দুর্ঘটনায় হারানো দুটি হাত নিয়ে চিলাহাটির এক অসহায় প্রতিবন্দির বেঁচে থাকার আকুতি
এ.আই.পলাশ.চিলাহাটি প্রতিনিধিঃ
নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার ভোগডাবুরী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ড বড় জুম্মাপাড়ার আবদার আলী ও সকিনা বেগমের প্রতিবন্দি ছেলে সিরাজুল (১৮) । চলন্ত ট্রেনের নিচে পরে গিয়ে তার দুটি হাত কেঁটে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে ২৩শে ফেব্রুয়ারী ২০২১ইং সকাল ৭ টার দিকে। তার বাবা গরীব হওয়ায় তড়িৎ গতিতে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেনি। দুটি হাত হারানো সেই প্রতিবন্দি ছেলেকে রাস্তার ধারে শুইয়ে দিয়ে সামর্থবান ব্যক্তিদের দারে দারে ঘুরে ও স্থানীয় লোকজনদের কাছ থেকে সাহায্য সংগ্রহ করে। এলাকার বেশকিছু তরুণ একত্রিত হয়ে সকলের কাছ থেকে চাঁদা তুলে সিরাজুলকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ভর্তি করানোর পর অপারেশন করে সিরাজুলের দুই হাত কেঁটে ফেলতে হয়। ১ মাস ১৫ দিন মেডিকেলে থাকার পর, ছেলের ঔষধের টাকা বহন করতে না পারায় বাধ্য হয়ে সিরাজুলের বাবা সিরাজুলকে বাসায় নিয়ে আসে। সিরাজুলের বাবা আবদার আলীর সাথে কথা হলে তিনি বলেন,“আমার ছেলে প্রতিবন্দি হওয়ায় কোন দুঃখ নেই। আল্লাহ্ আমাকে ৩ পুত্রের জনক বানিয়েছেন, এতেই আমি খুশি। আমার ছেলে প্রতিবন্দি হওয়ায় অনেক বছর ধরে পাবনায় তার চিকিৎসা করে আসছিলাম। শুধুমাত্র এই প্রত্যাশায় যে একদিন সে পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে। আমি অনেক গরীব। কিন্তু, তবুও ছেলের চিকিৎসায় কোন কমতি রাখিনি। এলাকার লোকদের কাছ থেকে চাঁদা তুলে হলেও আমার ছেলের চিকিৎসা করছি। আর এর মধ্যেই তার এতো বড় একটা এক্সিডেন্ট হয়ে গেল। ২৩শে ফেব্রুয়ারী সকালে সিরাজুল খুলনাগামী মালবাহী ট্রেনে ঘুমিয়ে পরেছিল। ট্রেনটি যখন খুলনার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়, তখন হয়ত সিরাজুল ট্রেনের সেই ঝাঁকি সহ্য করতে পারেনি। তাই ঘুমন্ত অবস্থায় ট্রেন থেকে পরে গিয়ে তার দুটি হাত কেঁটে যায়। তড়িৎ গতিতে ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তি করতে পারিনি। এলাকার মানুষদের সাহায্য সহযোগিতায় রংপুর মেডিকেলে তাকে ভর্তি করাই। অপারেশন করে তার হাত দুটি কেঁটে ফেলতে হয়। মেডিকেলের খরচ বহন করতে না পারায় বাধ্য হয়ে তাকে বাসায় নিয়ে আসতে হয়। বাসায় নিয়ে আসার পর এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তার চিকিৎসার খরচ বহন করছি। কিন্তু, কতদিন আর এলাকাবাসীর সাহায্যে চলব। তাদেরও তো সংসার আছে। তবুও যে বিপদের সময় তারা আমায় সাহায্য করেছে, তাতেই আমি অনেক ঋনী। আমি দেশের মানুষদের কাছে একটি অনুরোধ করতে চাই। শুধুমাত্র আমার ছেলের চিকিৎসার জন্য সকলের কাছে আমি ও আমার স্ত্রী অনুরোধ করছি সকলে যেন আমাদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়”।