টানা বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতায় পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নীলফামারী এসেও পরিদর্শনে বের হতে পারেননি
ইনজামাম-উল-হক নির্ণয়,নীলফামারী॥ উজানের ঢল কমে যাওয়ায় তিস্তা নদীর পানি ডালিয়া তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে বিপদসীমার ১৩ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও টানা ভারী বর্ষণে নীলফামারী জুড়ে পানিতে তলিয়ে গেছে। পাশাপাশি ছোট ছোট নদীগুলো বৃস্টির পানিতে উপচে পড়েছে। গত চারদিনের বৃস্টির চেয়ে আজ শনিবার(২৬ সেপ্টেম্বর/২০২০) সকাল ৮টা থেকে চলছে আকাশ ভেঙ্গে ভারী বর্ষন। কালো মেঘের ঘনঘটা আকাশ থেকে সরছেনা। অঝড়ে চলছে বৃস্টি আর বৃস্টি। জেলার ছয় উপজেলার এলাকা জলমগ্ন যেন বন্যার রূপ ধারনা করেছে।
আষাঢ়-শ্রাবন বর্ষা কাল ও ভাদ্র মাস পেরিয়ে আশ্বিন মাস যেন বর্ষার রূপ ধারন করেছে। চারদিন ধরে থেমে থেমে ভারী বৃস্টি চলছে। তবে আজ শনিবার অবিরাম ভাবে চলছে অতিবৃস্টি। যা টানা প্রবল বর্ষণে রূপ নিয়েছে।
আজ শনিবার বিকাল সাড়ে ৩টায় জেলা সদরের বুড়িখোড়া নদীর খনন পরিদর্শন, নদীর ধারে বৃক্ষরোপনের জন্য নীলফামারী সফর ছিল পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এমপির। তিনি নীলফামারীতে এসেও এমন বৈরী ও দূর্যোগপূর্ন আবহাওয়ার কারনে উক্ত কর্মসুচি বাতিল করে তিস্তা ব্যারাজের “অবসর” ভিআইপি রেষ্ট হাউসে অবস্থান নিয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার(২৫ সেপ্টেম্বর/২০২০) সকাল ৯টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত নীলফামারীর তিস্তা ব্যারাজ ডালিয়ায় বৃস্টিপাত হয় ৯৬ মিলিমিটার, ডিমলা উপজেলা শহরে ৭০ মিলিমিটার, নীলফামারী জেলা শহরে ৯০ মিলিমিটার ও সৈয়দপুর শহরে ৮২ মিলিমিটার বৃস্টিপাত রেকর্ড করে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় আবহাওয়া অফিস।
বৃষ্টির পানিতে জেলা সদর, ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরীগঞ্জ ও সৈয়দপুর উপজেলা যেন পানি ভাসছে।
বৃষ্টি ও জলাবদ্ধতার কারণে অনেক এলাকায় যান চলাচল কার্যত বন্ধ হয়ে যায়। পানিতে ভাসছে হাটবাজার দোকানপাটগুলো। বিভিন্ন বাসাবাড়ি ও বিপণিকেন্দ্রে পানি ঢুকে পড়েছে। এদিকে টানা বৃষ্টির কারণে অনেক রাস্তাঘাট ধসে পড়েছে।
নীলফামারী বড় বাজারের কাচামাল বিক্রেতা আরিফ হোসেন(৪০) বলেন, গত ৪দিনের বৃষ্টির কারণে মানুষজন বাজার করতে আসতে পারছে না। এতে আমাদের কাচা সবজিগুলি পানিতে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
আলুর আড়ৎ ব্যবসায়ী লুৎফর রহমান(৫৫) বলেন, টানা চারদিনের বৃষ্টিতে বাজারে ভিতরে পানি প্রবেশ করেছে। এতে সংরক্ষনে রাখা আলু, পিঁয়াজ, রসুন ভিজে গিয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
জেলা শহরের মানিকের মোড়ের রিক্সাচালক আমিনুর (৩৫) বলেন, বৃষ্টির কারণে মানুষজন ঘর থেকে বের হচ্ছেন কম। এ অবস্থায় রিক্সার যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে না। শহরের কিছু কিছু রাস্তায় পানি জমে থাকায় রিক্সা নিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না।
জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, টানা বৃস্টিতে জেলার প্রায় সকল এলাকায় জলাবদ্ধতার খবর আমরা পেয়েছি। সকল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ জনপ্রতিনিধিদের ওই সকল এলাকা পরিদর্শন করে পানি নিস্কাশনের জরুরী ভাবে ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। #