পীরগঞ্জে ব্রীজ নির্মানে অনিয়মের অভিযোগ

মামুনুর রশিদ মেরাজুল ,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ পীরগঞ্জে এবারে ব্রীজ নির্মানে অফিস খরচ এক লাফে ১০ পারসেন্ট নির্ধারন করেছেন পিআইও। এই বাড়তি খরচ বহন করতে গিয়েই গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসুচীর আওতায় সোয়া ৭ কোটি টাকার ২৮টি ব্রীজ নির্মান কাজে ব্যাপক অনিয়ম করা হচ্ছে। অপরদিকে কার্যাদেশ প্রদান ও লে-আউটের সময় ব্রীজ প্রতি ৩৫ হাজার টাকা করে পিআইও নিয়েছে। এ ঘটনায় অনেক ঠিকাদার পিআইও’র উপর অসন্তুষ্ট হয়েছে। 
সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসুচীর আওতায় পীরগঞ্জ উপজেলার ১৫টি ইউনিয়নে টেন্ডারের মাধ্যমে ৭ কোটি ২৪ লাখ ৬ হাজার ১৯৫ টাকা ব্যয়ে ২৮টি ব্রীজ নির্মান কাজ শুরু হয়েছে। ওই কাজের শুরুতেই পিআইও প্রতিটি ব্রীজ নির্মানের কার্যাদেশ প্রদানে ৩০ হাজার টাকা করে এবং লে-আউট প্রদানের সময় ৫ হাজার টাকা নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়াও প্রতিটি ব্রীজের নির্মান বিল প্রদানের সময় সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের কাছ থেকে পিআইও অফিস খরচের নামে ১০ পারসেন্ট করে উৎকোচ দাবী করায় ঠিকাদাররা ক্ষোভে ফুঁসে উঠছেন। কারণ ইতিপূর্বে অফিস খরচ ছিল ৪ পারসেন্ট টাকা। ফলে অনেক ঠিকাদার পিআইওকে ম্যানেজ করে নির্মান কাজে দুর্নীতি-ঘাপলার আশ্রয় নেয়। তবে বাড়তি অফিস খরচের উৎকোচ নিয়ে ঠিকাদারদের সাথে পিআইও’র অন্তর্দ্বন্দ্ব চলছে বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঠিকাদাররা জানান। তারা আরও জানায়, এভাবে পিআইওকে ম্যানেজ করলে আমাদেরকে লোকসান গুনতে হবে।
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, মথুরাপুর হতে পানবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত রাস্তায় পানবাড়ী স্কুলের নিকট আখিরা খালের উপর, পারবোয়ালমারী হতে মেরীপাড়ায় রাস্তায় মেরীপাড়া খালের উপর এবং মাহদীপুর শরীফেরপাড়া হতে কুমেদপুর পর্যন্ত রাস্তায় আখিরা খালের উপর ৬০ফুট দৈর্ঘের পৃথক ৩টি ব্রীজ নির্মিত হচ্ছে। ওইসব ব্রীজের প্রতিটিতেই ৫৬ লাখ ৮৯ হাজার ১০৬ টাকা করে বরাদ্দ রয়েছে। ওইসব ব্রীজে নিম্নমানের কাজ হচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানায়। তারা পিআইওকে বারবার অভিযোগ করলেও বিষয়টি তিনি আমলে নেননি বলে জানা গেছে। এদিকে ভাদুরারঘাট হতে ছিলিমপুরগামী রাস্তায় মরা নদীর উপর এবং ড. ওয়াজেদ মিয়া সেতু হতে দুধিয়াবাড়ী স্কুল হয়ে টুকুরিয়াহাট পর্যন্ত রাস্তায় ড. ওয়াজেদ মিয়া সেতুর উত্তরে ৫০ ফুট করে দৈর্ঘ্যরে ব্রীজ নির্মানেও ঘাপলার অভিযোগ রয়েছে। পিআইও’র অফিস খরচ এবং ঠিকাদারদের মুনাফা রাখতেই অন্যান্য ব্রীজ নির্মানেও নিম্নমানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহার করার অভিযোগ রয়েছে। ৩২ লাখ ৫২ হাজার ৬৫৩ টাকা করে ব্যয়ে ৬টি ব্রীজ, ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৬০৫ টাকা ব্যয়ে ৭টি ব্রীজসহ মোট ২৮টি ব্রীজ নির্মানে দুর্নীতির মহোৎসব চলছে বলে বিভিন্ন সুত্র জানিয়েছে। ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি ব্রীজের কাজ ৯০ শতাংশ সম্পন্ন দেখানো হয়েছে। এসব ব্যাপারে উপজেলা পিআইও দফতরের উপসহকারী প্রকৌশলী সুবীর কুমার দত্ত জানান, কোন ব্রীজে সমস্যা হলে পিআইও স্যার আমাকে শুধু সেখানে পাঠান। এছাড়া আমি আর কিছু জানি না। পিআইও স্যারই সব জানেন। অপরদিকে পিআইও অফিসটির একজন অনিয়মিত কর্মচারী (সেরকারী) মফিজুল ইসলাম মফিজ, সেই অনেক সময় উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে। তার উপস্থিতিতেই ব্রীজের নির্মান কাজ তদারকি করে থাকে বলে একাধিক সুত্র জানায়। পিআইও মিজানুর রহমান বলেন, ব্রীজ নির্মানে কোন অনিয়ম হচ্ছে না। সব ঠিকঠাক রয়েছে। তবে তিনি উৎকোচ বা অফিস খরচের ব্যাপারে অস্বীকার করেন।

পুরোনো সংবাদ

রংপুর 7381315261460643484

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item