পঞ্চগড়ে অবৈধ ইটভাটায় নষ্ট হচ্ছে ফসল, রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

মোঃ সাইদুজ্জামান রেজা, পঞ্চগড়: 
অবৈধ ইটভাটা গিলছে উত্তরবঙ্গ অঞ্চলের উর্বর ফসলি জমি। হেক্টরের পর হেক্টর জমির ওপরের স্তর ভাটার বেড়ে যাওয়ায় কমছে জমির উর্বরা শক্তি। কিছু নিম্নমানের কয়লা পোড়ানো হচ্ছে বাকি সবই বিভিন্ন ফলজ ও বনজ গাছের  লাকড়ী, কাঠ ও বাঁশের মোথা পোড়ানোয় বাড়ছে দূষণ। নষ্ট হচ্ছে ফসলের ক্ষেত, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন হাজারও কৃষক, নষ্ট হচ্ছে বনায়ন, হারাচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য। বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের খোলাপাড়ায় এ এস.কে ব্রিক্স (ড্রাম ভাটা) দিব্বি চালিয়ে যাচ্ছে। অধিকাংশ ইটভাটা গড়ে উঠেছে লোকালয়ে। বাদ পড়েনি বিদ্যালয় ও বসতবাড়ীর আঙিনায়। ফসলি জমি উজাড় করে নতুন নতুন ইটভাটা গড়ে উঠছে এ অঞ্চলে। ড্রাম ভাটা ফসলহানি, জমি উর্বরা শক্তি ছাড়াও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে পড়ছে মানুষ। সীমাবদ্ধতার কথা জানিয়ে বছরের পর বছর আইন অমান্য করলেও আইনের আওতায় আনার চেষ্টা নিচ্ছে না জেলা প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্টরা।
তথ্যমতে, বর্তমানে ইট ভাটা ৪০ টির মধ্যে ১৭টির পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র থাকলেও জেলা প্রশাসকের দপ্তর থেকে নিবন্ধন দিয়েছে ২৫ টির।  ইটভাটা কতৃপক্ষ ৮-১০ বছর ধরে নবায়ন ছাড়াই দিব্বি চলছে এ সব ইটভাটা। এতে কিছু অসাধু ব্যক্তি সুবিধা নিচ্ছে আর কর্তৃপক্ষের অবহেলায় কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এ সব অবৈধ ইটভাটা নির্বিঘেœ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। কে কত গুলো ইট পোড়াবে তারও কোন হিসাব নাই কর্তৃপক্ষের কাছে। কর্তৃপক্ষ কে বার বার বিষয়টি নজরে আনলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। ইট প্রস্তুতকরণ ও ভাটা স্থাপন সংক্রান্ত জেলা প্রশাসকের অনুমোদন ছাড়া ভাটা স্থাপন ও ইট পোড়ানো নিষিদ্ধ। এ আইন লঙ্ঘনকারী ০১ বছরের কারাদন্ড অথবা ০১ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবে। কিন্তু পঞ্চগড়ে এ আইন লঙ্ঘন করেই বেশির ভাগ ইটভাটায় ইট বানানো ও পোড়ানোর কাজ চলছে। পঞ্চগড় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, অনাবাদি কিংবা এক ফসলি জমিতে ইটভাটা নির্মাণ করা যায়। কিন্তু পঞ্চগড়ে অধিকাংশ ইটভাটা গড়ে উঠেছে দুই অথবা তিন ফসলি জমিতে। ইট ভাটার বিরূপ প্রভাব পড়ছে এ অঞ্চলের কৃষি ও পরিবেশে। ইটভাটায় কার্বন নিঃসরণের ফলে আবহাওয়ায় বিরূপ প্রভাব পরে ফলে ফসলাদি নষ্ট হয়ে যায়। ইটভাটা থেকে নির্গত ছাই আশপাশের গাছপালা ও ফসলের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে, মানুষসহ গবাদিপশুর ফুসফুসের নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়। ছাই ও বস্তুকণা গাছের পত্ররন্ধ্র বন্ধ করে দিচ্ছে, কার্বন-ডাই-অক্সাইড ও সালফার-ডাই-অক্সাইড মিশ্রিত ছাই ধান, আম, কাঁঠাল, লিচু, শিম, কুমড়া, সরিষাসহ নানাবিধ ফসলের রেণুকে বিনষ্ট করছে। ফলে ফসল উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে যাচ্ছে। পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল মান্নান বলেন, অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেয়াসহ আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

পুরোনো সংবাদ

পঞ্চগড় 5022760480588657424

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item