বীরগঞ্জে জমাটবদ্ধ ইউরিয়া সার নিয়ে বিড়ম্বনায় ডিলার ও কৃষক
হাসান জুয়েল,বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি # কৃষকের অতিপ্রয়োজনীয় ইউরিয়া সার দীর্ঘদিন পড়ে থাকার কারণে বস্তার ভিতরে জমে গেছে । জমাটবদ্ধ সার কৃষক ক্রয় না করার কারণে বরাদ্দৃত সার উত্তোলন এবং বিক্রয় নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েছে ডিলার ও খুচরা সার ব্যবসায়ীরা। জমাট বাধার কারনে সারের গুনগত মান নিয়ে কৃষকরা দ্বিধায় পড়লেও সারের গুনগত মান সঠিক রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিস।
কৃষি অফিস সুত্রে জানা যায়, চলতি আমন মৌসুমে ২৯হাজার ৬শত হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এর বিপরীতে উপজেলায় মোট ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে ৫হাজার ৮শত ২২মেট্রিক টন। এখন পর্যন্ত ৩হাজার ২২মেট্রিক টন ইউরিয়ার সার উত্তোলন করা হয়েছে। উত্তোলনের অপেক্ষায় রয়েছে বরাদ্ধের ৩৬হাজার বস্তা সার।
সুজালপুর ইউনিয়নের বর্ষা গ্রামের কৃষক মোঃ আব্দুর রহিম জানান,জমাট বাধা সারের কার্যক্ষমতা কম হওয়ার জমিতে বেশী পরিমানে দিতে হচ্ছে। দোকান থেকে ৮০০টাকা বস্তা দরে ২বস্তা সার বাড়ীতে নিয়ে এসে বস্তা খুলে দেখতে পায় সার জমাট বাধা। পরে বাড়ীতে জমাট ভেঙ্গে জমিতে দিতে হয়েছে। এতে খরচ বেশি পড়ে যায় এবং সময় বেশি লেগেছে।
নিজপাড়া ইউনিয়নের সম্ভুগাও গ্রামের মোঃ জব্বার জানান, কয়েকটি সারের দোকান ঘুরেও কোথাও স্বাভাবিক সার পাওয়া যাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে জমাট বাধা সার কিনেছি। সারের বস্তা জমাট হয়ে এতটা শক্ত হয়েছে যে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে জমাট ভাঙ্গতে হয়েছে।
কৃষকদের অভিযোগ স্বীকার করে সার ব্যবসায়ী বাবুল ট্রেডাসের মালিক ইয়াকুব আলী বলেন, সারের বস্তা জমাট হয়ে যাওয়ার কারণে কৃষকেরা সার না কিনে জমাট ছাড়া সারের সন্ধানে ছুটছে। এতে বাহ্যিক ভাবে সারের সংকট মনে হলেও বাস্তব চিত্র ভিন্ন। ববং বরাদ্দের বেশির ভাগ সার পড়ে আছে। জমাট বাধার কারণে কেউ নিতে চাচ্ছে না। তাই এই সার নিয়ে বিপাকে পড়েছি। সরকারী বিক্রয় মূল্য বস্তা প্রতি ৮শত টাকা হলেও শুধুমাত্র ক্রেতার অভাবে প্রতিবস্তা সার ৭৬০টাকা দরে বিক্রয় করতে বাধ্য হচ্ছি। এ মাসে বরাদ্দ পেয়েছি ১৩৬মেট্রিক টন ইউরিয়া সার। উত্তোলন করেছি ১৭মেট্রিক টন। জমাট বাধা সারের কারণে ক্রেতা না থাকায় বরাদ্দকৃত বাকি সার উত্তোলন করতে পারছিন। আগামী মাসের বরাদ্দ নিয়ে এখন মহা বিপদে আছি।
যোগাযোগ করা হলে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আবুরেজা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, জমাট বাধা সার ক্রয়ের ব্যাপারে কৃষকদের অনীহার বিষয়টি আমরা জেনেছি। সারের গুনগত মান নিয়ে কোন সমস্যা নেই। এ ব্যাপারে জেলা কর্মকর্তাদের অবহিত করা হয়েছে। জেলা এ বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করার আশ্বাস দিয়েছেন।