পীরগাছায় এমপিও ভূক্ত হয়েছেন ভুয়া শিক্ষক

ফজলুর রহমান, পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে ম্যানেজিং কমিটি জানে না। সর্বশেষ এমপিও তালিকা দেখে বিষয়টি জানতে পারে ম্যানেজিং কমিটি। ম্যানেজিং কমিটি ছাড়াই কিভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হলো প্রধান শিক্ষকের নিকট কারণ জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে আসাই ছেড়ে দিয়েছেন গত ২ মাস থেকে। এমনি একটি বিদ্যালয় রংপুরের পীরগাছা উপজেলার পাঠক শিকড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। সরেজমিনে জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিধান চন্দ্র রায় বিদ্যালয়ের যোগদানের পর থেকেই বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছেন। তিনি শুরু থেকেই পকেট কমিটি গঠনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের অর্থ আতœসাতসহ বিভিন্ন অনিয়ম করছেন। ম্যানেজিং কমিটি তার অনিয়মের প্রতিবাদ করলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে একাধিকবার চলমান ম্যানেজিং কমিটি ভেঙে দিয়েছেন। ফলে তার অনিয়ম বহাল তরিয়তে চালিয়ে আসছেন। বিদ্যালয়ের অভিভাক ও এলাকাবাসী তার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে শত শত অভিযোগ সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরে দাখিল করেন। এলাকাবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বিষয়গুলো তদন্তপূর্বক সত্যতা পাওয়া গেলে সংশ্লিষ্ট একাধিক তদন্তকারী কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করলেও অজ্ঞাত কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থায় গ্রহণ করা হয় না। ফলে নিরাশ হয়ে এলাকাবাসী ও অভিভাকগণ তার অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করাই ছেড়ে দিয়েছেন। এমনকি ওই এলাকার অভিভাবকগণ তাদের সন্তানদের ওই বিদ্যালয়ে না পাঠিয়ে অন্য বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে নিরব প্রতিবাদ করছেন। ফলে পাঠক শিকড় বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় দিন দিন শিক্ষার্থী শূন্যসহ শিক্ষা ব্যবস্থা মারাতœক ভাবে ভেঙে পড়েছে। প্রধান শিক্ষক শুরু থেকেই মাসের পর মাস বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকেন না। বাড়িতে বসেই বিদ্যালয়ের হাজিরা খাতা স্বাক্ষর করেন। প্রতিদিনই বিদ্যালয়ের পিয়ন হাজিরা খাতা নিয়ে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে যাতায়াত করেন। তার বিরুদ্ধে এন্তার অভিযোগ থাকলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থাই গ্রহণ করছেন না। ফলে তার দুর্নীতির মাত্রা আরো বেড়ে গেছে। সর্বশেষ এনটিআসিএ কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগে ম্যানেজিং কমিটির ক্ষমতা খর্ব করা হয়। কিন্তু প্রধান শিক্ষক এনটিআরসিএ’র পরিপত্র জারির পূর্বের তারিখ ২০১৫ সালের নভেম্বর মাস দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে গোপনে ম্যানেজিং কমিটি ছাড়াই বিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিষয়ে বিপুল চন্দ্র বর্ম্মন নামে একজনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। যার ইনডেক্স নং ১১৪৪০৭৬। সর্বশেষ এমপিওর তালিকা দেখে ম্যানেজিং কমিটি শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি জানতে পারে। ম্যানেজিং কমিটি ওই শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদসহ প্রধান শিক্ষককে কারণ দর্শাতে বললে প্রধান শিক্ষক গত ২ মাস থেকে বিদ্যালয়ে আসাই ছেড়ে দিয়েছেন। ম্যানেজিং কমিটি ওই শিক্ষকের বেতন ভাতা বন্ধ করে দেন। প্রধান শিক্ষক বিভিন্ন কৌশলে ওই শিক্ষকের বেতন ভাতা দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে
ম্যানেজিং কমিটি ভেঙে দেয়ার পায়তারা শুরু করেন। এজন্য প্রধান শিক্ষক ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্যদের স্বাক্ষর জাল করে পদত্যাগ দেখিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, দিনাজপুর এর চেয়ারম্যানের নিকট চলমান কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের আবেদন করেছেন।
ফলে এলাকাবাসী মনে করছেন পূর্বের মতো এবারও কোন কমিটি প্রতিবাদী হওয়ায় প্রধান শিক্ষক সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ম্যানেজ করে চলমান কমিটি ভেঙে দিয়ে তার নিয়োগকৃত ভুয়া শিক্ষককে বৈধতা দিবেন।
ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি এমদাদুল হক জানান, প্রধান শিক্ষক অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে পূর্বের তারিখ দেখিয়ে গত ০৮/১১/২০১৫ তারিখে কম্পিউটার বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেন। ওই নিয়োগের বিষয়ে আমিসহ ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগণ কিছুই জানি না। পরবর্তীতে এমপিওর কপি দেখে বুঝতে পারি অবৈধ ভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। আমরা সবাই এর প্রতিবাদসহ তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট একাধিক দপ্তরে অভিযোগ করলে প্রধান শিক্ষক বর্তমান কমিটি ভেঙে দিয়ে নতুন কমিটি গঠনের চেষ্টা করছেন।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 8053952804094196208

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item