নীলফামারীতে মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশে‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে জানো’বছরব্যাপী কর্মসুচি ঘোষনা


নির্ণয়,নীলফামারী॥
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালিন স্বাধীন বাংলা বেতর কেন্দ্রের মুক্তি গান ও যুদ্ধকালিন ঘটনার  জীবনগাঁথার বাস্তবতার কাহিনী গুলো আজও ভুলতে পারেনি বীরমুক্তিযোদ্ধারা। বিশাল এক মঞ্চে একে একে বীরমুক্তিযোদ্ধারা সেই কথাগুলো বলছিলেন আর কাঁদছিলেন। কি ভাবে তারা বঙ্গবন্ধুর ডাকে ঝাপিয়ে পড়েছিলেন পাকি খান সেনা ও এ দেশীয় স্বাধীনতা বিরোধী চক্রের বিরুদ্ধে। 

শনিবার(৮ অক্টোবর/২০২১) দুপুর থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত  নীলফামারী জেলা শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে জানো’ শিরোনামে ‘অন্বেষণ’ নামে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সংগ্রামী জীবন ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কিত সাধারণ জ্ঞানভিত্তিক প্রকাশনার মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান ও মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের বিশাল সমাবেশে সেই স্বাধীনতা যুদ্ধের কাহিনীগুলো তুলে ধরা হয়। 

নীলফামারী জেলা পরিষদের আয়োজনে ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নীলফামারী জেলা প্রশাসক মোঃ হাফিজুর রহমান চৌধুরী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন নীলফামারীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) এ,এস,এম মুক্তারুজ্জামান। 

অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, ১১ নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা কুড়িগ্রামের শওকত আলী সরকার বীর বিক্রম, ১১ সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা গাইবান্ধার মো. মাহবুব এলাহী রঞ্জু বীর প্রতীক, ১১ সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা জামালপুরের সৈয়দ সাদরুজ্জামান হেলাল বীর প্রতীক, ১১ সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা জামালপুরের মিজানুর রহমান খান বীর প্রতীক, ১০ নম্বর সেক্টরের চাঁদপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান কবীর বীর প্রতীক, ২ নম্বর সেক্টরের ঢাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আনোয়ার হোসেন বীর প্রতীক, একই সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মিজানুর রহমান খান বীর প্রতীক, ৬ নম্বর সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধা লালমনিরহাটের ক্যাপ্টেন আজিজুল হক বীর প্রতীক প্রমুখ। এছাড়া এই সমাবেশে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৪টি জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে জেলা ভিত্তিক সাবেক কমান্ডারগণ, নীলফামারী জেলার ছয় উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা, তাঁদের সন্তান, শিক্ষার্থী ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের মানুষ উপস্থিত ছিলেন।  

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি নীলফামারী জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী তার বক্তব্যে বলেন একটি গ্রন্থের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর বিশালতাকে তুলে ধরা কঠিন। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধু ছিলেন সব দিকেই দক্ষ একজন রাষ্ট্রনায়ক। তাঁর সাড়ে তিন বছরের শাসনামল  উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বঙ্গবন্ধু পৃথিবীতে একমাত্র নেতা যিনি তাঁর জীবদ্দশায় একাধারে স্বাধীনতার স্বপ্ন দেখেছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন এবং স্বাধীনতা অর্জন করেছেন। বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আজও হয়তো আমরা পরাধীন থাকতাম। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু অল্প দিনেই বিশ্ব নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু বিশ্ব সভায় দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, বিশ্ব আজ দুই ভাগে বিভক্ত। একদিকে শোষক আর একদিকে শোষিত, আমি শোষিতের পক্ষে। বিশ্ব সভায় তিনি বাংলাদেশের নেতা হিসেবে কথা বলেননি, বিশ্বনেতা হিসেবে কথা বলেছেন। তিনি বলেছিলেন, অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধ করে এই পয়সা দিয়ে দারিদ্র বিমোচনের জন্য, শিক্ষার, স্বাস্থ্যের জন্য খরচ করতে বলেছিলেন। জাতিসংঘে দাঁড়িয়ে তিনি উপদেশ দিতেন, বিশ্বের নীতি কী হওয়া উচিত। 

মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে অনুষ্ঠানের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা জয়নাল আবেদীন  বলেন, আজকে তোমরা শিক্ষার্থীরা দেশের, জাতির মেরুদন্ড। ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর বাংলাদেশে স্বাধীনতা যুদ্ধের চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের সাথে রাজাকার, আল বদর, আল শামস বাহিনী বাংলাদেশের অসংখ্য শিক্ষাবিদ, গবেষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্যিকদের চোখ বেঁধে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে তাদের নির্যাতনের পর হত্যা করেছিল। চূড়ান্ত বিজয়ের প্রাক্কালে তারা স্বাধীন বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাযজ্ঞ সংগঠিত করেছিল। তাই তোমরা বেশি বেশি করে জ্ঞানমূলক বই পড়বে। পাঠাগারে যাবে, সেখানে বঙ্গবন্ধুর ইতিহাস, দেশের ইতিহাস সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবে। তিনি আরও বলেন ৭৫ এর ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর সাম্প্রদায়িক শক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করে সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়কে অধিকার বঞ্চিত করেছে। তাদের স¤পদ দখলসহ বিভিন্নভাবে অত্যাচার করেছে। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ সমান অধিকার ভোগ করছে।

পরিশেষে জয়নাল আবেদীন এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে স্বাধীনতার ৫০ বছর উপলক্ষ্যে ‘বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে জানো’ নীলফামারীতে বছরব্যাপী বিভিন্ন  কর্মসূচির ঘোষনা করেন।

উল্লেখ যে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক ও প্রধান আলোচক হিসাবে নীলফামারী সদর আসনের সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নুরের উপস্থিত থাকার কথা ছিল। তারা শারিরিকভাবে অসুস্থ্য থাকায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। # 


পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 1145103387941057605

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item