্ষা করা হয়।

তিস্তা নদীর চর পূর্ব ছাতুনামা। নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ঝুনাগাছ চাঁপানী ইউনিয়নে তার অবস্থান। সেখানে ১৯৯১ সালে ৪৬ শতক জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত পূর্ব ছাতুনামা আমিনপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়। ২০১৩ সালের সরকারি হয় স্কুলটি। করোনা ভাইরাসের পূর্বে ওই স্কুলের শিক্ষার্থী সংখ্যা ছিল ২৫০ জন। বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০৫ জন। ২০২০ সালে করোনা ভাইরাস দেখা দিলে সারা দেশের ন্যায় স্কুলটিও বন্ধ হয়ে যায়। গত বছর থেকে ওই স্থানে তিস্তার ভাঙ্গন শুরু হয়। নদী ভাঙ্গন ধীরে ধীরে চলে আসে স্কুলটির কাছে। এবারের বন্যায় নদীর ভাঙ্গন শুরু হলে স্কুলটি পরে চরম ঝুঁকির  মধ্যে। এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমে স্কুলের টিনের ঘরগুলো খুলে রক্ষা করতে পারলেও স্কুলের জমিটি আর রক্ষা করতে পারেনি। কিন্তু জমি না পাওয়ায় স্কুল ঘরটি কোথাও স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছিল।

সরকার যখন ঘোষনা দিলো ১২ সেপ্টেম্বর দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হবে। ঠিক তখন এলাকাসী সহ ওই স্কুলের শিক্ষকরা নড়েচরে বসেন। 

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান বলেন, ছাতুনামা চরে প্রায় ৩০০ পরিবারের বসবাস ছিল। নদী ভাঙ্গনে পরিবারগুলো এখন বাধে চলে এসেছে। স্কুল খোলার ঘোষনা এলে এলাকাবাসীর সহায়তায় আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে আশ্রয়ণ প্রকল্প সংলগ্ন বাঁধে একটি টিনের দোচালা ঘর তিন ভাগ করে তিনটি শ্রেণিকক্ষ তৈরি করেছি  ৭ দিনের মধ্যেই। শিশুদের মনোবল যাতে ভেঙে না যায় সেজন্য পুরোনো টিনগুলো দিয়ে তিন কক্ষের ঘর তৈরি করছি। কিছু আসবাবপত্র সংগ্রহ ও তৈরি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সরকারের নির্দেশনা মেনে বাঁধের ওপর ঘর তুলে স্কুলের পাঠদান কার্যক্রম শুরু করি রবিবার সকালে। 

স্থানীয় বাসিন্দা বাবু বলেন এলাকাবাসীর স্বেচ্ছাশ্রম ও  স্কুলের শিক্ষকদের প্রচেষ্টায় স্কুলঘরটি আপাতত বাঁধই অস্থায়ীভাবে স্থাপন করে স্কুলটি চালু করা হলো।

বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী মতিয়ার রহমান বলে, আগে আমাদের স্কুল চরে ছিল। এখন বাঁধের ওপরে শুরু হলো। স্কুল খুলে যাওয়ায় আমরা এখানেই ক্লাস করলাম আজ। এই শিশুটি আরও জানায় আমাদের এদিকে এখন করোনা ভাইরাস নেই। আগেও ছিলনা। শুনেছি শহরে ও উপজেলা শহরের লোকজন করোনা ভাইরাস হয়েছিল। আরেক শিক্ষার্থী ময়না বললেন স্কুলে এসে হাত মুখ ধুয়ে হাতে একটা ঔষধ দিয়েছে আর নাক মুখ ঢাকার জন্য পেয়েছি মাস্ক। 

ডিমলা উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এ কে এম সাজ্জাদুজ্জামান জানান, চরের এই স্কুলের মূল জমি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় পাকাকরণের অর্থ  পরে আছে।তিনি জানান, বর্তমানে স্কুলটির জমি নেই, স্থানীয় কোনো ব্যক্তি জমি দান করলে বা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে যদি সরকারি খাস জমি পাওয়া যায় তবে স্থায়ীভাবে ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা করা হবে।#


পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 721877638112224239

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item