কিশোরগঞ্জে সর্বত্র শিক্ষার্থীদের ভরসা এখন রাতের কোচিং

মোঃ শামীম হোসেন বাবু, কিশোরগঞ্জ, নীলফামারীঃ
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলায় ফ্রি স্টাইলে চলছে জমজমাট কোচিং বাণিজ্য। সর্বত্র শিক্ষার্থীদের ভরসা এখন রাতের কোচিং। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের ঘোষিত নীতিমালার তোয়াক্কা না করে কতিপয় শিক্ষকদের চিহ্নিত সিন্ডিকেট উপজেলা শহরসহ গ্রামের হাটবাজারে গড়ে তুলেছে কোচিং সেন্টার। উপজেলার কোচিং সেন্টারের পরিচালনাকারী শিক্ষকদের কাছে শিক্ষার্থীরা জি¤িœ হয়ে পড়েছে। এতে করে বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পরিবেশ বিনষ্টসহ মেয়ে শিক্ষার্থীরা বখাটেপনার ঝুকিতে চলাচল করছে।

বিভিন্ন স্কুলে গিয়ে দেখা যায় ক্লাসে নামে মাত্র পাঠদান চলে। তাই সংশ্লিষ্ট বিষয়ের শিক্ষকদের কাছে ওই বিষয়ে ফের বছর জুড়ে কোচিং করতে বাধ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। কিশোরগঞ্জে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণিতে পড়া ছাত্র-ছাত্রীদের কোচিং সেন্টার নির্ভরশীল হতে হচ্ছে। এসব বন্ধে প্রশাসনের কোনো হস্তক্ষেপ নেই। শিক্ষার্থীরা সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত থাকে দৌড়ের উপর। কোচিং সেন্টারের পরিচালকরা শিক্ষার্থী পিছু প্রতি মাসে তিনশত থেকে এক হাজার টাকা হারে আদায় করে প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিলেও রহস্যজনক কারণে এদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও কোচিং বাণিজ্য বন্ধে উপজেলায় নেই কোনো মনিটরিং কমিটি। ফলে প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের জি¤িœ করে এসব কোচিং বাজ শিক্ষকরা নিজেদের বাসায় ব্যাচ করে প্রাইভেটের আদলে কিংবা বাড়ি ভাড়া করে আবার কেউ কেউ স্কুলের রুম ভাড়া নিয়ে সকালে ও বিকাল ৪ টা থেকে রাত দশটা পর্যন্ত নির্বিঘেœ চালিয়ে যাচ্ছে কোচিং বাণিজ্য।
সম্প্রতি উপজেলার পুরোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শরিফাবাদ স্কুল এ্যান্ড কলেজে ছাত্র-ছাত্রীদের কোচিং ফির টাকা ভাগাভাগি নিয়ে স্কুল ও কলেজ শাখার শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এতে ওই বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পরিবেশ বিঘিœতসহ থমথমে অবস্থা বিরাজ করে। অভিভাবকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমান বিষয়টি দেখবেন বলে আশস্ত করলে অভিভাবকরা শান্ত হয়।
এ ব্যাপারে শরিফাবাদ স্কুল এ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক মোস্তাফিজার রহমানের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, কোচিং- এর টাকা ভাগাভাগি নিয়ে স্কুল ও কলেজ শাখার শিক্ষকদের মধ্যে হাতাহাতি হওয়ায় ও বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পরিবেশ বিঘিœত হওয়ায় কোচিং বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
২০১৬ সালের শেষের দিকে রনচন্ডি ইউনিয়নে রাত আট টার দিকে ধরেয়ার বাজার পজেটিভ কোচিং সেন্টার থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে ওই কোচিং-এর এক ছাত্রীকে তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় ছাত্রীটির চিৎকারে এলাকাবাসির হাতে আটক হয় এক বখাটে। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় বখাটেকে আটক করে থানায় দিলে পরদিন তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ থানার অফিসার ইন চার্জ বজলুর রশিদের সাথে কথা বললে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় রাতের বেলা শিক্ষার্থীদের কোচিং করার দৃশ্য। কোচিং গুলো হলো, বড়ভিটা বাজারের অন্বেষা কোচিং সেন্টার, শুভেচ্ছা কোচিং সেন্টার, মেলাবর ট্যালেন্ট কেজি কোচিং সেন্টার, পুটিমারী লাইফ কেয়ার কিন্ডার গার্ডেন স্কুল ও কোচিং সেন্টার, কিশোরগঞ্জ বাজারে এ প্লাস কোচিং সেন্টার, দি লাইট ওফ এডুকেয়ার সেন্টার, জিনিয়াস স্টাডি সেন্টার, সৃষ্টি কোচিং সেন্টার, সোনামণি কেজি স্কুল সহ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের অর্ধশতাধিক কোচিং সেন্টার।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তারিকুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ২০১২ সালের যে নীতিমালা তা উপজেলার প্রতিটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের দেওয়া হয়েছে। নীতিমালায় বলা আছে, প্রয়োজনে অভিভাবকের অনুরোধে কোনো শিক্ষক ১শত ৫০ টাকা ফি নিয়ে অতিরিক্ত ক্লাস নিতে পারবে। কিন্তু রাতের বেলা কোচিং করানোর কোনো নিয়ম নেই। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পুরোনো সংবাদ

শিক্ষা-শিক্ষাঙ্গন 5605174751577128434

অনুসরণ করুন

সর্বশেষ সংবাদ

Logo

ফেকবুক পেজ

কৃষিকথা

আপনি যা খুঁজছেন

গুগলে খুঁজুন

আর্কাইভ থেকে খুঁজুন

ক্যাটাগরি অনুযায়ী খুঁজুন

অবলোকন চ্যানেল

item