বন্ধ হচ্ছেনা চোরাচালান, সৈয়দপুরে ভারতীয় মসলা ও পলিথিন পাচারকারীরা সক্রিয়
https://www.obolokon24.com/2015/11/saidpur_12.html
মো. জহুরুল ইসলাম খোকন, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
সৈয়দপুরে কোনক্রমেই বন্ধ হচ্ছেনা চোরাচালান। ভারত থেকে প্রায় প্রতিদিনই অবৈধভাবে মসলা ও পলিথিন আমদানি করে তা পাচার করা হচ্ছে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। সেই সাথে চোরাইপথে আমদানিকৃত পচা চেরিফল ও তেঁতুলি শহরের রেললাইন সংলগ্ন চাউল মার্কেটের কয়েকটি গোডাউনে গুদামজাত করে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন হাট বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চোখের সামনেই অবৈধ ওইসব মালামাল আমদানি গুদামজাত সহ পাচার করা হলেও কঠোর কোন ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছেনা।
সূত্র জানায়, ভারতের হিলি সীমান্ত পথ থেকে প্রতিদিনই আন্তঃনগর তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনসহ কয়েকটি ট্রেনযোগে সৈয়দপুরে আমদানি করা হচ্ছে কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ভারতীয় জিরা, ছোট এলাচ, বড় এলাচ ও পলিথিন। যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হওয়ায় অবৈধ ব্যবসায়ীরা সৈয়দপুরকে ট্রানজিট হিসেবে বেছে নিয়েছেন। তারা নামমাত্র সৈয়দপুরবাসীর চাহিদা মিটানোর কথা বলে ভারত থেকে আমদানিকৃত ওইসব মালামাল মাইক্রোবাস, পিকআপ, ঢাকাগামী বাস অথবা ট্রাক ভর্তি করে পাচার করছেন দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, চোরাকারবারীরা হিলি সীমান্ত থেকে তিতুমীর এক্সপ্রেস ট্রেনসহ বিভিন্ন ট্রেনে ভারতীয় মসলা ও পলিথিন নিয়ে এসে চোরাকারবারীদের মহাজন নূরু, নাদিম, কাঞ্চন, মুন্না, মোক্তার, ইসতিয়াক ও আব্বাসের কাছে বিক্রি করেন। পরে মহাজনেরা সেগুলি গুদামজাতের পর গভীর রাতে অথবা ভোরে ট্রাক ভর্তি করে পাচার করছেন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কজন চোরাকারবারী জানান, পেটের তাগিদে যারা ভারতীয় সীমান্ত থেকে ৪/৫ বস্তা অথবা ২/৪ মণ ভারতীয় মসলা, পলিথিন, তেঁতুল ও চেরি ফল নিয়ে আসছে শুধু তাদের বেলাতেই অবৈধ ব্যবসা। কিন্তু যারা তাদের মাধ্যমে অবৈধ ওইসব ব্যবসা করিলে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পাচার করে রাতারাতি কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যাচ্ছে। তাদের বেলায় কোন অবৈধ ব্যবসা নয়। মাঝে মধ্যে বিজিবি ও পুলিশ অভিযানে যারা আটক হয় ও জরিমানা করা হয় তারা হলো পেটের তাগিদে চোরাকারবারীরা। আর যারা কোটি কোটি টাকার ভারতীয় মালামাল ক্রয় করে পাচার করছেন তাদের বেলায় কোন অভিযান বা জরিমানা করা হয়না। কারণ মোটা অংকের ঘুষ বাণিজ্য।
শহরের বেশ কজন ব্যবসায়ী বলছেন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার ঘুষ বাণিজ্যের কারণে সৈয়দপুরে ভারতীয় মালামালের শহরে পরিণত হয়েছে।
নূরু সহ উল্লেখিত ওইসব ভারতীয় মালামালের ব্যবসায়ীরা মাত্র কদিন আগেও তিনবেলা খেতে পারতেন না। কিন্তু তারা এখন কোটি টাকার মালিক। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সততাবান কর্মকর্তারা যদি এখনই অভিযান চালান তাহলে ওইসব মহাজনদের গুদাম থেকে শত কোটি টাকারও বেশি ভারতীয় অবৈধ মালামালের সন্ধান পাবেন বলে মন্তব্য বৈধ একাধিক ব্যবসায়ীর।