ব্রহ্মপুত্রের ভয়াবহ ভাঙনে গৃহহীন শতাধিক পরিবার!
https://www.obolokon24.com/2017/04/kurigram_9.html
স্থানীয় প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার মোহনগঞ্জ ইউনিয়নে অসময়ে ব্রহ্মপুত্র নদ ভয়ঙ্কর রূপ ধারন করেছে। এক সপ্তাহে ব্রহ্মপুত্রের থাবায় সবুজ পাড়া ও চরনেওয়াজী গ্রামের প্রায় শতাধিক পরিবার তাদের ভিটেমাটি হারিয়ে পথে বসেছে।শনিবার (৮ এপ্রিল) সকালে ভাঙন প্রতিরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়ে এলাকাবাসী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
সরেজমিনে ভাঙন কবলিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নয়াচর বাজার এলাকায় প্রায় পাঁচ কিলোমিটার জুড়ে ব্রহ্মপুত্র নদের ভয়াবহ ভাঙন চলছে। এরই মধ্যে ভাঙনে বিলীন হয়েছে মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, নয়াচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দিয়ারারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নয়াচর ইসলামী মাদ্রাসা, ইউনিয়ন কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন ও নয়াচরবাজার। দিয়ারারচর, সবুজপাড়া, গোয়ালপাড়া, বাজারপাড়া গ্রামগুলোও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
রাজীবপুর উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস খাতুন জানান, অর্ধশত বছরের পুরাতন নয়াচর বাজারটি এখন আর নেই। এই মুহূর্তে ভাঙন প্রতিরোধে কোনো উদ্যোগ না নিলে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে ইউনিয়নবাসীকে।
নয়াচর গোয়ালপাড়া গ্রামের দিনমজুর চাঁন মিয়া বলেন, ‘মরার নদী আমগর ফকির কইরা দিল। শেষ সম্বল বাড়ির ভিটা তাও নদীতে চইলা গেল। পোলাপান নিয়া এহন মাইনসের জায়গা আছি।’
একই গ্রামের হাফিজা বেওয়া বলেন, ‘থাওনের মতো আমার এডা ঘর ছিল এহন আর নাই। এই নদে আমি ১৫ বার ভাঙনের শিকার হয়েছি। যেডাই ঘর তুলি নদী লইয়া যায়।’
রাজীবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শফিউল আলম জানান, নয়াচর আর কোদালকাটিতে নদী ভাঙনের বিষয়টি জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা সমন্বয় সভায় এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম জানান, মোহনগঞ্জ ইউনিয়ন ও রাজীবপুর উপজেলা বামতীর রক্ষা নামে একটি প্রকল্প অনুমোদন হয়েছে। কিন্তু অর্থ না পাওয়ার কারণে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। প্রায় আড়াই কোটি টাকা ব্যয়ে এতে ৭ কিলোমিটার জুড়ে জিও ব্যাগ ও বোল্ডার ফেলানো হবে।