নিজস্ব প্রতিনিধি-শীতের কামড়ে বাঘ পালানো মাঘ মাসের প্রথম সপ্তাহ পার না হতেই আবারও তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কবলে পড়েছে উল্টরবঙ্গ। উত্তরের হিম কনকনে হাওয়ার জোর, মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশায় মানুষ জবুথবু। সূর্যের কিরণ ও তেজ যেন ফিকে হয়ে গেছে। শীতের দাপটে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। দুর্ভোগ বেড়ে গেছে কর্মমুখী মানুষ, শিশু-বৃদ্ধ, স্কুল-মাদরাসার শিশু-কিশোর শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকদেরও।
ঠান্ডা হাওয়া ও কুয়াশার ঘোরে রংপুর বিভাগে দিনের বেলায় পারদ নেমে গেছে এমনকি ৭ থেকে ১৬ ডিগ্রিতে!
আবহাওয়া বিভাগ জানায়, শীতের একটি বলয় এখন বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল পর্যন্ত এগিয়ে এসেছে। গতকাল দিনের বেলাতেই পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। রংপুরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। নীলফামারী জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে সৈয়দপুর বিমানবন্দর আবহাওয়া দপ্তর। কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, লালমনিরহাটে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি। আজ বৃহস্পতিবার(২৩ জানুয়ারি) তেঁতুলিয়ায় রেকর্ড করা হয়েছে ৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা।
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEimdi5aFE4qBG8dCW6x3Z4Rx0NmEakeDRu_dz5jYu1YjK_7OGXFK0kePBM2O2wAsYpDmRD7yKBwFxrAHg9TxL0jtEzJuwUkv-giyboZ_6GUtAbs_rUNYaBZqAGnyT2AabL5fIrZYLvnv1E/s1600/DSC_0096.jpg)
পুরো রংপুর বিভাগজুড়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। বিভাগের কয়েকটি জেলায় দেখা মেলেনি সূর্যের। রাতে বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝড়ে মাঠ-ঘাট-প্রান্তর ছিল ভেজা। পশ্চিমা হাওয়ায় হাড় কাঁপানো শীতে কাবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষজন শীতের কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বয়স্ক, শিশু ও ছিন্নমুল মানুষেরা। শীতবস্ত্রের অভাবে তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছে। এছাড়া ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে শীতের কারণে কোল্ড ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ । বাতাসের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ আর্দ্রতা কাছাকাছি আসায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এই মৃদু শৈত্যপ্রবাহ কমপক্ষে আরো দু-একদিন অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। অবলোকনের জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদে জানা যায়, শীতের কারণে রাস্তাঘাট ও হাট-বাজারে জনসমাগম আগের তুলনায় অনেক কম। শীতের কবল থেকে বাঁচার জন্য গ্রামাঞ্চলে লোকজন খড়কুটো জ্বালিয়ে উষ্ণতা বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। শীতের এই পরিস্থিতিতে মানুষের পাশাপাশি গরু-ছাগলসহ গবাদিপশুর অবস্থাও কাহিল হয়ে পড়েছে। এছাড়া দীর্ঘ শীতে বেশির ভাগ বোরো চারার বৃদ্ধি না হওয়ায় আবাদ শুরু করতে দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কৃষকেরা।
![](https://blogger.googleusercontent.com/img/b/R29vZ2xl/AVvXsEhMTubmUBE-B4kBWpVVtEwZFDqry110SMfIWMjWOyjVTtD0VTfv9uABt-rPLhF-_rHs6-uSyXVUSuAW03hBfurTC6KlnmGK_n8hIWWeZDsPHPeqEZr0XThe5T3ONmJq9YZ5qktHIEGxV-o/s1600/20200123_085951.jpg)
আবহাওয়াবিদ মো. আশরাফ উদ্দিন বলেন, ‘শৈত্যপ্রবাহের অবস্থা প্রায় একই রকম রয়েছে। আজও মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আর বাড়বে না, এরকমই থাকবে।প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বৃহস্পতিবার দিনের তাপমাত্রা। আগামী ২ দিন রাতের তাপমাত্রা কমতে পারে। তারপরের ৫ দিনের শেষের দিকে বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা থাকতে পারে বলেও জানায় আবহাওয়া অফিস।