পঞ্চগড়ে প্রাঃ শিক্ষা অফিসের যোগসাজশে আত্নসাৎকৃত সরকারি অর্থ ফেরত দিলেন সপ্রাবি শিক্ষক

সাইদুজ্জামান রেজা, পঞ্চগড়:


পঞ্চগড় সদর উপজেলা প্রাঃ শিক্ষা অফিসের যোগসাজশে প্রধানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।


গত ২৮ জুন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর এ বিষয়ে অভিযোগ করেন মো. হাসানুজ্জামান চৌধুরী নামে এক ব্যক্তি।


লিখিত অভিযোগে বলা হয়, গত ২৯ জুন,২০১৯ তারিখে ৬,৬৭,৬৩০ টাকার সরকারি চেক সোনালি ব্যাংকে প্রদান করে জেলা একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিস। 

 ঐ টাকা হতে সহঃ শিক্ষক আব্দুল আজিজের সোনালী ব্যাংক পঞ্চগড় শাখায় হিসাব নং ১৯১২০০২২০০৬৯৯ এ ১৬,২৮০ টাকার জমা হয়  এবং একই হিসাব নম্বরে গত ৭ই আগস্ট ২০১৯ তারিখে ২৮,৯২৮ টাকার সরকারি চেক প্রদান করা হয়। একজন সহকারী শিক্ষকের বেতনের ব্যাংক হিসাব নম্বরে কিভাবে সরকারি চেক প্রদান করা হয়। তা নিয়ে প্রশ্ন অনেকের মধ্যে। 


অভিযোগে আরও বলা হয়, আব্দুল আজিজ পঞ্চগড় সদর উপজেলার গোফাপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হতে প্রধানপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলি হয়ে আসেন। গোফাপাড়া সপ্রাবিতে কর্মরত অবস্থায় তিনি সোনালী ব্যাংক পঞ্চগড় শাখার হিসাব নং ১৯১২০০২২০০৬৯৯ হতে বেতন গ্রহণ করতেন। পরবর্তীতে তিনি ব্যাংক পরিবর্তন করে, রূপালি ব্যাংক পঞ্চগড় শাখায় হিসাব নং ৪৬৬৩০১১০০০৬৬৫ এ ২১ অক্টোবর ২০১৮ হতে বেতন ভাতা উত্তোলন করে আসছে।

আব্দুল আজিজ নব জাতীয়করনকৃত বিদ্যালয়ের শিক্ষক গত ৩০ জুন ২০১৭ সালে শ্রান্তি-বিনোদন ভাতা গ্রহণ করেন। কিন্তু ২০২০ সালের মার্চ মাসে ৩ বছর পূর্ণ না হওয়া সত্ত্বেও অন্য একজন শিক্ষকের নাম ব্যবহার করে, রূপালি ব্যাংকের নিজস্ব হিসাব নম্বরে ১৬,৭৪০ টাকা শ্রান্তি-বিনোদন ভাতা গ্রহণ করে।


অভিযোগে বলা হয় আব্দুল আজিজ একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়েও একই মাসে একাধিক বেতন এবং দুটি ব্যাংকের পঞ্চগড় শাখার হিসাব নম্বর হতে মোট ২,৪৬,৬২৮ টাকা বেতন গ্রহণ, একই সময়ে ৩ টি ঈদ বোনাসে ৫৩,১০০ টাকা, ২টি বৈশাখী ভাতা ৭,২৭২ টাকা সহ গত ২৯জুন ২০১৯ হতে ১০ জুন ২০২০ পর্যন্ত মোট ৩,৬৮,৯৪৮  টাকা উত্তোলন করে।


 জানা যায় শিক্ষক আব্দুল আজিজ রূপালি ব্যাংক পঞ্চগড় ও সোনালী ব্যাংক পঞ্চগড় শাখা হতে ৪ জন ভিন্ন ভিন্ন শিক্ষকের নাম ব্যবহার করে তাঁর নিজের হিসাব নম্বর ব্যবহার করে  প্রাঃ শিক্ষা অফিসের জোগসাজশে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করেছে। 


সরকারি অর্থ আত্নসাতের বিষয়ে অনুসন্ধানে জানা যায় সদর উপজেলা প্রাঃ শিক্ষা অফিসার মোসলেম উদ্দিন শাহ ও অফিস সহঃ কাম মুদ্রাক্ষরিক গোলাম রহমান সহ সদর প্রাঃ শিক্ষা অফিসের যোগসাজসে শিক্ষক আব্দুল আজিজের হিসাব নম্বর ব্যবহার করে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্নসাৎ করে। 


সরকারি অর্থ আত্নসাতের খবর জানা জানি হলে জেলা প্রাঃ শিক্ষা অফিসার শহীদুল ইসলামের পরামর্শে সোনালী ব্যাংকে গত ১২ ও ৬ জুলাই ২০২০ তিন লক্ষাধিক টাকা চালান যোগে ফেরত দেয় বলে জানান অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল আজিজ। 


 গত ১৩ জুলাই জেলা প্রাঃ সহঃ শিক্ষা অফিসার আফরোজ জেসমিন কে প্রধান করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। প্রধান তদন্ত কর্মকর্তা আফরোজ জেসমিন বলেন তদন্ত কমিটিতে আমাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, তবে এখনো তদন্ত শুরু করি নাই। ওরা ভাগাভগি করে খেয়েছে এখন আমাদের এতো জালা। 


জেলা একাউন্টস এন্ড ফিন্যান্স অফিসে অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে কিছু তথ্য দিলে ও কিছু তথ্য দিতে তালবাহানা করে। জেলা হিসাব রক্ষন অফিসার গোলাম কিবরিয়া বলেন উপজেলা প্রাঃ শিক্ষা অফিসার আমাদের কাছে যেভাবে বিল পাঠিয়ে দেন,আমরা সেভাবেই ব্যাংক ম্যানেজারের নামে চেক পাঠিয়ে দেই। কোন সমস্যা হলে তারাই বুঝবে।  

পঞ্চগড় সদর উপজেলা প্রাঃ শিক্ষা অফিসার মোসলেম উদ্দিন শাহ জানান তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। তদন্ত করলে বিষয় টা জানা যাবে। 


এ বিষয় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শহীদুল ইসলাম জানান অভিযুক্ত শিক্ষক আব্দুল আজিজের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত চলছে, তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 4410326805058344377

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item