সৈয়দপুরে ১০০ শয্যা হাসপাতালে চাকবির নামে প্রতারণা : প্রতারক চক্রের সদস্য স্বামী-স্ত্রী গ্রেপ্তার


তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি:

নীলফামারীর  সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ওয়ার্ড বয়সহ বিভিন্ন পদে চাকরির দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় সোমবার রাতে জড়িত প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য স্বামী-স্ত্রীকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করেছেন ভুক্তভোগী প্রতারণার শিকার যুবকেরা। আটককৃতরা হলেন, পঞ্চগড় জেলা শহরের পাটোয়ারীপাড়ার আজিজুল হকের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম জাহিদ (৪০) এবং তাঁর স্ত্রী রেজিয়া সুলতানা ওরফে জান্নাতুল ফেরদৌসী (৩৫)। গত সোমবার দুপুরে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতাল থেকে চাকরির যোগদানপত্র দিয়ে টাকা নিতে এলে আটক করে ভুক্তভোগীরা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আউটসোসিংয়ের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগের জন্য রাজধানী ঢাকায় একটি ভুয়া প্রতিষ্ঠান খোলা হয়। এর নামকরণ করা হয় গোন্ডেল সার্ভিস লিমিটেড। আর এর প্রধান কার্যালয়ের ঠিকানা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ৩৫ দিলকুশা (৪র্থ তলা) মতিঝিল, ঢাকা। প্রতারক চক্র ওই ভুয়া প্রতিষ্ঠানটি খুলে দেশব্যাপী তাদের একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। এ প্রতারক চক্রের সক্রিয় কিছু সদস্য-সদস্যা উত্তর জনপদের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় রয়েছে। আর এ প্রতারক চক্রের দুই সদস্য হচ্ছে পঞ্চগড় শহরের জাহাঙ্গীর আলম জাহিদ এবং তার স্ত্রী রেজিয়া সুলতানা ওরফে জান্নাতুল ফেরদৌসী। 

প্রতারক চক্রের দুই সদস্যদের হাতে বিভিন্ন ব্যক্তির মাধ্যমে চাকরির জন্য দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ, চিরিরবন্দর, খানসামা, রংপুরের তারাগঞ্জ ও নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার ৩২ জন বেকার যুবকের কাছ  থেকে তিন লাখ টাকা করে তুলে  দেন।  এদের মধ্যে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলার বড় সুলতানপুর ইউনিয়নের রুহিগঞ্জ এলাকার মহেন্দ্র নাথ রায়ের ছেলে দুলাল চন্দ্র রায় (১৯) ও একই এলাকার সুসেন চন্দ্র রায়ের ছেলে স্বপন রায়ের (২০) সাথে কথা হয়। তারা উভয়ে জানান, দিনাজপুরের জনৈক মামুন ও ওয়ালিউর রহমানের মাধ্যমে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ওয়ার্ড বয় পদের চাকরির জন্য তিন লাখ টাকা করে দেন প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য জাহাঙ্গীর আলম জাহিদকে। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তাদেরকে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে ওয়ার্ড বয় পদে নিয়োগপত্র প্রদান করেন চক্রটি। তারা উক্ত পদে যোগদান করেন এবং তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য পালন করে আসছিলেন। এ রকম বিভিন্ন পদে ৩২ জনকে চাকরির দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ওই প্রতারক চক্র সদস্যরা। কিন্তু বিপত্তি ঘটে গত সোমবার (২১ মার্চ)। প্রতারক চক্রের মূল  হোতা জাহিদ ও তাঁর স্ত্রী  চাকরিতে নিয়োগ দেয়া ব্যক্তিদের যোগদানপত্র দিয়ে আবারও টাকা নিতে সৈয়দপুর ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে আসেন। এ সময় নিয়োগ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথাবার্তার এক পর্যায়ে তাদের ভুয়া নিয়োগদানের বিষয়টি বেরিয়ে আসে। এ সময় সেখানে বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে প্রতারণার শিকার যুবকেরা প্রতারক চক্রের সদস্য জাহিদ ও তাঁর স্ত্রী  রেজিনা সুলতানাকে আটক করে। পরে স্থানীয় কিছু লোকের সহযোগিতায় তাদের সেখান থেকে সৈয়দপুর শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়ামের একটি কক্ষে আটকে রাখেন। পরে রাত আনুমানিক সোয়া ১১টার দিয়ে খবর পেয়ে  সৈয়দপুর থানা পুলিশ তাদের নিয়ে আসেন। মঙ্গলবার  সৈয়দপুর থানা পুলিশ ভুক্তভোগীদের হাতে আটক প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে ৩৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে সোপর্দ করেন। 

সৈয়দপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আবুল হাসনাত খান বলেন, দুই ব্যক্তিকে আটক করে রাখার খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে তাদের থানায় নিয়ে আসা হয়। গতকাল মঙ্গলবার আটককৃদের বিরুদ্ধে কোন লিখিত অভিযোগ না পাওয়ায় তাদের ৩৪ ধারায় আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।                                       


পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 3106040501726764493

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item