নীলফামারীতে উত্তরা ইপিজেডে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় গ্রেফতার ৮॥ লুটের পনে ৪ লাখ টাকাসহ উদ্ধার মোটরসাইকেল
https://www.obolokon24.com/2020/07/Epz.html
নীলফামারী প্রতিনিধি॥ নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে পরচুলা তৈরীর এভারগ্রিন প্রোডাক্ট ফ্যাক্টরী বিডি লিমিটেডে শ্রমিক ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় কারখানায় অগ্নি সংযোগ, ভাঙচুর ও অর্থ লুটের ঘটনায় মামলা দায়ের করে কারখানা কতৃপক্ষ। ওই মামলায় গতকাল মঙ্গলবার(৩০ জুন/২০২০) ও আজ বুধবার(১ জুলাই/২০২০) অভিযান চালিয়ে আট জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ তাদের কাছ থেকে ওই কারখানার লুট হওয়া ৯৩ লাখ ১৫ হাজার ৪৯১ টাকার মধ্য থেকে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৬৩০ টাকা উদ্ধার করেছে। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল, একটি কম্পিউটার মনিটর, একটি স্ক্যানার, কি-বোর্ড, একটি সিসি ক্যামেরা উদ্ধার হয়।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন, ওই কারখানার সিকিউরিটি গার্ড আরিফুল ইসলাম(২৬), লাইন লিডার আমিনুল ইসলাম(২৫), কালেক্টর সাদেকুল ইসলাম(৩০), সিরাজুল ইসলাম(৩০), ভাগ্য চন্দ্র রায় (২৫), শ্রমিক শরিফুল ইসলাম (২৬), লেবু মিয়া (২৭) ও শাহিন (২৩)।
পুলিশ জানায়, গত ২৭ জুন সকালে উত্তরা ইউপিজেডের এভারগ্রিন প্রোডাক্ট ফ্যাক্টরী বিডি লিমিটেডের পরচুলা তৈরীর কারখানায় শ্রমিক ছাঁটাইয়ে প্রতিবাদে বিক্ষোভ চলাকালে ওই কারখানায় ভাঙচুর, অগ্নি সংযোগ, অর্থ লুটের ঘটনা ঘটে। শ্রমিক অসন্তোষের আড়ালে দুস্কৃতিকারীরা ওই হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগে মামলা দায়ের করেন প্রতিষ্ঠানের সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. জাহাঙ্গীর আলম। ওই মামলায় গতকাল মঙ্গলবার রাতে ও আজ বুধবার সকালে অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন স্থান থেকে আটজনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের স্বীকারোক্তিতে লুট হওয়া ৩ লাখ ৬২ হাজার ৬৩০ টাকা, একটি মোটরসাইকেল, একটি কম্পিউটার মনিটর, একটি স্ক্যানার, কি-বোর্ড, একটি সিসি ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়।
গত ২৮ জুন রাতে নামীয় তিনজনসহ সাড়ে ৩৫০ জনকে আসামী করে দায়ের হওয়া ওই মামলায় ১৫ কোটি টাকার ক্ষতি দাবি করা হয়। অভিযোগ করা হয় শ্রমিক অসন্তোয়ের ধুয়া তুলো সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে হাতে স্ক্রু ড্রাইভার, হাতুড়ি, লোহার রড ও ভারী যন্ত্রপাতি নিয়ে প্রথমে কারখানার নিরাপত্তা কক্ষ তছনছ করে। এরপর সিসি ক্যামেরা ভাঙচুর ও উল্টে দিয়ে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে দুটি কাভার্ড ভ্যান, ৩০ থেকে ৩৫টি মোটর সাইকেল, ৫টি ফর্ক লিস্টার, ৪৫০টি সিসি ক্যামেরা, ৩২০টি কম্পিউটার, ৩২০টি হার্ডডিক্সসহ অসংখ্য আসবাবপত্র, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এবং উৎপাদিত মালামালসহ কাঁচামালে অগ্নি সংযোগ করে। একই সাথে কোম্পানীর দুটি লকার ভেঙ্গে ৯৩ লাখ ১৫ হাজার ৪৯১ টাকা লুট করে নেয়।
নীলফামারী সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. মাহমুদ উন নবী বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পাঁচজন এবং আজ বুধবার ভোর পর্যন্ত নীলফামারীসহ পার্শ্ববর্তী জেলা দিনাজপুরে অভিযান চালিয়ে তিনজনসহ মোট আট কজনকে গ্রেফতার করা হয়। এর মধ্যে কারখানার নিরাপত্তা রক্ষী আরিফুল ইসলামের কাছ থেকে লুট হওয়া টাকার মধ্যে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৬৩০ টাকা, শ্রমিক শরিফুলের কাছ থেকে একটি মোটরসাইকেল এবং শ্রমিক শাহিনের কাছ থেকে একটি কম্পিউটার মনিটর, একটি কিবোর্ড, একটি স্ক্যানার, একটি সিসি ক্যামেরা উদ্ধার করা হয়। অন্য আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, আজ বুধবার দুপুরে তাদেরকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।