শেষ ম্যাচেও অস্ট্রেলিয়ার লজ্জার হার

 


অনলাইন ডেস্ক




বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এই সিরিজ আলাদা জায়গা পেয়ে আছে আগেই। শেষ ম্যাচে নিশ্চিত হয়ে গেল, অস্ট্রেলিয়াও এই সিরিজ সহজে ভুলবে না! হতাশার সফরে তাদের শেষটা হলো বিভীষিকার মতো। বিশ্ব ক্রিকেটের প্রতাপশালী দলটি গুটিয়ে গেল টি-টোয়েন্টিতে নিজেদের সর্বনিম্ন রানে। দাপুটে জয়ে বাংলাদেশ সমাপ্তি টানল অবিস্মরণীয় এক সিরিজের।

৫ ম্যাচের সিরিজের প্রথম ৩ ম্যাচ জিতে আগেই সিরিজ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। চতুর্থ ম্যাচ অস্ট্রেলিয়া জিতলেও আজ পঞ্চম ম্যাচে হেরেছে লজ্জাজনকভাবে। বাংলাদেশের ১২২ রানের জবাবে মাত্র ৬২ রানে গুটিয়ে গেছে তাদের ইনিংস। ফলে ৪-১ সিরিজ জিতে নিয়েছে টাইগররা। শেষ ম্যাচে ৬০ রানে জিতেছে রিয়াদের দল। 


 টস জিতে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভোগে টাইগাররা। নির্ধারিত ওভার শেষে ৮ উইকেটে করেন ১২২ রান। টার্গেটে নেমে ভালো শুরু পায়নি সফরকারীরাও। সাকিবকে পাঁচ ছক্কা মারা ড্যানিয়েল ক্রিস্টিয়ানকে ওপেনিংয়ে নামালেও ভালো করতে পারেননি। নিজের প্রথম দুই ওভারেই গত ম্যাচের জয়ের নায়ক ও দুর্দান্ত ধারাবাহিক থাকা মিচেল মার্শকে ফেরান বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম।

পরে ম্যাকডারমটকে নিয়ে চাপ সামলানোর চেষ্টা করেন অধিনায়ক ওয়েড। কিন্তু সাকিবের দ্বিতীয় বলেই বোল্ড হয়ে ফিরেন ওয়েড। ব্যাট হাতে দুই ছয়ে ২২ বলে করেন ২২ রান। পরের ওভারে ম্যাকডারমটকে ফেরান অধিনায়ক রিয়াদ।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে পুরো ২০ ওভার খেলে  ৮ উইকেট হানিয়ে ১২২ রান সংগ্রহ করেছে টাইগাররা। এরফলে অস্ট্রেলিয়ার টার্গেট দাড়িয়েছে ১২৩ রান। 

বাংলাদেশের ছয় ব্যাটসম্যান দুই অঙ্কে পৌঁছালেও কেউই ইনিংস টানতে পারেননি। ওপেনার নাঈম শেখ ২৩ বলে সর্বোচ্চ ২৩ রান করেন ২৩ বলে। অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ পাঁচে নেমে ১৯ রান করেন ১৪ বলে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৮ রান আসে অতিরিক্ত খাত থেকে। অস্ট্রেলিয়ার নাথান এলিস ১৬ ও ড্যান ক্রিস্টিয়ান ১৭ রানে ২টি করে উইকেট নেন।

সিরিজ খোয়ানোর পর ঘুরে দাঁড়ানোর আভাস দিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। চতুর্থ ম্যাচে জিতে পেয়েছে প্রথম জয়ের স্বাদ। ওই হারের ধাক্কা সামাল দিয়ে জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করতে চায় বাংলাদেশ।  টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে, এখন পর্যন্ত ১০৬টি ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। জয় ৩৭টি। টাইগাররা হেরেছে ৬৭টি ম্যাচে। দু’টি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।

সিরিজে টানা চার ম্যাচে টানা ব্যর্থ ছিলেন সৌম্য সরকার। নাঈম রানের দেখা পেলেও সৌম্য ছিল রানখরায়। চার ম্যাচে তার ব্যাট থেকে আসে সর্বসাকুল্যে ১২ রান। সর্বোচ্চ করেছেন ৮ রান।

পঞ্চম ম্যাচে ওপেনিংয়ে আসেন মেহেদী, নাঈমকে সঙ্গে নিয়ে দুজনের ব্যাটে সিরিজে ওপেনিং জুটিতে সর্বোচ্চ রান তোলে। এর আগে নাঈম-সৌম্যর জুটি থেকে আসে সর্বোচ্চ ২৪ রান। শেষ ম্যাচে ওপেনিং জুটি থেকে এসেছে ৪২ রান।

