পঞ্চগড়ে যৌতুক না পেয়ে গৃহবধূকে নির্যাতন স্বামী জেলহাজতে
https://www.obolokon24.com/2015/03/post24_36.html
গত ১৮ মার্চ পঞ্চগড় জেলা সদরের পুরাতন ক্যাম্প এলাকার ঈদগাহমাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর বাবা আশরাফুল ইসলাম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০০৪ সালে পঞ্চগড় সদর উপজেলার ধাক্কামারা ইউনিয়নের মালিপাড়া গ্রামের আশরাফুল ইসলামের মেয়ে আঞ্জুমান আক্তারের সাথে একই উপজেলার পুরাতন ক্যাম্প এলাকার আব্দুল জব্বারের ছেলে খোরশেদ আলী (মাসুম) এর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই যৌতুকের দাবিতে আঞ্জুমানের উপর স্বামীসহ শ্বশুর বাড়ির লোকের নির্যাতন শুরু হয়। এ নিয়ে চার বছর আগে পঞ্চগড় সদর থানায় একটি মামলা দায়েরও করা হয়েছিল। কিন্তু আঞ্জুমানের স্বামী খোরশেদ আলী মাসুম ক্ষমা চেয়ে আপোষ-মিমাংসা করে আবার তাকে বাড়িতে নিয়ে আসে।
এরই মাঝে ওই গৃহবধূ দুই সন্তানের মা হয়। বিভিন্ন সময়ে যৌতুক নিয়ে তাদের মাঝে কলহ চলত। গত ১৮ মার্চ খোরশেদ আলী মাসুম তার স্ত্রীকে তার বাবার বাড়ি থেকে ২ লক্ষ টাকা যৌতুক নিয়ে আসতে বলে। আঞ্জুমান যৌতুকের টাকা এনে দিতে অসম্মতি জানালে তার উপর নেমে আসে নির্যাতন। খোরশেদ আলীসহ তার শশুর বাড়ির লোকেরা তাকে বেদম মারধর শুরু করে। এক পর্যায়ে তার পায়ে ধারালো ছোরা দিয়ে আঘাত করলে সে সংজ্ঞাহীন হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে তার বাবা আশরাফুল ইসলাম মেয়েকে উদ্ধার করতে এলে তাকেও মারধর করা হয়। পরে স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। আঞ্জুমানের অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঘটনার দিনই ঠাকুরগাঁও আধুুনিক সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এ ঘটনায় ওই গৃহবধূর বাবা বাদী হয়ে পঞ্চগড় সদর থানায় স্বামীসহ ৫ জনকে আসামী করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। খোরশেদ আলীর ছোট ভাই সদর উপজেলার ছলিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাসির বাবুলও তাকে মারধরে উৎসাহিত করেছে বলে মামলার এজাহারে বলা হয়।
পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মমিনুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। নির্যাতিত গৃহবধূর স্বামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকীদের গ্রেফতাদের প্রক্রিয়া চলছে।