সৈয়দপুরে দম্পতি হত্যাকান্ড- পুলিশী আতঙ্ক কাটতে এলাকাবাসীকে নিয়ে সচেতনতামূলক সভা

তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
নীলফামারীর সৈয়দপুরের খামারে দম্পতি হত্যাকান্ডের ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে পুলিশী আতঙ্ক কাটেনি। এ ঘটনার তিন দিন পেরিয়ে গেলেও চরম ভয়ভীতি বিরাজ করছে এলাকার মানুষের মধ্যে। আজ(মঙ্গলবার) সরেজমিনে এলাকায় গিয়ে মানুষের সঙ্গে কথা বলে এমন আভাস পাওয়া গেছে। এদিকে, মানুষের আতঙ্ক ও ভয়ভীতি কাটতে এলাকায় সচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, উপজেলার খাতামধুপুর ইউনিয়নের মধুপুর বালাপাড়ায় একটি খামারে নৃশংসভাবে খুন হয় এক দম্পতি। নিহত নজরুল ইসলাম ও সালমা খাতুন হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে গত ২৬ জানুয়ারি রাতের। এ লোমহর্ষক ঘটনার পর এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিশেষ করে এলাকার সংখ্যালঘু (হিন্দু) সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে চরম ভীতির সঞ্চার হয়। ঘটনার পর দিন থেকে পুলিশী হয়রানির ভয়ে রাতে বেলা বাড়ি ছাড়েন এলাকার পুরুষ মানুষ। ফলে রাতে বেলা এলাকাটি একেবাওে পুরুষ শূন্য হয়ে পড়ে। আর চোরের দলের সুযোগ মিলে। রবিবার রাতে এলাকার নিবারণ চন্দ্র রায়ের বাড়িতে চোরেররা হানা দেয়। এ সময় বাড়ির মহিলা সদস্যরা চোরের উপস্থিতি টের পেয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করে। এতে চোরের দল সটকে পড়ে।
এর পর থেকেই পুরুষশূন্য বাড়িগুলোতে চুরির আতঙ্ক দেখা দেয়। এ অবস্থায় এলাকার মানুষ আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েন। ঘটনাটি জানতে পেরে সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এলাকাবাসীর আতঙ্ক কাটতে তাদের নিয়ে এক সচেনতামূলক সভার আয়োজন করে। গত সোমবার বিকেলে উপজেলার ৫ নম্বও খাতামধুপুর ইউনিয়নের মধুপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ওই সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন খাতামধুপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ¦ মো. মজিবর রহমান।
সভায় সৈয়দপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোখছেদুল মোমিন, সৈয়দপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অশোক কুমার পাল, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান মো. আজমল হোসেন, সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. শাহ্জাহান পাশা প্রমূখ।
সভায় বক্তারা দম্পতি হত্যাকান্ডের ঘটনায় এলাকাবাসীকে অহেতুক আতঙ্কিত না হওয়ার কথা বলেন। সেই সঙ্গে এ ঘটনায় এলাকার কোন নিরীহ, নির্দোষ মানুষকে হয়রানির করা হবে না বলেও জানান। আর পুলিশী আতঙ্কে তাদের বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র সরিয়ে না থাকারও আহবান জানান।
বক্তারা আরো বলেন, একটি কুচক্রীমহল এলাকায় পুলিশী গ্রেপ্তারিআতঙ্ক ছড়িয়ে নিজের স্বার্থ হাসিলের সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে। এ ধরনের স্বার্থান্বেষী মহলের অপপ্রচার থেকে সর্তক থাকার আহবান জানানো হয়। পাশাপাশি কেউ এ ধরনের অপপ্রচার করলে তাৎক্ষনিকভাবে তা স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন কিংবা পুলিশকে অবগত করার জন্য বলেন।
গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুরে সরেজিমনে গিয়ে এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিনিধি। যে গবাদি পশু খামারে ওই দম্পতি হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে তার প্রবেশমুখে তামাক ক্ষেত পরিচর্যার কাজ করছিলেন বর্গাচাষী মিন্টু রায় (৪৮)। ইউনিয়নের খামাতপাড়ার ওই চাষী বলেন, ঘটনার পর গত কয়েক দিন পুলিশী ভয়ে তামাক ক্ষেতে আসতে পারিনি। গত সোমবার স্কুল মাঠে এলাকাবাসীকে নিয়ে সচেতনতামূলক সভা হয়েছে। সেই সভায় পুলিশ প্রশাসন থেকে আশ্বাস প্রদান করা হয় নিরীহ,নির্দোষ মানুষকে অযথা হয়রানি করা হবে না। প্রশাসনের ওই আশ্বাস পেয়েই আজ ৩/৪ দিন পর তামাক ক্ষেত পরিচর্যা করতে এলাম।
 অপরদিকে, দম্পতি হত্যাকান্ডের ঘটনাস্থলের পাশে অবস্থিত মধুপুর ইউনাইটেউ নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং মুধুপুর সরকারি প্রাথমিকবিদ্যালয়। এ দুইটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক যথাক্রমে মো. আনোয়ারুল ইসলাম ও অজন্তা সরকার জানান ,ওই ঘটনার পর থেকে তাদের প্রতিষ্ঠানে দুইটিতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি একেবারে কমে গেছে।       

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 8660037604206051614

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item