‘এলা হামরা চরোত কুমড়্যা আবাদ করি’
https://www.obolokon24.com/2017/03/rangpur_37.html
তিস্তা নদীর ১১৪ একর পতিত চরে চাষ হচ্ছে কুমড়া
২ লাখ কুমড়া ফলনের সম্ভবনা
মামুনুর রশিদ মেরাজুল পীরগঞ্জ,রংপুর। নিজস্ব প্রতিনিধি-
‘হামার ছাওয়ারা এলা ইসকুলোত যায়। কায় কয় হামরা চরের মানুষ? ্এলা আগের মতোন হামরা আর খাবার জনতে কষ্ট পাই না। তিসত্যা নদীর চরোত কুমড়া চাষ করি হামার ভাগ্য বদলী গেইছে বাহে।’ এভাবেই আনন্দের সাথে কথাগুলো বলেন কাউনিয়া উপজেলার চররাজীব গ্রামের বাসন্তী রাণী।
কাউনিয়ায় তিস্তা নদীর বালুচরে কুমড়া চাষ করে নিজেদের ভাগ্য বদলে নিয়েছে উপজেলার চররাজীব গ্রামের শতাধিক মানুষ। এখানে কুমড়ো চাষ করে ভাগ্য বদলেছে অনেকের। বিগত ৬ বছর ধরে তারা তিস্তা নদীর পতিত বালু চরে উন্নত জাতের কুমড়া চাষ করে নিজেদের ভাগ্য বদলে নিয়েছেন বলে জানান কুমড়া চাষী রপন্তী বালা। তিনি বলেন, কয়েক বছর আগেও তাদের দিন চলতো খেয়ে না খেয়ে। কিন্তু এখন চরের পতিত জমিতে কুমড়া চাষ করে তারা সাবলম্বী। তাদের আর না খেয়ে দিন কাটাতে হয় না। কুমড়া চাষী মিন্টু মিয়া জানান, ‘হামরা কাজ করিবার পাই। হামার জমি জিরাত নাই। কয় বছর আগেও কপালোত হাত দিয়া শুধু সরকারের সাহায্য নিয়ে বাঁচপার কথা ভাবছিনো। এল্যা আর হামার সেই দিন নাই। এলা হামরা চরোত কুমড়্যা আর স্কোয়াশ আবাদ করি। হাটোত বেচাই।’ চাষী সফিকুল ইসলাম জানান, ‘হামার দুখের দিন শ্যাস হইছে। এলা হামরা মানুষের মতো বাচপার জানি। মোর ২’শ কুমড়্যার গাছোত প্রায় ৭’শ কুমড়্যা ধরচে, কুমড়্যাগুল্যা হামরা তিন ভাগ করি, এক ভাগ এলা বেচেয়া ছাওয়া পোয়ার কাপড় চোপর কিনমো আর একভাগ বেচেয়া সারা বছরের খাবার কিনমো আর বর্ষা মৌসুমে বাকী গুলা বেচেয়া টাকা জমামো।’
কাউনিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও উপজেলা পরিষদ এবং উপজেলা প্রশাসন এবং উদ্ধাবিত কৃষি প্রযুক্তির মাধ্যমে দারিদ্র্য নিরসনে প্রাকটিক্যাল এ্যাকশন বাংলাদেশ ও উত্তরা ডেভলপমেন্ট সোসাইটি সহযোগিতায় কাউনিয়া উপজেলার তিস্তা নদীর পতিত বালুচরে এখন বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে মিষ্টি কুমড়ার ব্যাপক সমারোহ। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শামীমুর রহমান জানান, কৃষি বিভাগ তিস্তার পতিত বালু চরে ভূমিহীন দরিদ্র ২৭০ জন চাষীর মাধ্যেমে ১১৪ একর জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করাচ্ছে। এ প্রকল্পে প্রায় ২ লাখ কুমড়ার ফলন হবার সম্ভবনা রয়েছে। উদ্যোগ সফল হলে আগামীতে তিস্তার চরে এই প্রকল্প আরও সম্প্রসারিত করা হবে বলেও জানান তিনি।