দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর সৈয়দপুরের গোলাহাট বদ্ধভূমিতে শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ
https://www.obolokon24.com/2015/04/post-.html
সৈয়দপুরে ১২ এপ্রিল স্থানীয় শহীদ দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকহানাদার বাহিনীরা প্রায় ৭০০ বাঙ্গালীর উপর নির্মম নির্যাতনের পর হত্যা করে। এরমধ্যে ১৩ জুন ৪৪৭জন হিন্দু ও মারোয়ারী গণহত্যার শিকার হন। পাকহানাদার বাহিনীর নির্মম নির্যাতন থেকে বাঙ্গালীদের বাঁচাতে এ শহরে প্রথম শহীদ হন মুক্তিযোদ্ধা মাহাতাব বেগ। এরপর ধারাবাহিকভাবে হত্যা করা হয় ডাঃ জিকরুল হক, শামসুল হক, বদিউজ্জামান, আয়েজ উদ্দিন, কুদরত-ই-ইলাহী, প্রকৌশলী মোঃ বজলার রহমান, মোঃ রফিকুল ইসলাম, এসএসসি পরীক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন, ডাঃ এস.এম ইয়াকুব সহ শতাধিক মুসলিম ও ৪৪৭জন হিন্দু ও মারোয়ারীকে।
সৈয়দপুরে প্রায় ৭০০ সহ সারাদেশের ৩০ লাখ মা-বোনের ইজ্জত ও জীবনের বিনিময়ে অর্জিত এ দেশে শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হলেও বিগত ৪৩ বছরে কোন প্রকার স্মৃতিফলক উম্মোচন হয়নি সৈয়দপুরে। শহীদ পরিবারের সন্তানরা এ ৪৩ বছরে নীলফামারী-৪ আসনের একাধিক সাংসদ, পৌর মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবরে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের আবেদন ও অনুরোধ জানিয়ে বিমুখ হয়েছেন।
১৯৭১ সালে ১৩ জুন পাকহানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হওয়া রামেশ্বর লাল আগারওয়ালার ছেলে সাংবাদিক নিজু কুমার আগারওয়ালা ও ১২ এপ্রিল শহীদ হওয়া আমিনুল হকের ছেলে মহসিনুল হক জানান, পাকহানাদার বাহিনীরা সৈয়দপুর গোলাহাট রেল কারখানা সংলগ্ন ৪৪৭ জন হিন্দু ও মারোয়ারী সহ তাদের পিতাকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তাদের পিতাসহ সৈয়দপুরের সকল শহীদদের স্মরণে স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণের জন্য বহুবার সাবেক সাংসদ, মেয়র ও উপজেলা চেয়ারম্যান বরাবরে আবেদন সহ অনুরোধ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা তৎকালীন পাকহানাদার বাহিনীর বর্তমান বংশধরদের তোষামোদী, ভোটপ্রাপ্তী ও নিজস্বার্থ হাসিলের কারনে কোন প্রকার কর্ণপাত করা হয়নি। দির্ঘ প্রতিক্ষার পর নীলফামারী-৪ আসনের বর্তমান সাংসদ ও বিরোধীদলীয় হুইপ আলহাজ্ব শওকত চৌধুরীকে শহীদদের স্মরণে স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কথা বলতেই তিনি গত ২০১৪ সালের ১ জুন মোটা অংকের বরাদ্দ দেন এবং ৩ জুন শহীদদের স্মরণে শহরের গোলাহাট বদ্ধভূমিতে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ ফলক উন্মোচন করেন। এর আগে শহীদদের স্মরণে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয় শহরের শহীদ ডাঃ জিকরুল হক সড়ক সংলগ্ন জিআরপি মোড় এলাকায়।