সৈয়দপুরে ইরি বোরো চাষের ধুম

তোফাজ্জল হোসেন লুতু, সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলায় চলতি মৌসুমে ইরি - বোরো ধানের চারা রোপনের ধুম পড়েছে। মাঠে মাঠে কৃষকরা একেবারে কোমর বেঁধে চাষাবাদেনেমে পড়েছেন। এতে করে কৃষকরা দারুন ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। বর্তমানে উপজেলার কৃষকদের যেন দম ফেলারও ফুসরত নেই। উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।
সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন ও পৌর এলাকায় ৬ হাজার ৪৪৫ হেক্টর জমিতে ইরি- বোরো ধানের চারা রোপনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়েছে। তন্মধ্যে রয়েছে উফশী জাতের ৫ হাজার ৩২৫ হেক্টর এবং হাইব্রিড জাতের ১ হাজার ১২০ হেক্টর জমি। আর উল্লিখিত পরিমাণ জমিতে ইরি - বোরো ধান চাষাবাদের জন্য বীজতলা তৈরি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩২২ হেক্টরে। বীজতলা তৈরি লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে ছিল উফশী  জাতের ২৬৬ হেক্টরে এবং হাইব্রিড জাতের ৫৬ হেক্টরে। কিন্তু লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ৩৭০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। এবারে শৈত্যপ্রবাহ এবং তীব্র শীত না থাকায় ইরি- বোরো বীজতলার কোন ক্ষতি হয়নি। ফলে বীজতলায় ইরি- বোরো চারা লকলকে বেড়ে উঠছে।
 এদিকে, সৈয়দপুরে গত জানুয়ারির প্রথম থেকেই  ইরি- বোরো ধানের চারা রোপনের কাজ শুরু হয়েছে। গত কয়েক দিন সৈয়দপুর উপজেলার ৫টি কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, বাঙ্গালীপুর, বোতলাগাড়ী ও  খাতামধুপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায় কোথাও  কোথাও ইরি - বোরা চারা রোপনের জন্য জমি তৈরির কাজ চলছে। কোথাওবা জমিতে চারা রোপনের জন্য সেচ দেওয়া হচ্ছে। তাই মাঠে মাঠে ডিজেল, বিদ্যূৎচালিত সেচযন্ত্রগুলোর খট ঘট শব্দে অব্যাহতভাবে চলছে। কেউ বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন করছেন। সেই সঙ্গে  মাঠে পর মাঠ কদর্মাক্ত জমিতে সারিবদ্ধভাবে ইরি-বোরো চারা রোপন করছেন কৃষি শ্রমিকরা। উপজেলার গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র ইরি - বোরো আবাদের কাজ চলছে পুরোদমে। কোনো কোনো জমিতে ইতিমধ্যে চারা লাগানো হয়ে গেছে। কেউ যেন কারো সঙ্গে দাঁড়িয়ে এক মুর্হুত একটু কথা বললেন এমন সময়টুকুও নেই কারো হাতে। মোট কথা মাঠে পর মাঠ এখন কৃষকদের ছোটাছুটি আর কর্মকান্ডে মুখরিত হয়ে উঠেছে।
উপজেলার কামারপুকুর ইউনিয়নের কৃষক আহসান - উল- হক বাবু’র সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, এবারে আবহাওয়া সম্পূর্ণভাবে ইরি- বোরো চাষাবাদের অনুকূলে রয়েছে। এখন ইরি- বোরো রোপনের ভর মওসুম চলছে। সময় মতো চারা লাগাতে না পারলে আবাদে বিপর্যয় হবে। তিনি বলেন, ইরি - বোরা  চারা রোপনের এখনই উপযুক্ত সময়। তাই এখন কৃষি শ্রমিকদের বেশ কদর চলছে। অধিক মজুরী দিয়ে কৃষি শ্রমিক লাগিয়ে চারা রোপন করতে হচ্ছে।
কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্টরা জানান, জানুয়ারী মাসের শুরু থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত ইরি- বোরা চারা লাাগনো উপযুক্ত সময়। এ সময়ের মধ্যেজমিতে চারা রোপন করতে পারলে ভাল ফলন মিলবে।
 খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এবারে ব্রি-ধান ২৮, ২৯, ৫৮, ৬৩, ৭৪ ও হাইব্রিড জাতের ধান বেশি বেশি আবাদের দিকে ঝুঁকেছেন কৃষকরা।
কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, বর্তমানে রবিশস্য আলু, সরিষা, গম ছাড়া কোথাও এবার  এক চিলতে জমি খালি নেই। এখন বীজতলার ধান বীজ জমিতে রোপনের উপযুক্ত সময়  চলছে। ইতিমধ্যে ৪০ ভাগ  জমিতে চারা রোপনের কাজ শেষ হয়েছে। তাই কৃষকরা এখন ভীষণ ব্যস্ত সময় পার করছেন।
 সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ইউএও) কৃষিবিদ মোছা. হোমায়রা মন্ডল জানান, কৃষি বিভাগের সংশ্লিষ্টরা ইরি- বোরো চাষাবাদের বিষয়ে কৃষকদের পাশে থেকে সার্বক্ষণিক সব ধরনের পরামর্শ প্রদান করছেন।  তিনি আরো বলেন,  পুরো রোপন মওসুমে অনুকূল আবহাওয়া বজায় থাকলে এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ কোন রোগবালাইয়ের আক্রমন দেখা না দিলে এবারে ইরি- বোরা আবাদ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।                

পুরোনো সংবাদ

নীলফামারী 5410125244896758228

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item