কর্মক্ষেত্রে নারীবান্ধব পরিবেশ
https://www.obolokon24.com/2021/05/blog-post_31.html
একটা জিনিস খুব বিশ্বাস করি, প্রত্যেক নারীর অন্তরেই একটা গোপন কুঠরি আছে, যেখানে লুকিয়ে রাখা হয় তার প্রতিটি নিগ্রহের ঘটনা। বেশির ভাগ নারী কখনো কিন্তু সেই কথা প্রকাশ্যে আনে না। চিরায়ত একটি ভয় নিয়ে সেই কুঠরিকে লালন করে। সে একলা চলতে শঙ্কা লালন করে, সে প্রতিবাদ করতে ভয় পায়। গোপন ওই কুঠরি সব সময়ই মনের সাহসকে তালাবদ্ধ করে রাখে। তবে একসময় আমি আমার নিজের তালাটা ভাঙতে পেরেছি। আমাকে সাহস জুগিয়েছে আমার কর্মক্ষেত্র। সেখানে একঝাক তরুনী মিলে গড়ে আমরা তুলেছে পরিবেশ বান্ধব কর্মক্ষেত্র। যেখানে অন্যরা পারেনি সেখানে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত মেয়েরা সেই ভয় দূর করার চেষ্টা করছে।
আসলে একটি নারীবান্ধব পরিবেশই নারী কর্মীর মনে সাহস জোগাতে পারে। শঙ্কা দূর করতে পারে। কর্মক্ষেত্র কতটা নারীবান্ধব, তা কতজন নারী কর্মী কাজ করছেন, তা দিয়ে বিচার করা যায় না। কারণ, অনেক প্রতিষ্ঠানেরই আগ্রহ নারী কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি করার দিকে থাকে। অথচ কর্মক্ষেত্রটি নারীবান্ধব করার বিষয়ে অতটা তৎপরতা লক্ষ করা যায় না। আসলে নারীবান্ধব কর্মপরিবেশ কী, সে সংজ্ঞাই জানে না অনেকে। কর্মক্ষেত্রে নারীবান্ধব পরিবেশের অর্থ হলো কর্মক্ষেত্রের এমন বিধান স্থাপন করা, যাতে নারী কর্মী কাজ এবং পারিবারিক দায়িত্ব সমান্তরালভাবে পালন করতে সক্ষম হন। বাংলাদেশের বেশির ভাগ কর্মক্ষেত্রে এই বিধানের অনেক নড়চড়ই লক্ষ করা যায়। যেমন অনেক সময় দেখা যায়, কাজ না থাকলেও আটকে রাখা হচ্ছে, ঘরে ফেরার ক্ষেত্রে নিরাপদ কোনো ব্যবস্থা দেওয়া হচ্ছে না, মাতৃত্বকালীন ছুটিতে গেলে ছাঁটাই করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ছোট-বড় নানা ধরনের হয়রানি, এমনকি যৌন হয়রানির মতো ঘটনাও ঘটে। এসব কারণে প্রায়ই কাজ ছাড়তে বাধ্য হন নারী। কর্মক্ষেত্রে নারী যৌন হয়রানি, শারীরিক নির্যাতন, মানসিক নির্যাতন, মজুরিবৈষম্য, পদবৈষম্য ও নিরাপত্তাহীনতার মতো বৈষম্যের শিকার হন।
এতে উত্তোরনের জন্য চাই নারী বান্ধব পরিবেশ।