মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় দাফন চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন
https://www.obolokon24.com/2017/03/panchagar_6.html
মো: সাইদুজ্জামান রেজা পঞ্চগড়:
পঞ্চগড়ে
মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অর্ন্তভ’ক্তি চেয়ে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে
প্রধানমন্ত্রী কাছে আবেদন জানিয়েছে মো: ইব্রাহিম (৭৭) নামের একজন বঞ্চিত
মুক্তিযোদ্ধা। তিনি পঞ্চগড় সদর উপজেলার রামের ডাংগা এলাকার মৃত.কলিম
উদ্দিনের ছেলে। দীর্ঘদিন যাবৎ তিনি বিভিন্ন রোগব্যধীতে আক্রান্ত হয়ে
শয্যাশায়ী অবস্থায় রয়েছেন।
তিনি
জানান, ১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে স্বাধীনতা
সংগ্রামে অংশগ্রহণের অংশ হিসেবে জলপাইগুড়ি জেলার রাজগঞ্জ ট্রেনিং ক্যাম্পে
যান। শিক্ষাগত যোগ্যতা ভালো এবং শারীরিক সামান্য অসুস্থ্য থাকায় সেখানে
তাঁকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের পড়ালেখার জন্য
প্রতিষ্ঠিত দি বেরং বুলগার হুইট নামক বিদ্যাপিঠে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব
দেয়া হয়। এই প্রতিষ্ঠানটি রাম কৃষ্ণ মিশন ও ক্যাথলিক মিশন যৌথভাবে
প্রতিষ্ঠা করেছে। এই প্রতিষ্ঠানে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষাসহ বিভিন্ন
বিষয়ে শিক্ষা প্রদান করা হতো। পাশাপাশি সাপ্তাহিক স্বাধীনতা মঞ্চ উপস্থাপন
করেছি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পরও আমার এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকে। তিনি আরও
জানান, আমি স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহনের জন্য বিভিন্ন এলাকা থেকে যুবকদের
উৎসাহিত করেছি। সে সময় মো: খায়রুল ইসলাম, মো: তজিমদ্দিনসহ প্রথমবার ১২ জন
যুবককে প্রশিক্ষন ক্যাম্পে নিয়ে যাই। তারা প্রশিক্ষন নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে
অংশগ্রহন করেন। তাদের অনেকেই আজ নেই। যুদ্ধে যেতে এবং সাহস যোগাতে একাধিক
কবিতা লিখেছি। সন্ধানী নামক একটি পাক্ষিক পত্রিকায় আমার বেশ কয়েকটি কবিতা
ছাপানো হয়েছিলো। নিয়তির নির্মম পরিহাস ৮৮ সালের বন্যায় আমার সব অর্জন
হারিয়ে ফেলেছি।আমার কুঁড়ে ঘরটি বন্যায় বিলিন হয়ে নদী গর্ভে চলে যায়।
স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন ভারতের রাজগঞ্জ উপজেলায় পরিচালিত শিক্ষা
প্রতিষ্ঠান ও প্রশিক্ষন ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকারীদের নামের তালিকায় আমার
নাম পাওয়া যাবে। আমার প্রচেষ্টায় নির্মিত রামের ডাংগা প্রাথমিক বিদ্যালয়টি
পরবর্তিতে সরকারিকরণ করা হয়েছে। আমি এই স্কুলটির প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক
ছিলাম। তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আমার অনুপ্রেরণায় মুক্তিযুদ্ধে যারা
অংশ নিয়েছিলো তাদের মৃত্যুর পর রাষ্ট্রীয় সম্মানে ভ’ষিত হচ্ছেন। অথচ আমি
হতভাগা মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন না করায় আমার নাম তালিকাভুক্তি
হয়নি। আমি জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডারের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা
করতে গেলে তিনি আন্তরিক হননি। জীবন যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়ার উপহার হিসেবে
রাষ্ট্রীয় বাহিনীর শেষ সম্মানটুকু থেকে আমি বঞ্চিত হতে যাচ্ছি।
মুক্তিযোদ্ধাদের নামের তালিকা সংশোধন ও নতুন নাম অর্ন্তভ’ক্তির সুযোগ পেয়ে
তিনি আনন্দিত। মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম অর্ন্তভ’ক্তির ব্যাপারে জেলা
প্রশাসকের মাধ্যমে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী
শেখ হাসিনা’র হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।
এ
বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বহী অফিসার মো: আবু ওয়াদুদ জানান, এ সংক্রান্ত
আবেদনগুলি আমরা যাচাই-বাছাই করে নির্দিষ্ট সময় অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ
করেছি। তবে পরবর্তিতে হাইকোর্ট কর্র্তৃক এই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত করা
হয়েছে মর্মে একটি চিঠি এসেছে।