ঢাকার কেরানীগঞ্জে অগ্নিকান্ডে কয়লা হওয়া লাশটি রংপুরের পীরগাছার মাহবুবের

ফজলুর রহমান, পীরগাছা (রংপুর) প্রতিনিধি
ঢাকার কেরানীগঞ্জে প্লাস্টিক কারখানায় অগ্নিকান্ডের ঘটনায় পুড়ে কয়লা হয়ে যাওয়া লাশটি রংপুরের পীরগাছার মাহবুর রহমানের বলে পরিবার দাবী করেছে। বৃহস্পতিবার(১২ ডিসেম্বর) সকালে পা থেকে মাথার চুল পর্যন্ত পুড়ে যাওয়া লাশের বাম হাতে একটি ব্রেসলেট দেখেই তাকে সনাক্ত করেন মাহবুর রহমানের বাবা ও চাচা।
নিহত মাহবুর রহমান(২৩) উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের আদম কুটিপাড়া গ্রামের গোলজার হোসেনের ছেলে।
দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে মাহবুর রহমান ছিলেন সবার বড়।
মাহবুরের মা অসুস্থ থাকায় মৃত্যুর খবর সেদিন বাড়িতে জানানো হয়নি। শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে তার মৃত্যুর খবর পেয়ে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। সন্তানের মৃত্যুর খবর শুনে তার মা মোরশেদা বেগমও বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, রিকশা চালক বাবার অভাবের সংসারে বড় হয়েছেন মাহবুর রহমান। তাদের নিজেদের বসতভিটাও নেই। অন্যের জমিতে বসবাস করেন। তাই পরিবারের স্বচ্ছলতা ফেরার আশায় প্রাথমিকের গন্ডি পেরিয়েই কর্মের সন্ধানে ঢাকা চলে যান। ছোট থেকে বিভিন্ন কাজ করে পরিবারকে সহায়তা করতেন তিনি। ২০১৫ সালে ঢাকার কেরানীগঞ্জের ওয়ান প্রাইম প্লেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজে চাকুরি নেন। গত চার বছর থেকে ১৭ হাজার টাকা বেতনে ওই কারখানাতেই কাজ করে আসছিলেন।
বুধবার বিকেলের দিকে এক প্রতিবেশী টেলিভিশনে খবর দেখে অগ্নিকান্ডের বিষয়টি মাহবুর রহমানের পরিবারকে জানায়। এরপর  মাহবুরের খোঁজ নিতে পরিবারের লোকজন তার মোবাইল ফোনে কল করেন। কিন্তু একের পর এক কল করা হলেও মাহবুর ফোন ধরেননি। এক সময় ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। মোবাইলে যোগাযোগ করতে না পেরে মাহবুরের বাবা গোলজার হোসেন ও চাচা লাভলু মিয়া রাতেই ঢাকা চলে যান। যে কারখানায় মাহবুর কাজ করতেন সেখানে তাকে পাওয়া যায়নি। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের দেয়ালে সাঁটানো রোগীদের নামের তালিকাতেও মাহবুরের নাম ছিল না। পরে বৃহস্পতিবার সকালে ঢামেক হাসপাতালের মর্গে গিয়ে একটি পুড়ে যাওয়া লাশ দেখতে পান। পা থেকে মাথার চুল পর্যন্ত পুড়ে যাওয়া লাশের বাম হাতে একটি ব্রেসলেট দেখে মাহবুরকে সনাক্ত করেন তারা। মাহবুর সবসময় ব্রেসলেট পড়ে থাকতো। লাশটি পুড়ে কয়লা হলেও বাম হাতের ব্রেসলেটটি বোঝা যাচ্ছিল।
মাহবুরের চাচা লাভলু মিয়া জানান, ‘আমরা এখানে এসে জানতে পেরেছি অগ্নিকান্ডের সময় কারখানার বাইরে ছিল মাহবুর রহমান। কিন্তু অন্যদের বাঁচাতে ভিতরে ঢুকে পড়েন। অন্যরা বাইরে আসতে পারলেও মাহবুর ভিতরে আটকা পড়েন।’
মাহবুর রহমানের বাবা গোলজার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, ‘আমার সংসারের হাল ধরা ছেলেটা আজ পোড়া লাশ হয়ে মর্গে পড়ে আছে। এটাই আমার ছেলে মাহবুর। আমরা তার বাম হাতের ব্রেসলেট দেখে মাহবুরকে চিনতে পেরেছি। আমার ছেলের লাশ এখনও দেওয়া হয়নি। ডিএনএ টেস্ট করে লাশের পরিচয় নিশ্চিত হয়ে আমাদের লাশ দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 3542423143813393167

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item