শুরু থেকেই অজি স্পিনারদের উপর চড়াও হয়ে খেলছেন নাঈম-মেহেদী। আক্রমণাত্মক শুরুর পর ইনিংসের পঞ্চম ওভারে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ওভারের চতুর্থ বলে অ্যাস্টন টার্নারকে মারতে যেয়ে আউট হন মেহেদী হাসান। ১২ বলে ১৩ রান করেন তিনি।

মেহেদীর বিদায়ের সাকিব-নাঈমে দলীয় স্কোর ৫০ পার করে বাংলাদেশ। কিন্তু রানের গতি বাড়াতে গিয়ে আত্নাহুতি দিলেন নাঈম। নবম ওভারে ড্যান ক্রিস্টিয়ানকে মারতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করে ফেলেন এই ওপেনার। ২৩ বলে ২৩ রান করে আউট হন তিনি। যিনি আগের ৪ ইনিংসে করেছিলেন ৩০, ৯, ১ ও ২৮ রান।

সাকিব আল হাসানের কাছে প্রত্যাশা সবসময় বেশিই থাকে। শেষ টি-টোয়েন্টিতেও ছিল। বাঁহাতি ব্যাটসম্যানের শুরুটাও ভালো হলো। কিন্তু টেনে নিতে পারলেন না ইনিংস। সাকিব ফিরেছেন ২০ বলে ১১ রান করে। অ্যাডাম জাম্পার বলে এলবির শিকার হয়ে আউট হয়ে গেছেন তিনি।

 ক্রিজে আসার পর থেকেই ভালো টাইমিং হচ্ছিল মাহমুদউল্লাহর। কিন্তু আলগা শটে ফিরতে হয়েছে তাকেও। অ্যাশটন অ্যাগারকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ১৪ বলে ১৯ রান করেন তিনি।

মাহমুদউল্লাহর আউটের পর টিকতে পারলেন না সৌম্য সরকারও। ওপেনিং থেকে আজ নেমে এসেছিলেন চার নম্বরে। তবে সেখানেও সুবিধা করতে পারলেন না। ড্যান ক্রিস্টিয়ানের বলে টার্নারের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে করেছেন ১৮ বলে ১৬ রান।

রানের গতি বাড়াতে যেয়ে আউট হন নুরুল হাসান সোহান। ১৩ বলে ৮ রান করে এলিসের ডেলিভারিতে ফেরেন তিনি। শেষ ওভারে জোড়া উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ১১ বলে ১০ রান করে স্কুপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে ধরা পড়েন আফিফ। আর দ্রুত রান নিতে গিয়ে কোনো বল মুখোমুখি হওয়ার আগেই আউট সাইফইদ্দিন।

বাংলাদেশ একাদশে দুই পরিবর্তন। আগের ম্যাচের একাদশ থেকে বাদ পড়েছেন শরীফুল ইসলাম ও শামীম পাটোয়ারি। একাদশে ফিরেছেন মোসাদ্দেক হোসেন ও সাইফউদ্দিন।এদিকে অস্ট্রেলিয়া দলেও দুই পরিবর্তন ঘটেছে। জশ হ্যাজলউড ও অ্যান্ড্রু টাইয়ের পরিবর্তে ফিরেছেন অ্যাডাম জাম্পা ও নাথান এলিস।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১২২/৮ (মেহেদি ১৩, নাঈম ২৩, সাকিব ১১, সৌম্য ১৬, মাহমুদউল্লাহ ১৯, সোহান ৮, আফিফ ১০, মোসাদ্দেক ৪*, সাইফ ০, মুস্তাফিজ ০*; টার্নার ২-০-১৬-১, অ্যাগার ৪-০-২৮-১, জ্যাম্পা ৪-০-২৪-১, এলিস ৪-০-১৬-৩, ক্রিস্টিয়ান ৪-০-১৭-২, সোয়েপসন ২-০-১৪-০)।

অস্ট্রেলিয়া: ১৩.৪ ওভারে ৬২ (ক্রিস্টিয়ান ৩, ওয়েড ২২, মার্শ ৪, ম্যাকডারমট ১৭, কেয়ারি ৩, হেনরিকেস ৩, টার্নার ১, অ্যাগার ২, এলিস ১, সোয়েপসন ১*, জ্যাম্পা ৪; মেহেদি ৩-০-২০-০, নাসুম ২-০-৮-২, মুস্তাফিজ ১-০-৩-০, সাইফ ৩-০-১২-৩, সাকিব ৩.৪-০-৯-৪ , মাহমুদউল্লাহ ১-০-৯-১)।

ফল: বাংলাদেশ ৬০ রানে জয়ী।

সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ৪-১ ব্যবধানে জয়ী।

ম্যান অব দা ম্যাচ: সাকিব আল হাসান।

ম্যান অব দা সিরিজ: সাকিব আল হাসান।

পুরোনো সংবাদ

খেলাধুলা 1525050269307576270

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item